• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৮:২৬ অপরাহ্ন

ভেঙে ফেলা হচ্ছে আজিমপুরের ২৭১ বছরের পুরনো মসজিদ


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ১৯, ২০১৭, ১০:২০ AM / ৪৬
ভেঙে ফেলা হচ্ছে আজিমপুরের ২৭১ বছরের পুরনো মসজিদ

 

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ঢাকা : পুরনো ঢাকার আজিমপুরের নিউ পল্টন রোডে রাস্তার ধারে ২৭১ বছরের পুরনো মসজিদ ভেঙে ফেলা হচ্ছে। বিবিসি বাংলা এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই মসজিদটি আজিমপুর শাহী মসজিদ হিসেবে পরিচিত। তবে গবেষকরা বলছেন, সব মসজিদ শাহী মসজিদ নয়। যেসব মসজিদ নবাবদের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি হয়েছে এবং একটি কবরস্থানসহ অন্যান্য বিষয়কে মাথায় নিয়ে নির্মাণ হয়েছে – সেসব মসজিদকে শাহী মসজিদ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক নুরুল কবির এ মসজিদ নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি বলছেন, এ মসজিদের একটি শিলালিপি দেখে ধারণা পাওয়া যায় যে এটি ১৭৪৬ সালে নির্মিত। তখন নবাব আলীবর্দি খাঁ বাংলার শাসনকর্তা।

মি: কবির বলেন, “এ মসজিদের গম্বুজ অনেকটা তুরস্কের অটোম্যান আমলের স্থাপত্য শৈলীর মিল আছে।”

কিন্তু নতুন ছয়তলা মসজিদ নির্মাণের জন্য প্রায় পৌনে তিনশ বছরের পুরনো এ মসজিদটি ভাঙ্গার কাজ শুরু করেছিলেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে মসজিদের প্রায় অর্ধেক ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।

মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, এলাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এখন মসজিদে জায়গার সংকুলান হচ্ছে না । সে কারণে এ মসজিদ ভেঙ্গে ছয়তলা মসজিদ তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।

এতো পুরনো হওয়া সত্ত্বেও এ মসজিদটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত হয়নি। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বলছেন ভাঙ্গার কাজ শুরুর আগে তারা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছেন এ মসজিদটি তাদের তালিকায় রয়েছে কিনা। কিন্তু প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর চিঠি দিয়ে মসজিদ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে যে, এ স্থাপনাটি তাদের তালিকায় নেই।

মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মি: মৃধা বলেন, ” আমরা তো স্পেশালিস্ট না। যারা স্পেশালিষ্ট তারা বলছে যে এটা পুরাকীর্তি না। তখন আমরা ভাঙছি।”

এ মসজিদটি ভেঙ্গে নতুন বহুতল মসজিদ নির্মাণের প্রয়োজন আছে কিনা সেটি নিয়ে এলাকায় অনেকের মাঝে দ্বিমত আছে। কেউ মনে করেন যেহেতু জুম্মার নামাজ, তারাবীর নামাজ কিংবা অন্য কোন বিশেষ দিনে মসজিদে মুসল্লিদের জায়গা হয়না সেজন্য এটি ভেঙ্গে নতুন মসজিদ করা প্রয়োজন।

অন্যদিকে কেউ-কেউ মনে করে, পুরনো কাঠামো অক্ষত রেখে মসজিদটিকে কিভাবে সম্প্রসারণ করা যায় সেদিকে নজর দেয়া উচিত ছিল।

শেষ পর্যন্ত বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এবং প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপে ভাঙ্গার কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। এখনো পর্যন্ত যতটুকু অক্ষত আছে সেটিকে বাঁচিয়ে কিভাবে মসজিদটিকে সম্প্রসারণ করা যায় সে সুপারিশ করবে বিশেষজ্ঞ কমিটি। কিন্তু ততক্ষণে ২৭১ বছরের পুরনো এ মসজিদটির প্রায় অর্ধেক ধ্বংসস্তূপে রূপ নিয়েছে।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১০:১৮এএম/১৯/১/২০১৭ইং)