• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৫:৩৫ অপরাহ্ন

ক্যাম্পাস দখলের নীল নকশা শিবিরের


প্রকাশের সময় : মার্চ ২০, ২০১৭, ১১:২৪ AM / ৪৯
ক্যাম্পাস দখলের নীল নকশা শিবিরের

ঢাকারনিউজ২৪.কম:

বর্তমানে নানা ধরনের নাশকতায় জড়িত ইসলামী ছাত্র শিবির। আবারও নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। এজন্য তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিভিন্ন কোচিং সেন্টারগুলোকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ইচ্ছুক গরীব ছাত্র-ছাত্রীরাদের টার্গেট করেছে তারা। আর তাদের কোচিংয়ে ভর্তি হওয়াদের মধ্য থেকে বেছে বেছে নিজেদের কর্মী তৈরি করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দখল নেয়ার নীল নকশা তৈরি করেছে সংগঠনটি।

রেটিনা, ফোকাস, শুভেচ্ছাসহ শিবির নিয়ন্ত্রিত কোচিং সেন্টারগুলোতে নবাগতদের দলে টানছে তারা। পরে এরাই বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে শিবির ক্যাডার হিসেবে মূল সংগঠনের কর্মী হিসেবে কাজ করবে বলে জানিয়েছে বিশ্বস্ত সূত্র। নাশকতায় জড়িত শিবির ক্যাডাররা সরকার বিরোধী কাজে জড়িত হয়ে পড়ায় পুলিশ নজরদারিতে রয়েছে। তাই আইন আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর চোখ এড়াতে নতুনদের দলে টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব।

কোচিংয়ে ভর্তি হওয়া গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের দলে নেয়ার জন্য বিভিন্ন কৌশল রয়েছে তাদের। এর মধ্যে কোচিংয়ে বিনা টাকায় ভর্তি, থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা, বেশি গরীব হলে টিউশনির বন্দোবস্ত, বই কিনে দেয়াসহ আরও নানা রকম আর্থিক সুবিধা দিয়ে থাকে শিবির। এতে আকৃষ্ট হয়ে কোচিং সেন্টারে আসা গরীব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা এক সময়ে দুর্বল হয়ে নিজের অজান্তেই জড়িয়ে পড়ে শিবিরের অপরাধমূলক কার্যক্রমে।

তবে শুরুতে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে না পারলেও সংগঠনটির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার টার্গেট করেছে তারা। এজন্য তারা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোচিং সেন্টারগুলো।

এই দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে নিজেদের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত ছিল। তবে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তা ধসে পড়ে। ফের সেই ঘাটি গড়ে তুলতে চায় শিবির। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও প্রভাব বিস্তারের পরিকল্পনা রয়েছে শিবির নেতাদের।

পরিকল্পনা অনুযায়ী এরই মধ্যে রাজশাহী ও চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নতুন নতুন শিবির ক্যাডারদের ছদ্মবেশে নানা আসাইনমেন্টে প্রেরণ করা হচ্ছে।। শিবির পরিচালিত বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে তারা নীল নকশা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের আমলে কোনঠাসা শিবির আত্মগোপনে থাকলেও তাদের কর্মকান্ড থেমে থাকেনি। আত্মগোপনে থাকার পরও তারা তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। সরকার বিরোধী নানা কর্মকান্ডেও তারা সরব উপস্থিতি দেখিয়েছে। শিবির বিরোধী পুলিশ কঠোর অবস্থানে থাকলেও গা বাঁচিয়ে তারা ঠিক নিজেদের সংগঠিত করছে। এ লক্ষে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গোপন সভা সমাবেশও করছে।

সূত্র আরো  জানায়, সম্প্রতি শিবিরের প্রথম সারির কয়েক নেতা রাজশাহী ও চট্রগ্রামে যান। খুবই গোপনীয়তায় তারা সেখানকার স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে মিলিত হন। ক্যাম্পাসে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে নানা পরিকল্পনাও করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের অবস্থান আরো দৃঢ় করার সিদ্ধান্ত হয়। আর সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রাথমিকভাবে রাজশাহী ও চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের আয়ত্বে আনতে তারা কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ক্যাম্পাস দুটোতে শিবিরের প্রাথমিক সদস্যদের ক্যাম্পাসে অবস্থান করা। ক্যাম্পাসের খবরাখবর সার্বক্ষণিক নেতাদের সরবরাহ করা। সুযোগ ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণ দেয়া।

বিভিন্ন সূত্র পাওয়া তথ্যে জানা যায়, শিবির তাদের পরিচালিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং জামায়াত শিবির ভাবাপন্ন অনেক নেতাকর্মীর বাসায় মাঝে মধ্যেই গোপন মিটিং করে। আর ওই মিটিংগুলো থেকে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিচ্ছে। সম্প্রতি শিবির ক্যাডাররা রাজশাহী ও চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক নিজেদের কয়েকটি কোচিং সেন্টারে গোপন মিটিং করে। ওইসব মিটিংয়েই নীল নকশা অনুযায়ী ধাপে ধাপে ক্যাম্পাস দখলের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব বন্টন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে গোয়েন্দা বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, শিবির কর্মকান্ড তারা পর্যবেক্ষণ করে আসছেন। বর্তমানে তারা প্রকাশ্য না আসলেও গোপনে কিছু পরিকল্পনার কথাও জানতে পেরেছেন। আর এ পরিকল্পনার কথা ভেবে পুলিশ নজরদারিও বাড়িয়েছে।এ নজরদারির কারণে সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জামায়াতের নারী শাখার ২৮ জনকে একসঙ্গে সরকার বিরোধী গোপন মিটিং থেকে আটক করা হয়।

কর্মকর্তারা জানান, শিবিরের যে কোন দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড রুখে দিতে তারা কাজ করছেন।

  (ঢাকারনিউজ২৪.কম/এনএম /১২.২৫এম/১৯//২০১৭ইং)