• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৩ অপরাহ্ন

ফের ব্যাটিং এ বাংলাদেশ


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ৬, ২০১৭, ৪:২০ PM / ৩৮
ফের ব্যাটিং এ বাংলাদেশ

 

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : ভারতের বিপক্ষে সেই ঐতিহাসিক টেস্ট খেলার আগে প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে তেমন কিছুই পেল না বাংলাদেশ। ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর ব্যাট হাতে যোগ্যতার পরিধিটা দেখিয়েছেন স্বাগতিক দলের ক্রিকেটাররা। তিন শতরানে তাসকিন-শফিউলদের বোলিং আক্রমণকে নখদন্তহীন করে দিয়েছেন। সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে বিশ্রামে গিয়েছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার এবং প্রিয়ানক পাঞ্চাল। শতরান আট নম্বরে নামা বিজয় শঙ্করের ব্যাটেও! সব মিলিয়ে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচটা মাথা উঁচু করেই খেলছে অভিনব মুকুন্দের দল।
৯০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৪৬১ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা। ২৩৭ রানের বিশাল লিড। তিন সেঞ্চুরিয়ানের মধ্যে কাউকেও আউট করতে পারল না টাইগার বোলাররা। প্রীতি ম্যাচের মোড়কে বন্ধী ম্যাচ বলেই হয়তো নিয়ম পাল্টে শেষ বিকেলে আবার ব্যাট করতে নামল বাংলাদেশ। এ রিপোর্ট লেখার সময় ২য় ইনিংসে টাইগারদের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৩ ওভারে ২৩ রান। ব্যাট করছেন তামিম ইকবাল (১৭) ও সৌম্য সরকার (৪)।
আসলে ৯ ফেব্রুয়ারি টেস্টের আগে ব্যাটসম্যানদের চেয়ে বোলাররাই বেশি দুশ্চিন্তায় ফেলে দিলেন। তুরুপের তাস ভাবা হয়েছিল মেহেদী হাসান মিরাজকে। নিউজিল্যান্ডে হয়নি কিন্তু হায়দ্রাবাদের কন্ডিশনে তার স্পিন যাদু দেখা যেতেই পারতো। কিন্তু ইংল্যান্ড বধের সেই নায়ক ১৬ ওভার বল করে ৯২ রান দিয়ে কোন উইকেটেরই দেখা পাননি। ব্যর্থ দুই স্ট্রাইক বোলার শফিউল ইসলাম-তাসকিন অাহমেদ। ভারত ‘এ’ দলের ব্যাটসম্যানদের সমীহ আদায় করে নিতে পারলেন শুধু তাইজুল ইসলাম এবং শুভাশিষ রায়। তবে সেটা বড্ড দেরিতে। বোলিং লাইন আপের এই যখন অবস্থা তখন প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের মুখে স্বস্তির হাসি তো থাকবেই। ঠিক তাই হয়েছে।
এর আগে প্রথম দিনে সিকান্দারাবাদের জিমখানা গ্রাউন্ডে ৬৭ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২২৪ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। প্রতি দল একটি করে ইনিংসে ব্যাট করার সুযোগ পাচ্ছে।
জিমখানার এই উইকেটেই রোববার রান তুলতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে টাইগার ব্যাটসম্যানদের। অথচ সেখানেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের ব্যাট দারুণ কথা বলল। অভিজ্ঞ বোলারদের তেমন পাত্তাই যেন দিলেন না প্রিয়ানক পাঞ্চাল এবং শ্রেয়াস আইয়ার। তাদের দ্বায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে টাইগারদের বিপক্ষে সোমবার লাঞ্চের আগে লিড নেয় ভারত ‘এ’ দল। ২৯ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করা শ্রেয়াস তিন অংকের ম্যাজিকেল স্কোরের দেখা পেয়ে যান ৯১ বলে। তারপরই মুম্বাইয়ের এই ব্যাটসম্যান অবসর নেন। ওয়ানডে স্টাইলে ৯২ বলে ১০০ রান আসে তার ব্যাটে। যাতে ছিল ১২ বাউন্ডারি, ৪ ছক্কা!
শতরানের অপেক্ষায় ছিলেন প্রিয়ানক পাঞ্চাল। সেই লক্ষ্যটা পূরণ হয়ে যেতে স্বেচ্ছায় সাজঘরে ফিরে যান তিনিও। তার আগে তিনি আহমেদাবাদের ২৬ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার করেন ১৪৮ বলে ১০৩। ইনিংসে ছিল এক ছক্কা, ১১ বাউন্ডারি।
তবে চমক ছিল ছিল আট নম্বরে নেমে বিজয় শঙ্করের শতরান। ঠিক ওয়ানডে স্টাইলে বাংলাদেশের বোলারদের তুলোধুনো করেছেন তিনি। ৮১ বলে অপরাজিত ১০৩। ১৪ বাউন্ডারি, তিন ছক্কায় বুঝিয়ে দিলেন ভারতীয় জাতীয় দলে খেলতে প্রস্তুত তামিলনাড়ুর ২৬ বর্ষী এই ক্রিকেটার। নয় নম্বরে নামা নিতিন সাইনিও ব্যাটিং প্র্যাকটিস সেরে নিলেন দাপটে। ৮৫ বলে ৬৬ রান করে তিনি তাইজুলের শিকার।
বাংলাদেশের হয়ে শুভাশিষ, তাইজুল দু’জনই নেন ৩টি করে উইকেট।
সোমবার ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে লাঞ্চের পরই অবশ্য সাফল্যের মুখ দেখেন সেই শুভাশিষ। রিশব পান্তকে (১৯) ফিরিয়ে দেন প্রথমে। ইশাঙ্ক জাগ্গিও (২৩) তার শিকার। এ সুযোগে একটি উইকেট তুলে নেন তাইজুলও। উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ইষান কিষানকে ১১ রানে ফেরান এই স্পিনার। হারদিক পান্ডেয়াকেও (৭) সাজঘরের পথ দেখিয়ে দেন তিনি।
ক্রাইস্টচার্চ, ওয়েলিংটন ছেড়ে হায়দ্রাবাদে পা রাখলেও সেই একই অবস্থা। লাফিয়ে উঠা বলে দুর্বলতা থাকল এখানেও। তাইতো প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাট হাতে তেমন কিছুই করতে পারলেন না ব্যাটসম্যানরা। একমাত্র টেস্ট শুরুর আগে আত্মবিশ্বাসটা চাঙ্গা করে নিতে যা প্রয়োজন তা অন্তত হয়নি। প্রথম দিন শেষ সেশনে ব্যর্থ ছিলেন বাংলাদেশের বোলাররাও।
এর আগে মুশফিক ও সৌম্য সরকার দু’জনই তুলে নিয়েছিলেন ফিফটি। মুশির ১০৬ বলে ৫৮ রানের ইনিংসে ছিল ৮ বাউন্ডারি, এক ছক্কা! কিছুটা লড়েছেন সাব্বির রহমানও। ৬৪ বলে সাব্বির ৩৩ রান করেন তিনি। আর সৌম্য সরকারের ব্যাটে ৭৩ বলে ৫২ রান। দলের অন্যরা উইলোবাজিতে এবারো ফ্লপ।
প্রস্তুতি ম্যাচ শেষে বড় কোন প্রাপ্তি না থাকলেও নিজেদের প্রস্তুত করে নেয়ার আরো সময় পাচ্ছেন সাকিব-তামিমরা। অাগামী দু’দিন অনুশীলন করে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেবেন তারা। তারপরই ৯ ফেব্রুয়ারি সেই বহুল প্রতিক্ষীত টেস্ট ম্যাচ। যার অপেক্ষায় ১৬ বছর কাটিয়েছে লাল-সবুজের দেশ।
সেই ২০০০ সালে বাংলাদেশ টেস্টের অভিজাত অঙ্গনে পথচলা শুরু বাংলাদেশের। ভারতের বিপক্ষেই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট খেলেছিলেন আকরাম খান-আমিনুল ইসলাম বুলবুলরা। কিন্তু দেড় যুগেরও বেশি সময়ে কেবল প্রতিবেশী দেশটিতেই কোনো টেস্ট খেলা হয়নি টাইগারদের। সেই আক্ষেপ অপেক্ষা শেষে বৃহস্পতিবার হায়দ্রাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে বিরাট কোহলিদের মুখোমুখি হবে মুশফিকের বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ: ৬৭ ওভারে ২২৪/৮ (ইনিংস ঘোষণা) (তামিম ১৩, ইমরুল ৪, সৌম্য ৫২, মুমিনুল ৫, মাহমুদউল্লাহ ২৩, মুশফিক ৫৮, সাব্বির ৩৩, লিটন ২৩*, মিরাজ ০, তাইজুল ৪* মিলিন্দ ১/২৬, অনিকেত ৪/২৬, বিজয় ১/৩২, নাদিম ১/৩৮, কুলদিপ ১/৩২)।
ভারত ‘এ’ দল: ৯০ ওভারে ৪৬১/ ৮ (ইনিংস ঘোষণা) (পাঞ্চাল ১০৩*, শ্রেয়াস ১০০*, শঙ্কর ১০৩*, সাইনি ৬৬; শুভাশিষ ৩/৫৭, তাইজুল ৩/১৪১)

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/৪:২০পিএম/৬/২/২০১৭ইং)