ঢাকারনিউজ২৪.কম, ঢাকা : বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়ার জামিন বার বার বাধাগ্রস্ত করছে সরকার। তিনি একের পর এক মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও আবার তা নানা কায়দায় আটকে দিচ্ছে সরকার।’
আজ ২ সেপ্টেম্বর(রোববার) বেলা সোয়া ১১টার দিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের নির্দেশেই খালেদা জিয়া কারাগারে আটকে আছেন। খালেদা জিয়া সুবিচারে নয় প্রতিহিংসামূলক সরকারি বিচারে কারাবন্দী। তার কারাবন্দীত্ব শুধুমাত্র সরকারের প্রতিহিংসার শিকারে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শনিবার রাতে বিএনপির জনসভার বক্তব্য নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আওয়ামী লীগ নয়, নির্ভর করছে আদালতের ওপর। আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়, এ ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করবে না সরকার।’ একইসঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বিএনপি সরকারের যে পদত্যাগের দাবি করেছে, তা নাকচ করে দিয়ে কাদের বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে।’
রুহুল কবির বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। জনগণ আওয়ামী লীগের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে। গতকালের জনসভায় বিপুল মানুষের সমাগমেই প্রমাণিত হয়েছে জনগণ এ সরকারকে আর চায় না।
আর নির্বাচন নিয়ে সংবিধানের দোহাই দিচ্ছেন আওয়ামী মন্ত্রীরা, অথচ সংবিধানতো পরিবর্তন করেছে তারাই। আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য ত্রয়োদশ সংশোধনী আইন বাতিলের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে। সুতরাং ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য ও সত্যের অপলাপ। সংবিধান সংশোধন করা যায়-যেমনটি ক্ষমতাসীনরা করেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কিভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে, আপনারা (ওবায়দুল কাদের) যেভাবে বাদ দিয়েছেন ঠিক সেভাবেই আবার তা সংবিধানে সংযোজন করা সম্ভব।’
ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা বলেন, ‘যতই ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা ও অপলাপ করুন না কেন আপনাদের এবার বিদায় নিতেই হবে। অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ করে সংসদ ভেঙে নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচনে সেনামোতায়েন করতে হবে। নির্বাচন নিয়ে সংবিধানের দোহাই দিয়ে কোনো গড়িমসি চলবে না। জনগণের ভোট জনগণ দিতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কোনো বিকল্প নেই।
শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন জনগণ হতে দিবে না। শেখ হাসিনা সুষ্ঠু নির্বাচনের শত্রু পক্ষ। তার অধীনে নির্বাচনের অর্থই হচ্ছে ভোটারদের ভোটাধিকার হরণ।’
এ ছাড়া ইভিএম পদ্ধতির সমালোচনায় রিজভী বলেন, ‘জালিয়াতির মেশিন ইভিএম ব্যবহার নিয়ে নীলনকশা বন্ধ করুন। পৃথিবীর অন্যান্য স্বল্প সংখ্যক দেশে যারা ইভিএম চালু করেছিল তারাও এ পদ্ধতি নিষিদ্ধ করেছে। অথচ সকল প্রতিবাদ উপেক্ষা করে কেন এ গণবিরোধী সরকার ইভিএম মেশিন দিয়ে ভোট করতে চায়, সেটি এখন জনগণ টের পেয়ে গেছে।
বাংলাদেশের ভোটারবিহীন সরকার এ মেশিন চালু করতে এতো উৎসাহী কেন তা সুস্পষ্ট। এক শুভঙ্করের ফাঁক দিয়ে তিনি বাজিমাত করতে চান। ভোট ডাকাতির বিপক্ষে ও অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের পক্ষেই বাংলাদেশের জনগণ।’
এ সময় ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার, বাড়িতে-বাড়িতে হানা ও কর্মসূচী স্থলে আসার পথে ব্যাপকভাবে বাধা দিয়েছে অভিযোগ করে অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানান রুহুল কবির।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/৬:৩৬পিএম/২/৯/২০১৮ইং)
আপনার মতামত লিখুন :