• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন

পঁচিশ মার্চ : আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের তাৎপর্য


প্রকাশের সময় : মার্চ ২৫, ২০১৮, ১:৪৮ PM / ৩২
পঁচিশ মার্চ :  আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের তাৎপর্য

আবীর আহাদের বাণী থেকে :
আজ ভয়াল পঁচিশে মার্চ। উনিশশো একাত্তরের সালের এইদিনের কালরাতে বর্বর পাকিস্তান সামরিক বাহিনী পৃথিবীর সর্বাধুনিক মারণাস্ত্র নিয়ে স্বাধীনতাকামী নিরীহ নিরপরাধ বাঙালি জাতির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে । এইদিন একমাত্র ঢাকা শহরে প্রায় এক লক্ষসহ সারা বাংলাদেশের পাকি-সামরিক স্থাপনা-অধ্যুষিত এলাকায় তিন লক্ষ মানুষকে তারা নির্বিচারে নির্মমভাবে হত্যা করে । পরবর্তীকালে পুরো ন’মাসব্যাপী সারা বাংলাদেশের সব শহর নগর গঞ্জ ও গ্রামে তারা সব মিলিয়ে ত্রিশ লক্ষাধিক বাঙালির প্রাণহরণ করে । এ-ছাড়া বাঙালির ঘরবাড়ি ব্যবসা-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কলকারখানাসহ নানান স্থাপনায় লুটপাটসহ আগুনে পুড়িয়ে ভস্মীভূত করে । প্রায় তিন লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি ঘটায় । আর এসব হত্যাযজ্ঞ লুটপাট অগ্নিসংযোগ ও নারীনির্যাতনে সার্বিক সহযোগিতা করে বাঙালি নামধারী কুলঙ্গার রাজাকার আলবদর আলশামস আলমুজাহিদ শান্তি কমিটির অমানুষের দল । রাজনৈতিক দল হিশেবে সেদিন জামায়াতে ইসলাম, ইসলামি ছাত্র সংঘ (ছাত্রশিবির ), মুসলিম লীগ, পিডিপি, নেজামে ইসলামসহ অন্যান্য   পাকিপহ্নীরা পাকিবাহিনী ও তাদের এদেশীয় সহযোগীদের পেছনে সর্বপ্রকার সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদান করে । পৃথিবীর ইতিহাসে মাত্র ন’মাসের মধ্যে এতো মানুষের নিহত হওয়ার উদাহরণ বিশ্বের আর কোনো দেশে নেই যা ঘটেছিলো এই বাংলাদেশে ।

এতোবড়ো গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের কথা বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলো বলেই বিশ্বজনমত ছিলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে । কিন্তু দু:খজনক সত্য এই যে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থানকারী পাকিস্তানের বন্ধু বলে খ্যাত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, সৌদিআরবসহ অন্যান্য ধনতান্ত্রিক বিশ্বের সরকারসমূহের অনীহা এবং বাংলাদেশের ইতোপূর্বেকার সরকারগুলোর অদূরদর্শিতা ও অযোগ্যতার কারণে স্বাধীনতার সাতচল্লিশ বছর অতিবাহিত হলেও দেশে বা বিশ্বের নিকট পঁচিশে মার্চের বর্বর গণহত্যার বিষয়টি তুলে ধরতে পারনি । তবে বর্তমান ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনা সরকার গতবছর সচেতন দেশবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদে একটি বিল পাশ করে পঁচিশ মার্চকে জাতীয়ভাবে গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি দিয়ে ইতিহাসে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এবং এই দিবসটিকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিশেবে স্বীকৃতি পাওয়ার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ।

পঁচিশ মার্চ দিনটি আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিশেবে স্বীকৃতি লাভ করলে বিশ্ববাসী নতুন করে বাংলাদেশে একাত্তরে পাকিস্তানসহ তাদের এদেশীয় সহযোগী এবং তার আন্তর্জাতিক বন্ধুদের মুখোশ খুলে যাবে—–বিশ্বে ধিক্কার সৃষ্টি হবে এবং ভবিষ্যতে বিশ্বে এ-জাতীয় গণহত্যা   সংঘটিত হওয়ার বিপক্ষে একটি জনমত ও আন্দোলন সৃষ্টি হবে । জয়বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/১:৪৫এএম/২৫/৩/২০১৮ইং)