• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০৯ অপরাহ্ন

শিক্ষা অফিসারের দায়িত্ব অফিস সহকারীদের দেয়ায় ক্ষোভ


প্রকাশের সময় : এপ্রিল ২১, ২০১৭, ১০:৩৯ AM / ৩৯
শিক্ষা অফিসারের দায়িত্ব অফিস সহকারীদের দেয়ায় ক্ষোভ

ঢাকারনিউজ২৪.কম:

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৯ কর্মচারীকে সহকারী জেলা শিক্ষা ও মনিটরিং অফিসার পদে (চলতি দায়িত্ব) দায়িত্ব দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা।

তাদের দাবি, অফিস সহকারীদের জেলা শিক্ষা অফিসার ও মনিটরিং অফিসার পদে বসিয়ে শিক্ষকদের অসম্মানিত করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

গত ১৮ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব নাসরিন জাহানের সই করা এক নির্দেশনায় ৯ জনকে নতুন দায়িত্ব দেয়া হয়।

এরপর থেকেই ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সমালোচনার ঝড় এবং বাস্তবেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক কাজী আবু নাসের আজাদ  বলেন, অফিস সহকারীদের জেলা শিক্ষা অফিসার ও মনিটরিং অফিসার পদে পদোন্নতি দিয়ে শিক্ষকদের লজ্জিত করা হয়েছে।

‘যারা আমাদের অধীনস্থ, এখন তারাই আমাদের বস হয়ে গেলেন। যোগ্যতা না থাকলেও তাদের এ পদে বসানো হয়েছে। অথচ শিক্ষকদের পর্যাপ্ত যোগ্যতা থাকার পরও তারা অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন।’

শিক্ষক ও প্রশাসনের মধ্যে শৃঙ্খলা নষ্ট হবে মন্তব্য করে তিনি দ্রুত এ সিদ্ধান্ত বাতিল করে যোগ্যদের এ পদে বসানোর দাবি জানান।

কাজী আবু নাসের চৌধুরী নামে এক শিক্ষক ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন, সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে কেন প্রাইমারিতে আসলাম? নিজের প্রতি ক্ষোভ আর ঘৃণা প্রকাশের ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। কারণ প্রাইমারির চাকরির যে এত অবমূল্যায়ন তা আগে জানা ছিলো না। বর্তমান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯৫ ভাগ শিক্ষক অনার্সসহ মাস্টার্স পাস। অত্যান্ত দুঃখের বিষয় হলো এই উচ্চ ডিগ্রিধারী শিক্ষকদের কোন মূল্যায়ন না করে মাত্র এইচএসসি পাস করা স্টেনোগ্রাফারদের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং সহকারী মনিটরিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে।

খাইরুল ইসলাম সরকার নামে আরেকজন লিখেছেন, প্রমোশন দিয়ে দিয়ে ডিজি পর্যন্ত করুক- কিন্তু শিক্ষকদের বেলায় সীমাহীন ও আশাতীত অপমানজনক অবমূল্যায়ন কেন?

‘কি আর করার! এটাই হচ্ছে প্রাইমারি শিক্ষা,’ বলেছেন ফেরদৌস সফিক।

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চলতি দায়িত্ব প্রদানকে পদোন্নতি হিসেবে গণ্য করা যাবে না। পদগুলো পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃক নিয়োগকৃত, তাই এসব পদে নিয়োগ-পদায়ন করা হলে তারা (চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত) স্ব পদে ফেরত যাবেন এবং নব্য এসব কর্মকর্তার পদোন্নতি না হওয়া পর্যন্ত মূল পদ বা ফিডার (নির্ধারিত সময়) পদ শূন্য ঘোষণা করা যাবে না। এসব শর্তে তাদের ২৭ এপ্রিল যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়।

নির্দেশনা অনুযায়ী, ছয়জন স্টেনোগ্রাফারকে সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার ও তিনজনকে মনিটরিং অফিসার পদের দায়িত্ব দেয়া হয়।

এরমধ্যে মধ্যে পাঁচজনকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে ও একজনকে জেলা শিক্ষা অফিসে পদায়ন করা হয়েছে। মনিটরিং কর্মকর্তাদের মধ্যে একজনকে মন্ত্রণালয়ে, বাকি দুইজনকে নওগাঁ ও পিরোজপুর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এদিকে অফিস সহকারীকে অফিসার পদে ‘পদোন্নতি’ দেয়ার বিষয়টি আইনগত বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম খান।

 তিনি বলেন, পদ শূন্য থাকায় জ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের চলতি দায়িত্বে বসানো হয়েছে। এসব পদে নিয়োগ হলে আবারও তাদের আগের পদে ফেরত পাঠানো হবে।

জরুরি প্রয়োজনে মন্ত্রণালয় যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে মন্তব্য করে অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, যাচাই-বাছাই করে যোগ্য ব্যক্তিদেরই পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।

তাই এটি নিয়ে মনোক্ষুণ্ন না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

 

  (ঢাকারনিউজ২৪.কম/এনএম ১০.৩৮এএম/২১//২০১৭ইং)