• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০৭:৪১ অপরাহ্ন

ঘামে নয় শ্রমিকের রক্তে কেনা মে দিবস


প্রকাশের সময় : মে ১, ২০১৭, ৮:১৪ AM / ৪৬
ঘামে নয় শ্রমিকের রক্তে কেনা মে দিবস

ঢাকারনিউজ২৪.কম:

শ্রমিকের হাতুড়ির আঘাতের পর আঘাতে সভ্যতার সৃষ্টি, সভ্যতার অগ্রযাত্রা। তাদের শ্রমেই আধুনিক থেকে অতি আধুনিকতার ছোঁয়া। অথচ সভ্যতার শুরু থেকেই অধিকারহারা শ্রমিকরা।

ইটের ওপর ইট গেঁথে আকাশচুম্বী প্রাসাদে বসে যখন মহাকাশ জয়ের স্বপ্ন বোনা হয় ঠিক তখনও শ্রমিকরা অধিকার আদায়ে বুকের রক্ত ঝরায়।

বঞ্চিত খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের ইতিহাস ১৩১ বছর পার হলো। আজ পহেলা মে। মহান মে দিবস।

হাজার বছরের বঞ্চনা আর শোষণ থেকে মুক্তি পেতে ১৮৮৬ সালের এদিন বুকের তাজা রক্ত ঝরিয়েছিলেন শ্রমিকরা। শ্রমঘণ্টা কমিয়ে আনার দাবিতে এদিন শ্রমিকরা যুক্তরাষ্ট্রের সব শিল্পাঞ্চলে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন। ওই ডাকে শিকাগো শহরের তিন লক্ষাধিক শ্রমিক কাজ বন্ধ রাখেন।

শ্রমিক সমাবেশ ঘিরে শিকাগো শহরের হে মার্কেট রূপ নেয় লাখো শ্রমিকের বিক্ষোভসমুদ্রে। এক লাখ ৮৫ হাজার নির্মাণ শ্রমিকের সঙ্গে আরও অসংখ্য বিক্ষুব্ধ শ্রমিক লাল ঝাণ্ডা হাতে সমবেত হন সেখানে। বিক্ষোভ চলাকালে একপর্যায়ে পুলিশ শ্রমিকদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালালে ১০ শ্রমিক প্রাণ হারান।

এদিকে হে মার্কেটের ওই শ্রমিক অসন্তোষের আগুন জ্বলে ওঠে গোটা দুনিয়ায়। গড়ে ওঠে শ্রমিক-জনতার বৃহত্তর ঐক্য। অবশেষে তীব্র আন্দোলনের মুখে শ্রমিকদের দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয় তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার।

পরে ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে শিকাগোর রক্তঝরা অর্জনকে স্বীকৃতি দিয়ে ওই ঘটনার স্মারক হিসেবে ১ মে ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

১৮৯০ সাল থেকে প্রতি বছর দিবসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালিত হতে থাকে। রক্ত দিয়ে কেনা শ্রমের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিনটি বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। ব্রিটিশ আমল তথা ১৯৩৮ সালে নারায়ণগঞ্জে প্রথম মে দিবস পালিত হয়। এরপর পাকিস্তান আমলেও মে দিবস যথাযথ উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে পালিত হয়।

১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে মে দিবস পালিত হয়। ওই বছর সদ্য স্বাধীন দেশে পহেলা মে সরকারি ছুটি ঘোষিত হয়।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা শ্রমজীবী মানুষসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

এদিন সরকারি ছুটি। সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সব তফসিলি ব্যাংক ও কলকারখানা বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন ও বেতারগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র ও নিবন্ধ প্রকাশ করেছে।

শ্রমিক সংগঠনগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও নানা কর্মসূচি পালন করছে।

 

  (ঢাকারনিউজ২৪.কম/এনএম ০৮.১২এএম/০১//২০১৭ইং)