• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০৬:৪০ অপরাহ্ন

আগামী সপ্তাহেই বাড়তে পারে গ্যাসের দাম!


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৮, ৭:৩১ PM / ৫৮
আগামী সপ্তাহেই বাড়তে পারে গ্যাসের দাম!

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে অধিক খরচের কারণে আগামী সপ্তাহ থেকে গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তবে বিইআরসি কর্মকর্তারা বলছেন, আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকরা উচ্চ মূল্য দেওয়া থেকে রেহাই পাচ্ছে। সংশোধিত উচ্চমূল্যের প্রভাব পড়বে বিদ্যুৎকেন্দ্র, সার কারখানা, সিএনজি স্টেশন, শিল্প কারখানা ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ওপর। গ্যাসের দাম ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।

উচ্চ মূল্যে আমদানি করা এলএনজি গ্যাস চলতি বছরের আগস্ট থেকে গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ শুরু করার মাঝেই সরকার দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত নিল। প্রতি ইউনিট (এক হাজার ঘনফুট) এলএনজির খরচ পড়ছে ১১ মার্কিন ডলার, যেখানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত গ্যাসের খরচ ইউনিট প্রতি মাত্র ২ দশমিক ৯ মার্কিন ডলার।

বিইআরসি সূত্রে জানা যায়, গ্যাসের দাম বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রস্তাবগুলোর সব সুবিধা ও অসুবিধা বিবেচনা করে বিইআরসি এখন দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে। যে কোনো সময় তারা দাম ঘোষণার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

বিইআরসি সদস্য মিজানুর রহমান জানান, তারা দুটি বিষয় নিষ্পত্তি করার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। পাইপলাইনে আমদানিকৃত এলএনজির প্রবাহ এবং এলএনজির ওপর সম্পূরক শুল্ক (এসডি) মওকুফ প্রদানে সরকারের সিদ্ধান্ত। দুয়েক দিনের মধ্যে এসডি মওকুফের বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার আশা করছে বিইআরসি।

এর আগে জুন মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন গ্যাস বিতরণ ও সরবরাহকারী কোম্পানির আবেদনের প্রেক্ষিতে গণশুনানির আয়োজন করে জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিইআরসি।

রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানি, একটি সরবরাহ কোম্পানি ও একটি এলএনজি বাজারজাতকরণ কোম্পানিসহ আট প্রতিষ্ঠানের সবগুলোই আবাসিক ও বাণিজ্যিক খাত ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে বিদ্যমান গ্যাসের দাম গড়ে ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য বিইআরসির কাছে আবেদন করেছিল।

শুনানির সময়, গ্যাস খাতের কোম্পানিগুলো যুক্তি দেখায়, উচ্চ মূল্যে আমদানিকৃত এলএনজি ব্যয়ের কারণে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব জমা দিতে হয় তাদের, কারণ এতে তাদের খরচ যথেষ্ট পরিমাণে বেড়ে যাবে।

সর্ববৃহৎ গ্যাস বিতরণকারী কোম্পানি তিতাস তাদের প্রস্তাবনায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে ৩ দশমিক ১৬ টাকা থেকে ১০ টাকা করার, অর্থাৎ ২০৬ শতাংশ বাড়াতে বলে।

গ্যাসের দাম সবচেয়ে বেশি ৩৭২ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয় সার কারখানার ক্ষেত্রে। প্রতি ঘনমিটারে বিদ্যমান ২ দশমিক ৭১ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ দশমিক ৮০ টাকা করতে বলা হয়।

ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটার ৯ দশমিক ৬২ টাকার পরিবর্তে ১৬ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়।

অন্যদিকে কারখানায় গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে ৭ দশমিক ৭৬ টাকার পরিবর্তে ১৫ টাকার করার প্রস্তাব রাখা হয়। এ ছাড়া সিএনজি স্টেশনে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বিদ্যমান ৩২ টাকার পরিবর্তে ৪০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়।

বাংলাদেশ ভোক্তা সমিতিসহ (ক্যাব) বিভিন্ন ভোক্তা অধিকার সংগঠনগুলো গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবগুলোর বিরোধিতা করেছে এবং গ্যাসের দাম কমানোর জন্য আবেদন করেছে।

বিইআরসি বিধি অনুযায়ী, শুনানি শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে তার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে হবে।

গত ১৮ আগস্ট থেকে গ্রাহক পর্যায়ে এলএনজি সরবরাহ শুরু করে পেট্রোবাংলা।

কর্মকর্তারা জানায়, বর্তমানে এলএনজি থেকে প্রতিদিন ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। মাস দুয়েকের মধ্যে এটি প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ করতে পারবে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছর থেকে এলএনজি থেকে প্রতিদিন ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা যাবে।(ইউএনবি)

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/কেএস/৭:৩২পিএম/২১/৯/২০১৮ইং)