• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন

‘দেশের মানুষ সিঙ্গাপুর-মালেশিয়ার গণতন্ত্র মানবে না’


প্রকাশের সময় : মে ৮, ২০১৭, ৯:৪৫ PM / ১০৮
‘দেশের মানুষ সিঙ্গাপুর-মালেশিয়ার গণতন্ত্র মানবে না’

 
ঢাকারনিউজ২৪.কম, ঢাকা : বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর এবং মালেশিয়ার মতো বানাতে চান বলে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে (সজীব ওয়াজেদ জয়) এমন বক্তব্যের সমালোচনায় করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ দেশের মানুষ কোনোদিনই সিঙ্গাপুর আর মালেশিয়ার মতো গণতন্ত্র গ্রহণ করবে না।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এ এক কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা মহানগর বিএনপি (উত্তর) এর উদ্যোগে এ কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রীর ছেলে বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ার মতো বানাতে চান উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে গণতন্ত্র নেই। মানুষ সেখানে তাদের নিজেদের কথা বলতে পারে না। মালেশিয়াতে নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র। সিঙ্গাপুরের মানুষ যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেনি। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। এদেশের মানুষ কোনো দিনই সিঙ্গাপুর আর মালেশিয়ার মতো গণতন্ত্র গ্রহণ করবে না। বরং এখানে সত্যিকার অর্থে জনগণের গণতন্ত্র, জনগণের অধিকার নিয়ে গণতন্ত্র চলতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি অনেক গুলো জরুরি এবং সত্য কথা বলেছেন। যে কথা গুলো আমরা বারবার বলে আসছি- এদেশে বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন নয়। এর ওপরে প্রশাসন চাপ দিয়ে বসে আছে, সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে। আমরা এর ভুক্তভোগী। আমরা তার ভুক্তভোগী বিচার বিভাগকে সরকারের ইচ্ছানুযায়ী চলতে হয়। শুধু তাই নয়, আজকে দীর্ঘ ৬ বছর ধরে প্রধান বিচারপতি বিধিমালা চাচ্ছেন বিচারপতিদের, তা দেওয়া হয়নি। আজকেও সময় নিয়েছে এ্যাটর্নী জেনারেল।’
তিনি বলেন, পার্লামেন্ট নেই বললেই চলে। যেটা আছে সেটা হচ্ছে সরকারের একটি গৃহপালিত বিরোধীদল দিয়ে পার্লামেন্ট। যেখানে সরকারের বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে আলোচনা-সমালোচনা হওয়ার কথা তা হয় না। তাই এই পার্লামেন্ট কোনো পার্লামেন্ট নয়, অর্থ্যাৎ গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই।’দেশে এখন পুরোপুরি একনায়কতন্ত্র এবং ফ্যাসিবাদ চলছে এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেজন্য স্বৈরচার এরশাদের সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সবচেয়ে বেশি সখ্যতা। যাকে এদেশের মানুষ ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল তাকে(এরশাদ) এখন বিশেষ দূত বানিয়েছে। এবং তার দলের তিনজনকে মন্ত্রী বানিয়েছে।’
মামলা মোকাদ্দমা এই সরকারের হাতিয়ার মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে বলেই এখন রাজনীতিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে পারছেন না। পুলিশ দিয়ে মোকাবেলা করতে হয় আর রাজনৈতিক নেতাদের মামলা মোকাদ্দমা দিয়ে মোকাবেলা করতে হয়। এদের (আওয়ামী লীগ) প্রয়োজনীয়তা বাংলাদেশে আর নাই।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা (বিএনপি) নির্বাচন চাই। অবশ্যই নির্বাচন চাই, কারণ বিএনপি বারবার নির্বাচিত হয়েই রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্বে এসেছে। সেজন্য আমরা জনগণের ভোটের মধ্যে দিয়ে সরকারের যেতে চাই। কিন্তু কোন নির্বাচন? যে নির্বাচনে আপনরা ( আওয়ামী লীগ সরকার) একাই খেলবেন, একা রেফারি হয়ে মাঠ দখল করে রাখবেন, সেই নির্বাচন তো হবে না। নির্বাচন হবে যে নির্বাচনে খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল সমূহ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে। অন্যথায় এদেশে মানুষ অন্য কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না।’
জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যাদেরকে জঙ্গি অপবাদ দিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে তাদের একজন কেউ জীবিত অবস্থায় আনা হচ্ছে না, তদন্ত ও বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না আগেই হত্যা করা হচ্ছে। হত্যার রাজনীতি শুরু করেছে। এই হত্যার রাজনীতির শেষ কোথায়, কোন দিকে নিয়ে যাবে তা আমরা জানি না। আমরা আগেই বলেছিলাম (জঙ্গি) আগুন নিয়ে খেলবেন না, এই আগুনে সমগ্র দেশ ও জাতি পুড়ে যাবে।’
সরকার দেশকে ধ্বংস করে ফেলেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অর্থনীতিকে সম্পূর্ণ রসাতলে নিয়ে গেছে। ব্যাংকিং ব্যবস্থা একেবারে শেষ হয়ে গেছে। এখন আবার আইন করছে এবং মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, খসড়া অনুমোদন হয়েছে যে, এখন ব্যাংকের পরিচালকরা যাদের তিন মেয়াদ হয়েছে তারা চার মেয়াদে থাকতে পারবেন এবং শুধু তাই নয় এই আইন পাশ হলে একই পরিবারের চারজন একই সঙ্গে পরিচালক হতে পারবেন। অর্থাৎ ব্যাংক গুলো দখল করে নিয়েছেন এখন পরিবারের লোকজন পরিচালনায় থাকবেন। অর্থনীতিকে লুট করে ছেড়ে দেবেন।’
হাওরাঞ্চলের দুর্গত চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যখন হাওরের মানুষ না খেয়ে আছে তখন আপনারা ( সরকার) ঘুরে বেড়াচ্ছেন, বিভিন্ন মন্ত্রী-সচিবরা বিদেশে ঘুরতে যাচ্ছেন। সেখানে বলছেন- এত উন্নয়ন নাকি দেশে আর হয়নি?’
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/৯:৪৫পিএম/৮/৫/২০১৭ইং)