• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪৭ অপরাহ্ন

মাটন গ্রেভী(আফগান ভিলেজ স্টাইল ফলোড)


প্রকাশের সময় : জুলাই ১৮, ২০২৩, ১০:০৪ PM / ২৩৪
মাটন গ্রেভী(আফগান ভিলেজ স্টাইল ফলোড)

ঢাকারনিউজ : বাংলাদেশে পুরুষেরা ঘরে রান্না করে না বা করতে চান না, পুরুষেরা রান্না পারে না তা নয়, যত সামান্য পুরুষ সেই চেষ্টা করে তারাও মা, বোন, স্ত্রীর পীড়ায় সেই রান্নাঘরে প্রবেশ করতেও চান না! বাংলার নারীরা রান্নাঘরে একাই স্বাধীনতা চান, সেখানে কোন পুরুষ প্রবেশ করুক তা ভাবতেও পারেন না, সহ্য তো দুরের কথা! অথচ নিজের স্বার্থেই সকল নারীর রান্নাঘর উন্মুক্ত করে দেয়া উচিত ছিলো! একজন মা তার মেয়েকে রান্না শিখান বা বলেন কিন্তু ছেলেকে কখনো বলেনও না, যে রান্না শিখে নে! অন্যদিকে বিবাহিত পুরুষেরা রান্নাঘরে প্রবেশ করলে একটু ফ্রী স্পেস দেয়া, কটু কথা বলা থেকে বিরত থাকা, নানান সামগ্রী একটু যোগাড় রাখা, স্বাদের ব্যাপারে একটু উদার থাকা, উৎসাহ দেয়া, নিজে একটু দূরে থেকে তা খেয়াল রাখা ইত্যাদি ইত্যাদির দরকার! জানি আপনারা হয়ত আমার সাথে একমত হবেন না, তবে আমি আমার প্রায় ১২/১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, পুরুষের জন্য সত্যই এই সব মোকাবেলা করে রান্নাঘরে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া/করা দুঃসাধ্য কাজ! অর্থ উপার্জনের মত বিশ্রী কাজ করে তিনি ঘরেও নিশ্চয় এমন পরিস্থিতি চাইবেন না!

যাই হোক, কথা বললে অনেক কথা বলা চলে। এত কথা বলেই কি লাভ হবে! দুই দিনের দুনিয়া, সহ্য করে যাওয়াই ভাল, সামান্য ছোটখাট প্রতিভা থাকলে সেটা লুকিয়ে রাখা ভাল! যা বলছিলাম, গত কয়েকদিন আগে আফগানিস্থানের রান্নার ভিডিও ব্লগ দেখে একটা রান্নায় যেয়ে মন আটকে গিয়েছিল! খুব একটা কঠিন রান্না নয়, আফগানিস্থানের কোন এক গ্রামে ক্ষেতের কোনায় কয়েকজন মিলে এমন রান্না করছিলো যা তারা পরে রুটি দিয়ে খেয়েছিল। ভাবলাম, আজ ছুটির দিন, রান্না করেই ফেলি! তবে ওদের মত পুরা কৌশল নিলেও মশলা পাতিতে আমি আমাদের মত করে সাজিয়ে নিয়েছি, কারন ওদের মত করে রান্না করলে আমি খেতে পারলেও হয়ত পরিবারের অন্যরা খেতে পারবে না বা খেতে বসে হয়ত বলবে রান্না ভাল হয় নাই, ফলে চিন্তা করেছি সবাই মিলে খাব এবং সবাই আনন্দ পেলে তবেই না রান্না সার্থক! চলুন দেখে ফেলি!

উপকরণ ও পরিমানঃ
– মাটন বা খাসির গোশত, ১ কেজি
– আলু, ৩/৪ টা
– টমেটো, ৪/৫টা মাঝারি
– ক্যাপ্সিকাম, ৩/৪টা মাঝারি
– পেঁয়াজ, ৪/৫টা আস্ত, ২/৩টা কুঁচি
– কাঁচা মরিচ, আস্ত কয়েকটা
– রসুন, আস্ত ৩/৪টা (এর পরিমান বাড়িয়েও দিতে পারেন, খেতে খুব মজাদার)
– লাল মরিচ গুড়া, এক টেবিল চামচ, ঝাল বুঝে কম বেশী
– হলুদ গুড়া, এক চা চামচ
– জিরা গুড়া, ১ টেবিল চামচ
– আদা, বাটা বা কুঁচি, ২/৪ টেবিল চামচ
– টক দই, ৫/৬ টেবিল চামচ
– গরম মশলা (কয়েকটা এলাচি, কয়েক পিস দারু চিনি, কয়েকটা লবঙ্গ)
– লবন, পরিমান মত
– তেল, ৮/১০ টেবিল চামচ কম বেশী
– পানি, পরিমান মত বা এক কাপ
– গোল মরিচের গুড়া, চাইলে দিতে পারেন, স্বাদ বাড়বে
– চিনি, হাফ চা চামচ (যদি স্বাদ আরো বাড়াতে চান, না দিলে নাই)
– আটা বা ময়দার কাই, যা দিয়ে রান্নার পাত্রের সাথে সিল করে দেয়া হয়।

প্রণালীঃ

গোশত ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রান্নার পাত্রে নিন। এবার উপরে উল্লেখিত সব মশালাপাতি দিয়ে দিন, লবন দিতে ভুলবেন না! সামান্য পেঁয়াজ কুঁচি। ভাল করে মাখিয়ে রাখুন। এবার আলু, ক্যাপ্সিক্যাম, টমেটো, পেঁয়াজ ও রসুন সাজিয়ে বসিয়ে দিন। এবার তেল ছিটিয়ে দিন। হাফ কাপ পানি দিন। এবার পাত্রের মুখ সিল করার জন্য আটা বা ময়দার কাই দিয়ে এভাবে রাখুন। এবার ঢাকনা লাগিয়ে দিন। আগুন ১৫/২০ মিনিটের জন্য বাড়িয়ে দিতে পারেন। এর পর চুলায় একটা তাওয়া দিয়ে আগুন মাঝারি করে দিন এবং পাত্রটি বসিয়ে দিন। এভাবে ঘন্টা খানেক থাকবে। মাঝে মাঝে হাড়ি তুলে নাড়িয়ে দিতে ভুল্বেন না, আবার বেশি আগুন হয়ে গেলে পানি শুকিয়ে পুড়ে যেতে পারে ফলে চুলায় দিয়ে কোথায় চলে যাবেন না। ঢাকনা খুলে দেখুন। একটা কাঠি দিয়ে গোশত তুলে দেখুন নরম হল কি না। যদি নরম না হয় তবে আরো কিছুক্ষন রাখুন। ঝোল কমাতে চাইলেও আগুন বাড়িয়ে দিতে পারেন।

তৈরি হয়ে গেলো ফাইন্যাল প্রোডাক্ট! মাটন কুকিং, আফগান ভিলেইজ স্টাইল। (মানসুরা হোসেন)