• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৬:১৭ পূর্বাহ্ন

দুই প্রতিষ্ঠান সহ ২১ নারী পেলেন পুলিশ উইমেন অ্যাওয়ার্ড


প্রকাশের সময় : এপ্রিল ২১, ২০১৭, ৯:৪৩ AM / ৭৫
দুই প্রতিষ্ঠান সহ ২১ নারী পেলেন পুলিশ উইমেন অ্যাওয়ার্ড

ঢাকারনিউজ২৪.কম:

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে কর্মক্ষেত্রে নারী পুলিশের অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন অ্যাওয়ার্ড-২০১৭ দেওয়া হয়েছে। সাতটি ক্যাটাগরিতে দুটি প্রতিষ্ঠান এবং ২১ নারী পুলিশ সদস্য এ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ এর পিএসসি কনভেনশন হলে এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন|

বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক বিপিএম, পিপিএম সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিপিডব্লিউএন সভাপতি ডিআইজি মিলি বিশ্বাস।

এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও ঐকান্তিক আগ্রহে বাংলাদেশ পুলিশ একটি জেন্ডার সংবেদনশীল সংগঠন হিসেবে গড়ে উঠছে। পুলিশে নারীর অবস্থান দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে। নারী পুলিশের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। নারীরা পুলিশের উচ্চ পদে আসীন হচ্ছেন।

তিনি বলেন, ফাতেমা বেগম বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। কিছুদিন পূর্বে তিনি অবসর গ্রহণ করেছেন। তিনি আমাদের গর্ব, নারী পুলিশের গর্ব। ভবিষ্যতেও পুলিশের নেতৃস্থানীয় পদে আরও অধিক সংখ্যক নারী নিযুক্ত হবেন বলে আমি অত্যন্ত আশাবাদী।

আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের নারী সদস্যরা পুলিশিংয়ের মতো চ্যালেঞ্জিং পেশায় অনবদ্য অবদান রাখছেন। তাদের কর্মকুশলতা ও পেশাদারিত্ব অত্যন্ত উঁচুমানের। নারী পুলিশ সদস্যরা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য কাজে অত্যন্ত সাফল্য প্রদর্শন করছেন। নারী পুলিশ নিয়ে গঠিত পূর্ণাঙ্গ নারী আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও উইমেন অ্যান্ড ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে কর্মরত নারীরা কর্মক্ষেত্রে দক্ষতার সাক্ষর রাখছেন। বাংলাদেশ পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার নির্যাতিত নারী ও শিশুদের একান্ত নির্ভরতা ও আশ্রয়স্থল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

অনুষ্ঠানের তারানা হালিম বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার মতো চ্যালেঞ্জিং পেশায় নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে নারী পুলিশ সদস্যরা কর্মক্ষেত্রে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করছে। পাশাপাশি তারা নিপীড়িত, নির্যাতিত, বঞ্চিত নারীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের ভরসাস্থল, আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছে। দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও নারী পুলিশ সদস্যরা দক্ষতা, যোগ্যতা ও পেশাদারিত্বের সাক্ষর রেখে বিশ্ববাসীর আকুণ্ঠ প্রশংসা অর্জন করেছে এবং দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, নারী জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করার প্রয়াসে বর্তমান সরকার জেন্ডার বৈষম্য বিলোপ, সচেতনতা বৃদ্ধি, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ, নারী ও শিশু পাচার রোধ, সাইবার ক্রাইম রোধ ইত্যাদি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের মূলধারার অংশীদার হিসেবে এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ পুলিশের নারী সদস্যগণ পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করছে।

স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, বর্তমান বিশ্বে জাতিসংঘের অন্যতম প্রাধান্যের বিষয় জেন্ডার। কর্মক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের সমান সকল কাজে পারদর্শিতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। সমাজের সকল ক্ষেত্রে নারীরা এখন গর্বের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। যার প্রমাণ বাংলাদেশের নারী পুলিশ। তারা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সাফল্যের সাথে কাজ করে বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে।

আইজিপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতায় বাংলাদেশ পুলিশে প্রথম নারী সদস্য অর্ন্তভুক্ত করা হয় ১৯৭৪ সালে। সেই সময়ে ১৪ জন নারীর যোগদানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশে নারীর যে অগ্রযাত্রা সূচিত হয়েছিল, তা আজ সাফল্য ও দক্ষতার মানদণ্ডে সুসংহত হয়েছে। শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও নারী পুলিশ সদস্যগণ সাহসিকতা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে অত্যন্ত প্রশংসনীয় ভূমিকা পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে। নারী পুলিশের কার্যক্ষেত্র আরও সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে নারী পুলিশ সদস্যদের সমম্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নারী আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও উইমেন অ্যান্ড ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ ও যুদ্ধ বির্ধ্বস্ত দেশ হাইতি ও কঙ্গোতে বাংলাদেশ পুলিশের দু’টি নারী ইউনিট জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুনাম অর্জন করছে।

সাতটি ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তরা হলেন- পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক), বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্ক (বিপিডব্লিউএন), অতিরিক্ত আইজিপি ফাতেমা বেগম, রেলওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোছা. শেহেলা পারভীন, জামালপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রওনক জাহান ও সিরাজগঞ্জ র‌্যাব-১২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস, ডিএমপির সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (খিলগাঁও জোন) নাদিয়া জুঁই, র‌্যাব সদর দপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (সরবরাহ) শাখা শামীমা আরা বেগম, ডিএমপির ট্রাফিক (উত্তর) বিভাগ শিক্ষানবিস সার্জেন্ট পান্না আক্তার, বাগেরহাট জেলার গোয়েন্দা শাখার নারী কনস্টেবল অনিমা খাঁ এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের নারী কনস্টেবল মোছা. লতা পারভীন, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কনফিডেন্সিয়াল) তাসমিয়াহ্ তাহলীল, পুলিশ স্টাফ কলেজের উপ-পরিচালক (একাডেমিক) রওশন সাদিয়া আফরোজ, ডিএমপি গোয়েন্দা (উত্তর) বিভাগের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার নিশাত রহমান মিথুন এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চের সহকারী পুলিশ সুপার শামসুন নাহার খানম, উত্তরা ৮ এপিবিএন সহকারী পুলিশ সুপার তানজিনা আক্তার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া উইমেনস সাপোর্ট সেন্টারের ইনচার্জ সহকারী পুলিশ সুপার সোনিয়া পারভীন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের নারী এসআই (নিরস্ত্র) ইয়াছমিন আরা বেগম এবং বরগুনা জেলার এসআই (নিরস্ত্র) জান্নাতুল ফেরদৌস, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (প্রশাসন) রখফার সুলতানা খানম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্র্রেনিং এন্ড স্পোর্টর্স) মাহফুজা আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রবাসী সহায়তা সেল) আসমা বেগম রিটা এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চের এসআই মোসা. মর্জিনা খাতুন।

অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ, বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের সভাপতি ডিআইজি মিলি বিশ্বাস, নারী পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যগণ এবং ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

  (ঢাকারনিউজ২৪.কম/এনএম ০৯.৪৩এএম/২১//২০১৭ইং)