• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১০:৩৮ অপরাহ্ন

জীবনের প্রথম ভোট


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ২১, ২০১৮, ১২:১৮ AM / ৩৫
জীবনের প্রথম ভোট

সাব্বির আহমেদ : জীবনের প্রথম ভোটটি ঠিক যেন প্রথম প্রেমের মতোই স্মৃতির আঁচর কেঁটে যায় আমাদের হৃদয়ে। এ যেন এক অন্যরকম অনুভূতি যা শুধুমাত্র একজন নতুন ভোটারের পক্ষেই বোধগম্য হবে। ভোট দিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থিকে বিজয়ীর বেশে দেখতে কার না ভালো লাগে। ভোটাধিকার প্রয়োগ যেমন আমাদের অধিকার,ঠিক তেমনি ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সঠিক যোগ্য ব্যক্তিকে নির্বাচন করাটাও আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। কিন্তু বর্তমানে আমাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ শুধুমাত্র প্রদর্শনী ব্যতিরেকে আর কিছুই নয়। আমরা বর্তমানে ভোট দেওয়াটাকে অনেকেই ঝামেলার কাজ বলে অভিহিত করি। কারণটা হয়তো সভ্য সমাজের সকলেরই বোধগম্য বিষয়।

সামনে ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা। চলছে চায়ের কাপে ঝড়। সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সাধারণ জনগণের রয়েছে দারুণ কৌতূহল, সঙ্গে নানান জল্পনাকল্পনা। সাধারণ জনগণের মনে এখন কিছু প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে প্রতিনিয়তই। নির্বাচনে ভোট দেওয়ার মতো সুষ্ঠু পরিবেশ থাকবে তো? নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তাঁদের পিছিয়ে পড়া এলাকাগুলোর উন্নয়ন হবে তো? বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে তো?
হাজারো প্রশ্নের মাঝে নতুন ভোটারদের একটাই প্রত্যাশা তারা সুষ্ঠভাবে তাদের প্রথম ভোট দিতে পারবে।

নির্বাচন কমিশনের মতে বর্তমানে দেশের মোট ভোটার সংখ্যা ১০ কোটি ৪১ লক্ষ ৪২ হাজার ৩৮১ জন। যার এক চতুর্থাংশই তরুণ ভোটার। তাই নির্বাচনে সব দলেরই চোখ থাকবে তরুণ এইসব ভোটারদের দিকে। অপরপক্ষে তরুণদের চোখ থাকবে সৎ,নিষ্ঠাবান প্রার্থীর দিকে। এই নির্বাচনে তরুণ সমাজের প্রার্থনা হয়তো সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন এবং নিজের ভোট নিজে দেওয়ার সুযোগ। কারণ কোন তরুণই চাইবে না তার জীবনের প্রথম ভোট হোক অন্যকারোর মাধ্যমে।

দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ তরুণ। আর তরুণদের মধ্যে দুইটা বৈশিষ্ট্য লক্ষ্যণীয়। একটি বাস্তববাদী এবং অপরটি আবেগপ্রবণতা। বর্তমানের এই মেকি আধুনিকতার যুগে তরুণেরা শিক্ষিত হতে চায়, সৃজনশীল শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে গবেষণামনস্ক সমাজ সৃষ্টি করতে চায়। তারা চাই নেতিবাচক রাজনীতিকে ইতিবাচক রাজনীতিতে পরিণত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে। তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে দেশকে তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে বদ্ধপরিকর।তরুণেরা স্বপ্ন দেখতে যেমন ভালোবাসে ঠিক তেমনি স্বপ্ন দেখাতেও ভালোবাসে। শুধু একটু সুযোগের অভাবে বর্তমান তরুণ সমাজ আজ হতাশার রাজ্যের অধিবাসী।

তরুণেরা শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির সংমিশ্রণে একটি
নিরাপদ জীবন চায়। তারা দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও মাদকমুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চায়। সমৃদ্ধ এক বাংলাদেশ গড়ার অবিচল প্রত্যয় নিয়ে তারা আগামীর নির্ভীক সৈনিক হিসেবে কাজ করে যেতে চায়। তরুণ ভোটারেরা তাদের বিদ্যা,বুদ্ধি,বিবেকের মাধ্যমে নিজেদের পছন্দের প্রার্থী বেছে নিবে সেটাই সকলের প্রত্যাশা। কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে আমরা তরুণদের জেগে ওঠার অনন্য এক রূপ দেখেছি। একটি সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তরুণরা নির্বাচিত করবে তাদের পছন্দের যোগ্য সরকারকে। তবেই এগিয়ে যাবে তারুণ্য,এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

জীবনে যা কিছু প্রথম হয়, তার সঙ্গে কিছু না কিছু ভালোলাগা জড়িয়ে থাকে। প্রথম ভোটার হওয়াটা ঠিক তেমনিই। আর তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন ভোটারদের অঙ্গীকার হোক “আমার জীবনের প্রথম ভোট,যোগ্য প্রার্থীর পক্ষে হোক”।

লেখক : সাব্বির আহমেদ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/১২:১৫এএম/২১/১২/২০১৮ইং)