• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৩ অপরাহ্ন

‘মানুষ পুড়ছে, আর্তনাদের সঙ্গে সঙ্গে মেঝেতে পড়ে যাচ্ছিল’


প্রকাশের সময় : মার্চ ১৩, ২০১৮, ২:২৯ PM / ৪২
‘মানুষ পুড়ছে, আর্তনাদের সঙ্গে সঙ্গে মেঝেতে পড়ে যাচ্ছিল’

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : নেপালের কাঠমান্ডুতে সোমবার ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২১ জন। আহতদের রাজধানী কাঠমান্ডুর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। আহত এসব প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ জানিয়েছেন সেই ভয়াবহ মুহুর্তের কথা। মঙ্গলবার নেপালের সংবাদমাধ্যম হিমালয়ান টাইমস’এ প্রকাশিত সেই প্রতিবেদন পরিবর্তনের পাঠকদের জন্য দেয়া হলো।

ইউএস বাংলার বিধ্বস্ত বিমান থেকে সেদিন সৌভাগ্যবশত প্রাণে বেঁচে যান বাংলাদেশের নাগরিক শাহরিন আহমেদ। বিমানটিতে অন্যান্য আরোহীদের মধ্যে ২৯ বছর বয়সী এই নারীও ছিলেন। কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন শাহরিন জানাচ্ছিলেন সেই মর্মান্তিক ঘটনার কথা।

শাহরিন বলেন, ‘আমি আমার বন্ধুর সঙ্গে বিমানটিতে ভ্রমণ করছিলাম। ফ্লাইটটি যখন নেপালে অবতরণ করতে যাবে ঠিক তখনই বিমানের মুখ বামে ঘুরে যায়। যাত্রীরা তখন চিৎকার করছিল। আমরা পেছনে তাকিয়ে দেখি বিমানে আগুন ধরে গেছে।’

‘আমার বন্ধু সামনের দিকে দৌড় দিতে চাইলেন। কিন্তু আমরা যখন দৌড় দেব ঠিক তখন আগুন বিমানকে গ্রাস করে। তার শরীরেও আগুন ধরে যায়। সে মেঝেতে পড়ে যায়। মানুষ তখন পুড়ছে, আর্তনাদের সঙ্গে সঙ্গে তারা মেঝেতে পড়ে যাচ্ছিল। এরমধ্যে ৩ জন বিমান থেকে লাফ দেয়। পরিস্থিতি তখন ভয়াবহ। এরমধ্যে কিছু মানুষ সেখান থেকে আমাকে বের করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়।’

পেশায় শিক্ষক শাহরিন কাঠমান্ডু এবং পোখারা ভ্রমণ করতে চেয়েছিলেন। শাহরিনের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে হাসপাতালের চিকিৎসক নাজির খান বলেন, ‘তার ডান পায়ে মারাত্মক জখম রয়েছে। তাকে আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেই সেখানে অস্ত্রোপচার করা হবে। এছাড়া রোগীর পেছনেও ১৮ ভাগ পুড়ে গেছে।’

বিধ্বস্ত বিমানে ছিলেন মেহেদি হাসান নামের অপর বাংলাদেশি। যিনি এই প্রথম আকাশ পথে ভ্রমণ করছিলেন। তার স্ত্রী, কাজিন এবং তার মেয়ে সঙ্গে ছিলেন। সেই মুহুর্তের বর্ণনা দিতে গিয়ে হিমালয়ান টাইমসকে তিনি বলেন, ‘আমার আসন ছিল বিমানের পেছন দিকে। আগুন দেখতে পেতেই আমি পরিবারের দিকে চাইলাম। আমরা চেষ্টা করছিলাম জানালা ভেঙ্গে ফেলতে। কিন্তু তা ছিল ব্যর্থ চেষ্টা। এমন অবস্থায় আমরা সাহায্যের আশায় ছিলাম। যদি কেউ আমাদের উদ্ধার করে। আমার স্ত্রী এবং আমি উদ্ধার পেলেও কাজিন ও তার মেয়ের কোনো সন্ধান পাইনি।’

শাহরিন এবং মেহেদির মতো অন্তত ১২ জন কাঠমান্ডুর মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আরও ৪ জনকে এখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গ্রান্ড ইন্টারন্যাশনাল, নিউরো এবং নেপাল মেডিসিটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে প্রতিনিধিরা এসব হাসপাতালে রোগীদের খোঁজ খবর নিয়েছেন।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/২:২৬পিএম/১৩/৩/২০১৮ইং)