• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:২৬ অপরাহ্ন

ঠাকুরগাঁওয়ের মাসুদ বিপ্লবের জাদুঘর যেন এক জীবন্ত বাস্তবতা


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১, ২০২২, ১২:০৯ PM / ১৩২
ঠাকুরগাঁওয়ের মাসুদ বিপ্লবের জাদুঘর যেন এক জীবন্ত বাস্তবতা

ফরিদুল ইসলাম রঞ্জু, ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ের মাসুদ বিপ্লব পেশায় একজন সাংবাদিক হলেও নেশা তার বাস্তব চিত্রকে ফ্রেমবন্দী করে তা মৃত ও কাঠ শিল্পর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা। সেগুলো আবার নিজস্ব সংগ্রহশালায় সংরক্ষণ করা। শহরের সরকার পাড়ায় নিরিবিলি পরিবেশে ছোট্ট পরিসরে এই জাদুঘর ও তার সাথে একটি সুন্দর বইয়ের লাইব্রেরী। শুধু মাত্র নিজ প্রচেষ্টায় এককভাবে কারও সাহায্য সহযোগিতা ছাড়াই তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন এই প্রতিষ্ঠান। দাম্পত্য জীবনে সুখি না হলেও জীবনের সকল সুখ স্বাচ্ছন্দ, বিলাশিতাকে বাদ দিয়ে সারা দিনের কর্মব্যস্ততা নিজ স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য ভাবেন কবে হবে বড় পরিসরে তার স্বপ্ন।
সমাজের কিছু মানুষের তুচ্ছতাচ্ছিল্য বাক্য,মানুষিক শারীরিক ভাবে হেও প্রতিপন্নতা তার কাজে বাঁধা হয়ে দাড়াতে পারেনি।দৃঢ় ইচ্ছায় এগিয়ে নিয়ে গেছে স্বপ্নকে।

পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সামান্য জমি আজ তাকে বড় করে আশার আলো দেখাচ্ছে।স্ত্রী,সমাজ,পরিবারের কারও এ ব্যাপারে সহযোগিতা না পেলেও ক্ষোভ নেই তার।
তার ভাষায়, একক প্রচেষ্টায় যখন সফলতা আসে এর আনন্দটাই অন্যরকম। ভাবুক মনে,মনে হয় মেঘে ঢাকা তারা।আর কবির ভাষায় যে বৃহৎ আমি তাদের মধ্যে রয়েছি তা আমাদের আত্না,দ্রষ্টা আমি-এ মুক্ত,স্বাধীন ও মৃত্যুঞ্জয়ী।
সংগঠক হিসেবে জেলায় তার নাম রয়েছে। ১৯৮৭-৮৮ সালে ক্রিকেট লীগে জেলার সেরা বোলার হিসেবে পুরস্কৃত হন।তার নিজ প্রচেষ্টায় তৈরি পৌর তরুণ প্রতিরক্ষা সংঘ ক্লাব জেলা ক্রীড়া সংস্থার ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি,আর্ট ও কারুকলা সহ নানা বিষয়ে অংশগ্রহণ করতো।হঠাৎ বিভিন্ন জায়গায় তার ক্লাবের নাম বাদ দেওয়া হয়।যার কারণ এখনো অন্তরালে। সাংবাদিকতা, সংগঠন পরিচালনা, খেলাধুলা, সমাজ সেবার পাশাপাশি শিল্পকর্ম সৃষ্টি, বইপড়া,চারু কারুকলা, কৃষ্টি সংগ্রহ তার অদম্য বাসনা বা নেশা।সাংবাদিক ও শিল্পী মাসুদ বিপ্লবের নানা অজানা কথা নান্দনিকতায় ভরা শৈল্পিক স্পর্শকতার সৃষ্টির সম্মুখে দাঁড়ালে যে কেউ রোমাঞ্চকর জগতে না গিয়ে পারবেনা।
তার চিন্তায় বাঙালিরা ভারতবর্ষ সেরা জাতি। উদ্ভাবনী শক্তি ও বিচক্ষণতার দিক দিয়ে শক্তি সঞ্চার মূল লক্ষ্য নিয়ে মাসুদ বিপ্লব ছোট বেলা থেকেই লেখাপড়ার ফাঁকে শিল্পচর্চা ও সংগ্রহশালার করে আসছেন।
গাছের প্রতি মাসুদ বিপ্লবের আরেক ভালোবাসা। গাছ কলম করা, পরিচর্যাসহ গাছ লাগানো তার আরেক শখ।নিজ বাড়ি না থাকলেও অন্যের বাড়িতে সে ফুল ও ফলের বাগান তৈরী করেছেন যা ক্ষণস্থায়ী।
২০১৪সালে বাংলাদেশের শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত দেশের তৃতীয় জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনীতে ও ২০১৫ সালে ২১তম জাতীয় চারু কারু কলা প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ সহ ভারতে অনলাইন আর্ট প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হন। তবে দেশের জাতীয় পর্যায়ে অংগ্রহণকৃত শিল্পকর্ম ফেরত না পাওয়ায় আর কোন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত রয়েছেন তিনি।
যেসব ক্ষেত্রে মাসুদ বিপ্লব তার শিল্পকর্ম প্রদর্শিত করে প্রশংসিত হয়েছে তা হলো ১৯৮৭ সালে নিজ জেলায় প্রথম একক চারু কারু কলা প্রদর্শনী, ১৯৯৩ সালে দিনাজপুর জেলায় দেশের সুনামধন্য শিল্পীদের সাথে চিত্র ও ভাস্কর্য প্রদর্শনী। শতাধিক ভাস্কর্য ও হাজার খানেক চিত্রকর্ম একেছেন তিনি।
এবিষয়ে তার কোন প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। তার কর্মকান্ডের মাধ্যমে যে কথা তুলে আনতে চান তা হলো, আজ প্রাণ খুলে বলতে চাই,আমরা বাঁচার মতো বেঁচে থাকবো।জীবনকে স্বার্থক করবো, সুন্দর করবো,উপভোগ করবো, আনন্দরসে অভিষিক্ত করবো। আমরা প্রতিভার জন্ম দিবো।জগতে ধন্য বরেণ্য হবো,শিল্পকর্ম দিয়ে সুবিধাবাদীদের সাথে জ্ঞান ও সৃষ্টি দ্বারা সংঘাত করবো এবং সুন্দর বাংলাদেশ গড়বো।