• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১১:০৭ পূর্বাহ্ন

‘ভিষন ২০২১’ বাস্তবায়নে পল্লীবিদ্যুতের ভূমিকা কতটুক আশাব্যঞ্জক?


প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১২, ২০১৮, ১১:১৫ AM / ৩৪
‘ভিষন ২০২১’ বাস্তবায়নে পল্লীবিদ্যুতের ভূমিকা কতটুক আশাব্যঞ্জক?

রেজাউল করিম নয়ন : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতন বিদ্যুৎ খাতের ভুমিকা লক্ষ্য অর্জনে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ এতে পল্লীবিদ্যুতের ভূমিকা সর্বাধীক, কারন বাংলাদেশের  প্রায় ৬৫-৭০ % গ্রাহককে বিদ্যুৎ সেবা প্রদান করে আসছে এই প্রতিষ্ঠানটি। গ্রাম থেকে মফস্বল সবখানেই পল্লীবিদ্যুতের ব্যাপ্তি হওয়ায় দেশের মোট ভোটারের প্রায় ৮০% ভোটার এদের গ্রাহক, এই প্রতিষ্ঠানটির ভাল-মন্দ কর্মকান্ডের প্রভাবটিও এই বৃহত ভোটব্যাংককে প্রভাবিত করে, যা দেখাগেছে ২০০১ পরবর্তী  বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে তারেক জিয়ার খুটি (খাম্বা) দুর্নীতি, উৎপাদন না করে গ্রাহক বৃদ্ধির কারনে ব্যাপক লোডশেডিং সহ নানারকম অনিয়মের উচিৎ জবাব বিএনপি পেয়েছিল এই বৃহৎ ভোটব্যাংকের মাধ্যমে।
গত ২০০৯ নির্বাচনে জয়লাভ করার পর আওয়ামীলীগ সরকার গঠনের পর থেকেই দেশের উন্নয়নে বিদ্যুৎ খাতকে সর্বউচ্চ গুরুত্ব  দিয়ে ধারাবাহিক ভাবেউৎপাদন ও বন্টন বৃদ্ধি করে আসছে এর সু-ফল জনগন পাচ্ছে।

কিন্তু প্রশ্নটা হল পল্লীবিদ্যুত ২০২১ বাস্তবায়নে কি ভূমিকা রাখছে?
মাননীয় প্রধানমন্তীর ঘোষনা ২০২১ বাস্তবায়ন আর বাংলাদেশ পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ড চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত  মেজর জেনারেল মইনুদ্দিন ২০১৮ সালেই শতভাগের চ্যালেঞ্জে প্রতিষ্ঠানটিকে পরিচালনা করছে এতে কি সরকার বা প্রতিষ্ঠান উপকৃত হচ্ছে? মোটেই না এতে পরক্ষভাবে উভয়েরই ক্ষতি।
কিভাবে ক্ষতি হচ্ছে দেখুন,। বর্তমানে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৫৩৫১ (মেঃওঃ):  এতে উৎপাদন হচ্ছে১০,০৮৪ (১৯ মার্চ ২০১৮ এর মন্ত্রনালয়ের তথ্য মোতাবেক) আর তার বিপরীতে চাহীদার পার্থক্যটা থেকেই যাচ্ছে সঞ্চালন লাইন নির্মাণ,  রক্ষনাবেক্ষন সহ বিভিন্ন কারিগরি জটিলতা নিরসনে,
ঘাটতি পূরণে সরকার আরো ১৫ টি উৎপাদনের কাজ করছে আর পরিকল্পনায় আছে আরো ৪১ টি এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আসতে কিছুটা সময় তো লাগবেই।
ভিশন ২০২১ কে বাস্তবায়ন করতেই এসকল উৎপাদন কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শেষকরার সময় নির্ধারন করা হয়েছে।
পল্লীবিদ্যতের চেয়ারম্যানের চ্যালেঞ্জ অনুযায়ী ২০১৮ সালের মধ্যেই যদি ব্যাপক বিতরণ লাইন নির্মানের মাধ্যমে শতভাগ নাগরীককে বিদ্যুৎ সুবিধা দানের পরিবেশ তৈরী করলে সরকার কতটা বিপাকে পরবে নির্বাচনের আগে একটু ভেবে দেখুন,উৎপাদন ঠিকই থাকবে চাহীদা হবে আকাশচুম্বী ফলে বৃদ্ধিপাবে অসহনীয় লোডশেডিং যা জনমনে সরকারের নওয়া পদক্ষেপগুলো বিতর্কের সৃষ্টিকরবে এর আঘাত সরাসরি নির্বাচনে গিয়ে পরবে।

এই প্রতিষ্টানের কর্মচারীদের মনটাও সরকারের বিরুদ্ধে বিষিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে তার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হল (১) পল্লীবিদ্যুতে আওয়ামীলীগ সমর্থিত একটি শ্রমিক সংগঠন গত ৫ বছর যাবৎ অনিবদ্ধিত (প্রস্তাবিত)  অবস্থায় তাদের কর্যক্রম চালিয়ে আসছিলো তারই অপরাধে চাকরী হারিয়েছে প্রায় ২০ জন শ্রমিক নেতা সাময়িক বর্খাস্ত করা হয়েছে প্রায় ৪০ জন নেতাকে আর প্রায় ২০০ কর্মচারীকে সংগঠনটিকে সহযোগীতা করার অপরাধে বদলি করা হয় এ বিষয়গুলো নিয়ে আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও জাতীয় শ্রমিক লিগ অনুরোধ করেও শাস্তি প্রাপ্ত এসকল শ্রমিকনেতা ও সমর্থনকারীদের সমস্যার সমাধান করতে পারেননি,
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের দাম্ভিক ও একঘেয়েমি আচরনের কারনে,পল্লীবিদ্যতের ৩০হাজার কর্মচারীদের মনে একারনে সরকারের প্রতি ব্যাপক অভিমান,সাধারন কর্মচারীদের ধারনা দল সরকারে থাকা অবস্থাতেও আমাদের নেতারা যেখানে বিচার পাচ্ছেনা সেখানে  বোঝাযায় দলের কাছে আমাদের কোন প্রয়োজনীয়তা নাই।
(২)বিভিন্ন অযুহাতে কর্মচারীদের দেওয়া হচ্ছে অর্থনৈতীক শাস্তী ঠুনকো কারনে মনগরা আইন দেখিয়ে বাৎসরিক কে.পি.এ বোনাস সহ বিভিন্ন অর্থনৈতীক সুবিধা দেওয়া হচ্ছেনা অনেক কর্মচারীদের।
(৩)ভিশন ২০২১ বা পল্লীবিদ্যুৎ ঘোষিত ২০১৮  বাস্তবায়ন করতে যে সকল কর্মচারীদের ভুমিকা অপরিসীম তাদের ঢালাও ভাবে বদলি করা হচ্ছে এতে কাজের পরিবেশে স্থবিরতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা তাছারাও ঢালাও বদলিকে কেন্দ্র করে বাড়ছে বদলি বানিজ্য, ফলে ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নের গতিশীলতা বাদধাগ্রস্থ হচ্ছে।
বাংলাদেশ পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ড এর চেয়ারম্যানের ঘোষনা অনুযারী ২০১৮ চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নে পরক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, প্রতিষ্ঠানটিও দ্রুত লাইন নির্মান করতে গিয়ে মানা হচ্ছেনা নির্মানবিধি ফলে নির্মীত লাইনগুলো সামান্যতম প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবেলা করতে ব্যার্থ হবে যাতে করে ভবিষ্যৎকালে এই লাইনগুলো অত্র প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকদের অভিশাপের কারন হয়ে দাড়াবে মোকাবেলা করতে হবে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট যা প্রতিষ্ঠানের অপূরণীয় ক্ষতির কারন হতে পারে অন্যদিকে আওয়ামীসরকারের উন্নয়নমুখী পদক্ষেপটিকে কলঙ্কিত করবে  সৃষ্টি হবে রাজনৈতীক ইস্যু।
আমাদের ধারনা  গত প্রায় ৮ বছর একই ব্যাক্তি প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছেন(পল্লীবিদ্যুতের ইতিহাসে এটাই একমাত্র অন্যান্য সংস্থায় হয়ত বিরল)  তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তার ৮ বছরের কর্মকাল সকলকে অবাক করে দিয়েছে হয়তো এটাও ভবিষ্যত সমালচনার কেন্দ্রবিন্দু হতেপারে।
সামনে জাতীয় নির্বাচন ও ভিশন ২০২১ বাস্তবায়ন অর্জনে পল্লীবিদ্যুতের এমন কর্মকান্ড আদৌ কি কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে পরবে? পারলেও কি তা টেকসই হবে? আওয়ামীলীগ সরকার নির্বাচনে এর সুফল কতটুকু পাবে?

প্রশ্ন রইল দলীয় নেতৃবৃন্দের কাছে আর সরকার পরিচালানার দায়ীত্বে থাকা মাননীয় মহদয়গনের কাছে।

দলের জন্যে এটা যদি ভাবনার বিষয় হয়েথাকে তাহলে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবী।

লেখক : রেজাউল করিম নয়ন
০১৭১২৯৬৬৩২৪

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/১১:১২এএম/১২/৪/২০১৮ইং)