• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন

ক্যাপসিকামে ভোলার চরাঞ্চলবাসীর ভাগ্যবদল


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ২০, ২০১৭, ১১:৪১ PM / ৩৬
ক্যাপসিকামে ভোলার চরাঞ্চলবাসীর ভাগ্যবদল

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ভোলা : ভোলার চরাঞ্চলে উন্নতজাতের ক্যাপসিকাম চাষ করে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। গত দুই বছর ধরে পরীক্ষামূলক ক্যাপসিকাম চাষে সফলতা পেয়েছে এখানকার চাষীরা। কম সময়ে বাম্পার ফলন, অধিক মুনাফা ও বাজার মূল্য ভালো পাওয়ায় এ সবজি চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। আর এ সকল উৎপাদিত ক্যাপসিকাম ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হচ্ছে।

ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের মেঘনার কোলে জেগে ওঠা এক দ্বীপের নাম মাঝের চর। এই চরটিতে প্রায় ১৫ হাজার লোকের বসবাস। এখানকার বসবাসরত মানুষগুলো মৎস্য আহরণ ও কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। চরের মাটি ও আবহাওয়া যেকোন ফসল উৎপাদনে সহায়ক হওয়ায় গত দুইবছর ধরে জেলার সবচেয়ে বেশি ক্যাপসিকাম চাষ হচ্ছে এ বিচ্ছিন্ন চরে। আর উৎপাদিত ক্যাপসিকাম স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা একটু কম হলেও ঢাকার বাজারে এর চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।

মাঝের চরের প্রথম ক্যাপসিকাম চাষী যুবক নয়ন বলেন, ২০১৪ সালে ওই চরের চারজন কৃষক প্রথমবারের মতো প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ শুরু করেন। এতে প্রত্যেকেরই ফলন ভালো হলেও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তাদের ফসল অনেকটা নষ্ট হয়ে যায়। তাই তারা সকলে তেমন একটা লাভ করতে পারেনি। তার পরেও আশার আলো ছাড়েনি তারা। পরের বছর তারা আরো কয়েক জন কৃষককে নিয়ে ক্যাপসিকাম চাষ করে হেক্টর প্রতি প্রায় ৩০ মেট্রিকটন ক্যাপসিকাম উৎপাদন করেন। বাজারমূল্য ভালো পাওয়া প্রত্যেকেই অধিক মুনাফা অর্জন করেছে। তারপর থকে এখানকার কৃষকরা ক্যাপসিকাম চাষে ঝুঁকছেন। এবছরও নয়ন ২ একর জমিতে ক্যাপসিক্যাম চাষ করেছেন। ফলনও ভালো এসেছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রায় ২০ মেট্রিকটন ক্যাপসিকাম উৎপাদন হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

একই চরের ক্যাপসিকাম চাষী আবুল কাসেম। এ বছর তিনি চার একর জমিতে চাষ করেছেন, ফলন অনেক ভালো হয়েছে, এ বছর ২০ লাখ টাকার ক্যাপসিকাম বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

আরেক চাষী মনির পাঠান জানান, ক্যাপসিকাম একটি লাভজনক সবজি। তাই তিনি দেড় একর জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করেছেন। স্থানীয় বাজারের এর চাহিদা একটু কম থাকলেও ঢাকার পাইকারি বাজারে এর চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। বিভিন্ন জেলার পাইকাররা বড় আকৃতির ক্যাপসিকাম প্রতি কেজি ৮০-১২০ টাকা এবং ছোট আকৃতির প্রতি কেজি ৫০-৭০ টাকা করে কিনে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করেন।

এ বছর এই চরে নিজাম, ছিদ্দিক, তছির, নাগর, মজিবুর, ফারুক, সেলিম, ওমর ফারুক, কাশেম পাঠান, শাহে আলম, শহীদসহ অর্ধশতাধিক কৃষক ক্যাপসিকাম চাষ করে নিজেদের ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন করছেন। তাদের দেখাদেখি চরের বহু কৃষক ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহী হয়ে পড়েছেন।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসার অধিদফতরের উপ-পরিচালক প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ভোলার চরাঞ্চলের মাটি উর্বর ও যেকোন ফসল উৎপাদনে সহায়ক। ক্যাপসিকাম কম সময়ে বাম্পার ফলন ও বাজারমূল্য ভালো পাওয়ায় কৃষকরা এ সবজি চাষে ঝুঁকছেন। তিনি চাষীদের যে কোন সমস্যার বিষয়ে দ্রুত কার্যকরি ব্যবস্থা ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১১:১৫পিএম/২০/২/২০১৭ইং)