• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন

ভারতের বিপক্ষে টাইগারদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দীর্ঘ ইনিংস


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ১২, ২০১৭, ১২:১১ PM / ৩৬
ভারতের বিপক্ষে টাইগারদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দীর্ঘ ইনিংস

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ঢাকা : আরো একবার স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে লড়ে গেলেন তিনি। প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল ফলো-অন এড়ানো। সেই পথ পাঁড়ি দিতে সংগ্রাম করলেন মুশফিকুর রহীম। তাকে নিয়ে শত সমালোচনা একপাশে সরিয়ে রেখে ব্যাট হাতে জবাব দিলেন। টেস্ট ক্যাপ্টেন বুঝিয়ে দিলেন তাকে ছাড়া একাদশ গড়া এখন অসম্ভবই। রোববার লাঞ্চ বিরতির আগেই লড়াকু এক শতরান তুলে নেন মুশি। কিন্তু অন্য প্রান্তে সঙ্গী পাননি। শেষ পর্যন্ত তাড়াহুড়ো করে রান তুলতে গিয়ে ১২৭ রানে শেষ তার সংগ্রামী সেই ইনিংস। একই সঙ্গে শেষ বাংলাদেশের ১ম ইনিংসও। টেস্টের চতুর্থ দিন লাঞ্চের ১২৭.৫ ওভারে অলআউট হয়ে দল করেছে ৩৮৮ রান। যা কীনা ওভারের হিসেবে ভারতের বিপক্ষে টাইগারদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দীর্ঘ ইনিংস।

তারপরও ফলো-অন এড়ানো হল না। ভারতের ১ম ইনিংস থেকে ২৯৯ রান পিছিয়ে শেষ করল টাইগাররা। কিন্তু ভারত বাংলাদেশকে ফলো-অন করাচ্ছে না। লাঞ্চের আগেই ২য় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছে স্বাগতিকরা।

বাংলাদেশ অধিনায়ক অবশ্য ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। তার ক্যারিয়ারের পঞ্চম টেস্ট শতক তুলতে গিয়ে বেশ ঘাম ঝরিয়েছেন। ২৩৫ বল খেলে এই মাইলফলকে পা রাখেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১২৭ রানে থামেন তিনি। খেলেন ২৬২ বল। এই ইনিংস খেলার পথে মুশি টপকে যান হাবিবুল বাশারকে (৩০২৬)। টেস্ট এখন তিনি দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ওপরে আছেন তামিম ও সাকিব।

মুশফিককে শুরুতে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। এরপরই মেহেদী হাসান মিরাজ। দারুণ দৃঢ়তা দেখিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসটাই খেলে ফেলেন তিনি। তার ও মুশফিকুর রহীমের ব্যাটেই ফলো-অন এড়ানোর স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু হায়দ্রাবাদ টেস্টের চতুর্থ দিনের প্রথম ওভারেই সর্বনাশ! ভুবনেশ্বর কুমারের সুইং বলটা বুঝে উঠতে পারলেন না। বোল্ড মেহেদী। আগের দিনের সেই ৫১ রানেই ধরেন সাজঘরের পথ। ভাঙ্গে ৮৭ রানের জুটি।

মুশফিককে কিছুক্ষণ সঙ্গ দিয়ে তাইজুল ইসলাম ফিরে যান ১০ রানে। খেলেন ৩৮ বল। তাসকিন আহমেদও লড়েছেন কিছুটা সময়। ৩৫ বলে ৮ রান করে রবিন্দ্রু জাদেজার শিকার তিনি। ৩৯ রানের জুটি গড়েন অধিনায়কের সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত কামরুল ইসলাম রাব্বি অপরাজিত ছিলেন শুন্য রানে।

রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামে মাটি কামড়ে ব্যাট করে অর্ধশতকে পৌঁছতে খেলেন ১৩৩ বল! ৪০ থেকে ৫০ রানে পৌঁছতে গিয়ে খেলেন পঞ্চাশ বল। অাগের দিনই ৮১ রান করার পথে দেশের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ৩০০০ রানের মাইলফলক পেরিয়ে যান মুশফিক।

এর আগের দিন সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে আসে ৮২ রান। মুশফিকের সঙ্গে ১০৭ রানের জুটি গড়েন বাজে শটে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি। অন্য ব্যাটসম্যানরা যেন উইকেটে আসা-যাওয়ার খেলাতেই ছিলেন ব্যস্ত! রোববার ৬৬ রানে শেষ ৪ উইকেট! তাইতো ব্যাটিং স্বর্গে ঠিকঠাক জবাব দেয়া হল না স্বাগতিকদের।

মুশফিককে ফিরিয়ে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ৪৫ টেস্টে আড়াইশ’ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়েন। টপকে যান অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি ডেনিস লিলিকে (৪৮)।

তারও আগে প্রথম দুই দিনের ৫ সেশনে ব্যাটিং স্বর্গে ভারত রানের পাহাড়ে উঠে বসে। ৬ উইকেট হারিয়ে ১ম ইনিংসে ৬৮৭ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে তারা। ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি করেছেন রেকর্ড গড়া ডাবল সেঞ্চুরি। তার আগে মুরালি বিজয় এবং পরে ঋদ্ধিমান সাহা সেঞ্চুরি করেছেন।

ভারতের এই ইনিংসের জবাব দিতে নেমে ফলো-অন এড়াতেই নাকাল হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো ভারতের মাঠে টেস্ট খেলতে গিয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে টাইগাররা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

ভারত ১ম ইনিংস : ১৬৬ ওভারে ৬৮৭/৬ ইনিংস ঘোষণা (রাহুল ২, বিজয় ১০৮, পুজারা ৮৩, কোহলি ২০৪, রাহানে ৮২, ঋদ্ধিমান ১০৬*, অশ্বিন ৩৪, জাদেজা ৬০*; তাসকিন ১/১২৭, রাব্বি ০/১০০, সৌম্য ০/৪, মিরাজ ২/১৬৫, সাকিব ০/১০৪, তাইজুল ৩/১৫৬, সাব্বির ০/১০, মাহমুদুউল্লাহ ০/১৬)।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১২:১০পিএম/১২/২/২০১৭ইং)