• ঢাকা
  • শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ১১:০৭ পূর্বাহ্ন

নদী ভাঙ্গনে ৩৫০০ শিক্ষার্থীর লেখাপড়ায় অনিশ্চয়তা


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ২৬, ২০১৭, ১০:৩২ PM / ৩৩
নদী ভাঙ্গনে ৩৫০০ শিক্ষার্থীর লেখাপড়ায় অনিশ্চয়তা

 

ঢাকারনিউজ২৪.কম, মাদারীপুর : পদ্মায় তীব্র ভাঙনে চরের একটি উচ্চ বিদ্যালয় ও দুইটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ হুমকির মুখে প্রায় ৩,৫০০ শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসা ইতোপূর্বে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

গত কয়েকদিনে পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে চরজানাজাত, বন্দরখোলা, মাদবরচর ও কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের প্রায় ৭০০ পরিবার নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ১৪৪টি পরিবার তার নিজ ইউনিয়ন ছেড়ে অন্য স্থানে গিয়ে মাথা গোঁজার ঠাই খুঁজে নিয়েছে। ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে চরজানাজাত ইউনিয়ন পরিষদের দ্বি-তল ভবন।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো- ইলিয়াস আহম্মেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়, মালেক তালুকদার কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মজিদ বেপারী কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মজিদ সরকার কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, এ সকল এলাকায় প্রায় ৪০০ পরিবার পদ্মার ভাঙ্গনে পরে সহায়সম্বল হারিয়ে প্রায় নিঃস্ব এছাড়া নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে সড়ক, ব্রীজ, কালভার্ট। এছাড়া রোপা আমন, বোনা আমন, শাকসবজিসহ প্রায় ৪০০ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদী ভাঙ্গনে শিকার অসহায় মানুষগুলো তাদের ঘরবাড়ি দ্রুত সরিয়ে নিচ্ছে এবং বন্যার পানি ও নদী ভাঙ্গনের কারণে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

ইলিয়াস আহম্মেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতান মাহমুদ জানান- বিদ্যালয়টি পদ্মানদীর ভাঙ্গন সীমানা থেকে মাত্র ১৫০মিটার দুরে অবস্থান করছে।নদী ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। চরাঞ্চলের প্রায় সহস্রাধীক ছেলেমেয়ে এ বিদ্যালয়টিতে লেখাপড়া করে। এ বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেলে এ অঞ্চলের ছেলেমেয়েরা মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে।

শিবচর উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ভাঙ্গনকবলিত আ. মজিদ বেপারী কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের জন্য কমিটিকে অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। তবে অপর দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাকা ভবন অপসারনের জন্য কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এ ৩টি বিদ্যালয়ে প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে।

চরজানাজাত ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোতালেব বেপারী জানান, গত কয়েক পাঁচ বছর ধরেই নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতিবছর প্রায় দুইশ থেকে তিনশত একর জমি নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। গত পঁচিশ বছর ধরে এই চরাঞ্চলে গড়ে উঠা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাকা ভবন, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে।

চরজানাজাত ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রহমান সরকার বলেন, একদিকে নদীর ভাঙ্গন অপরদিকে বন্যার পানি চরাঞ্চলবাসি এখন দিশেহারা।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান আহমেদ জানান, এ বছর নদী ভাঙন বেড়ে গেছে। পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙ্গনে ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইতোপূর্বে নদী গর্ভে চলে গেছে। এছাড়া চরজানাজাত ইউনিয়নে আরও ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্টান নদী ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে। আনেক মানুষের বসবাসের জমিটুকুও নদী গর্ভে চলে গেছে। প্রায় ৪০০ পরিবার মূহুর্তেই সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়ছে।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/১০:২৫পিএম/২৬/৮/২০১৭ইং)