• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:০১ অপরাহ্ন

রমজানে সরগরম ‘গরীবের দরবার’ জাবালে নূর


প্রকাশের সময় : মার্চ ২০, ২০২৪, ১১:২৬ PM / ৬৬
রমজানে সরগরম ‘গরীবের দরবার’ জাবালে নূর

নিজস্ব প্রতিবেদক : পবিত্র সিয়াম সাধনার মাস রমজান চলছে। এই মাসে পূণ্যের আশায় নানা এবাদতে মশগুল থাকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সেহরী, ইফতার, রোজা-তারাবীহ ও দান-খয়রাতে মন দেয় তারা। আর এ মাসেই দরিদ্র দিনমজুরদের জন্য খুলেছে ‘গরীবের দরবার’ জাবালে নূর ওয়েলফেয়ার। যদিও রমজান মাস ছাড়া সারাবছরই মানবসেবায় কাজ করে চলেছে এই সংস্থাটি।

ইফতারের কিছুক্ষণ আগেই নগরীর পাইকপাড়া নয়াপাড়ার মোড়ে একে একে এসে জড়ো হন দিনমজুর, নি¤œবিত্ত ও আশ্রয়হীন কিছু মানুষ। শুধু তারাই নন, এতে যোগ দেন মধ্যবিত্তরাও। সকলেই একসঙ্গে ইফতার সারেন। স্থানীয়রা এর নাম দিয়েছেন-‘গরীবের দরবার জাবালে নূর’।
জাবালে নূর ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন রমজান মাসজুড়ে এভাবেই ইফতারের আয়োজন করবে। সংস্থাটি ধর্মীয় দিক বিবেচনায় রেখে এখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, শিশু ও বৃদ্ধদের কোরান শিক্ষার ব্যবস্থা ও সাপ্তাহিক দ্বীনি বৈঠকেরও ব্যবস্থা করেছে।
জাবালে নূর ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের অন্যতম পরিচালক কাজী মহিউদ্দিন আলিফ জানান, সংস্থাটি বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, বিনামূল্যে নারীদের সেলাই ও হস্তশিল্প প্রশিক্ষণ, শিশু ও বৃদ্ধদের কোরান শিক্ষার ব্যবস্থাসহ বেশ কিছু প্রকল্প রয়েছে।
কম্পিউটার প্রশিক্ষক কাজী মহিউদ্দিন আলিফ জানান, মূলতঃ শিক্ষিত বেকারদের উন্নত কর্মসংস্থানের বিষয়টি মাথায় রেখে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কোর্সের শুরু। আড়াই মাস মেয়াদের এই কোর্সে শিক্ষার্থীদের কম্পিউটারের প্রাথমিক নানা বিষয় শেখানো হয়। বর্তমানে ৬ জনের একটি ব্যাচের প্রশিক্ষণ চলছে। এদের মধ্যে ৩ জন নারী। ইতোমধ্যে ২৪ জন কোর্স সম্পন্ন করে কর্মজীবনে যোগ দিয়েছেন।
শিশু ও বয়স্কদের কোরান শিক্ষার প্রকল্পের পরিচালক হাফেজ মোঃ সেলিম জানান, ৬০-৭০ জন শিশু বর্তমানে আরবি শিখছে। শিশুদের আরবি বর্ণমালা, নূরানী কায়দা ও সহজ-শুদ্ধভাবে নামাজও শেখানো হচ্ছে। নানা মাসলা-মাসায়েল শেখানোর পাশাপাশি ইসলামিক প্রয়োজনীয় অনেক বিষয়ও শেখানো হয়। এই প্রকল্পের সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে-এক দিয়ে অবৈতনিক শিক্ষা অন্যদিকে প্রতিদিন ক্লাশ শেষে শিশুদের উপহার হিসেবে চকলেট পাওয়া।

নারীদের জন্য জাবালে নূরের আয়োজন সেলাই ও হস্তশিল্প প্রশিক্ষণ। প্রকল্পটি পরিচালনা করছেন ফাতেমা-তুজ-জোহরা। ৫ জন করে একটি ব্যাচ গঠন করে চলছে প্রশিক্ষণ। বতর্মানে ৪টি উদ্যোগী টিমের প্রশিক্ষণ চলছে। ফাতেমা-তুজ-জোহরা জানান, প্রশিক্ষণ শেষ করে অনেকেই কর্মজীবনে ফিরে গেছেন। কেউ কেউ বাসায় বসেই হাতের কাজ করে বাড়তি রোজগার করছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন নারী সফলও হয়েছেন। অস্বচ্ছল কয়েকজন নারীকে সংস্থার পক্ষ থেকে সেলাই মেশিনও দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

তবে এসব কিছুকেই খুব ক্ষুদ্র ও প্রাথমিক আয়োজন বলে জানান জাবালে নূর ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাকীম কাজী মেফতাহউদ্দিন জসিম। তিনি বলেন, বড় পরিসরে এসব প্রকল্পগুলো করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। চলমান প্রকল্পগুলোর সঙ্গে আরও কিছু সেবামূলক প্রকল্প চালু করতে চাই। এজন্য আমাদের একটি বড় স্পেস দরকার। আমরা এরজন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে সবকিছুর মূলেই মানুষের সেবাই উদ্দেশ্য। এসব কাজের পেছনে বাবার দেখানো পথই তাঁর অনুপ্রেরণা বলে জানান তিনি।
কাজী মেফতাহউদ্দিন জসিম বলেন, কয়েক বছর আগে শুরু করেছি। আমরা প্রথমে নারায়ণগঞ্জ দিয়ে শুরু করেছি। এরপর আস্তে আস্তে সারাদেশেই আমাদের এই সংগঠনের শাখা খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। ইচ্ছাশক্তি ও সৎ উদ্দেশ্যের সম্মিলন ঘটিয়ে মানুষের জন্য অনেক কিছুই করা যায় বলে তিনি বিশ^াস করেন।