• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন

আদালত ও ট্রাম্প মুখোমুখি


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ৬, ২০১৭, ১০:৫৯ AM / ৩৫
আদালত ও ট্রাম্প মুখোমুখি

 

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : সাতটি মুসলিম দেশ থেকে নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশ স্থগিত করে দেওয়া আদালতের রায়কে দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে পুনরায় বহাল রাখার অনুরোধ রাখেনি আদালত। এ নিয়ে আপিল করেছে ট্রাম্প প্রসাশন। সেই আপিলের শুনানি হবে সোমবার। সোমবার সন্ধ্য ৬টার মধ্যে, ওই আদালতে এটার বিষয়ে শুনানিতে ট্রাম্প প্রশাসন জয়লাভ না করলে সেটা চলে যাবে দীর্ঘমেয়াদি এক আইনি জটিলতায়। তাই যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিকদের অবাধ প্রবেশে সোমবারের শুনানি একটা বড় পদক্ষেপ রাখতে যাচ্ছে, যেটা নিয়ে এরই মধ্যে একটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প আর তার নির্বাহী আদেশ। এদিকে, ট্রাভেল ব্যান উঠিয়ে দেওয়ার আদালতের সিদ্ধান্তের কারণে মানুষ নির্বিঘ্নে প্রবেশ করতে পারছে যুক্তরাষ্ট্রে। যেটার পরিপ্রেক্ষিতে সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সর্বশেষ প্রতিক্রিয়ায়।
রোববার দুপুরের দিকে ইরাকে ফেরত পাঠানো ফুয়াদ শরীফ নামের একজন তার পরিবার নিয়ে ফিরে আসেন জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে। কেন তাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে সেটা তিনি জানতেন। তবে কেন তাকে আবার দূতাবাস থেকে ফোন করে যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সেটার বিষয় বেশি কিছু জানার চেষ্টা করেননি। ফোন পেয়েই নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন সপরিবারে।
‘আমি জানি না কী হচ্ছে, তবে দূতাবাস থেকে ফোন দিয়ে আমার কাছে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে তার কোনো বাধা নেই, তাই আমি আর দেরি করিনি, চলে এসেছি। এবং এখানে কেউ আমাকে কোনো বাড়তি প্রশ্ন করেনি। ভালো লাগছে’ – সাংবাদিকদের বলছিলেন ফুয়াদ শরীফ।
এভাবে আরো অনেকেই ফিরে আসছেন যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছিল বিমানবন্দর থেকে, অথবা বৈধ ভিসা থাকতেই ইলেক্ট্রোনিক্যালি সেটা বাতিল করা হয়েছিল। প্রায় এক লাখ ভিসা বাতিল হয়েছিল যাদের বেশির ভাগকে আবার ভিসা বহাল করে দেওয়া হয়েছে। আর বিমানবন্দরে যারা আসছেন, তাদের কোনো ভোগান্তি হচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন তারা।
এই হঠাৎ পরিবর্তনের কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালত বাতিল স্থগিত করে দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ। সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের আমলে নিয়োগ পাওয়া ফেডারেলের একজন বিচারপতি জেমস রবার্ট ওয়াশিংটন স্টেট-এ দায়ের করা মামলার কারণে ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশ স্থগিত করে দেওয়ার পর নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ট্রাম্প প্রসাশন আবারো সেটা বহাল রাখার অনুরোধ করলেও আদালত সেটা শোনেনি। রেগে গিয়ে ট্রাম্প টুইট করেছেন, ‘আদালতের একটা বাজে সিদ্ধান্তের কারণে সাম্ভাব্য সন্ত্রাসীরো এখন দলে দলে দেশের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ছে।’
’একজন কথিত বিচারকের (সো-কলড) রায়ে নির্বাহী আদেশ স্থগিত করা হয়েছে এবং আমাদের আইনশৃঙ্খলাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এখন দেশে কোনো হামলা হলে ওই বিচারকই দায়ী’- টুইট করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই টুইট বার্তা নিয়েও কথা হচ্ছে যে ট্রাম্প হয়তো আদালত অবমাননার মামলায় পড়ে যেতে পারেন এই মন্তব্যের পর।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কট্টর সমর্থক এবং তার নীতির প্রশংসাকারী নিউজার্সির গভর্নর ক্রিস ক্রিস্টি বলছেন, প্রেসিডেন্ট নিশ্চয়ই মুসলিমদের মনে আঘাত দেওয়ার জন্য এই ট্রাভেল ব্যান নির্বাহী আদেশ জারি করেননি। তিনি নির্বাহী আদেশের দোষত্রুটি না ধরে, এই বিপর্যয়ের জন্য নির্বাহী আদেশটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় ঘোষণা করা হয়নি বলে মন্তব্য করেন সিবিএস-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে।
‘প্রেসিডেন্ট প্রথমে মুসলিম প্রবেশ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত থেকে মাত্র ৭টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশ বন্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এটা একটা বড় অগ্রগতি। কেননা, এই ৭টি দেশের নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশেই তাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেই। এ কারণে নির্বাহী আদেশটিকে নয়, বরং যে প্রক্রিয়ায় নির্বাহী আদেশ জারি করা হয়েছে সেট নিয়ে সমস্যা আছে বলেই আদালত সুযোগ পেল এটা স্থগিত করে দিতে’, বলছিলেন ক্রিস ক্রিস্টি সিএনএন-এর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের স্থগিতাদেশ নিয়ে আবারো শুনানি হবে সোমবার বিকেলে। আদালতের এই আদেশে আবার যে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয় ফিরে পাবেন তেমন সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না। তাই এই রায় নিয়ে সন্তুষ্টির সঙ্গে সঙ্গে ক্ষোভ আর সংশয় প্রকাশ করেছেন ওয়াশিংটন ডিসির প্রতিবাদকারীরা।
ক্ষমতা নেওয়ার পর প্রথম ১০ দিনে যতো নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার বিরুদ্ধে প্রায় এক হাজার মামলা হয়েছে দেশজুড়ে।যার কোনো একটিতে নিশ্চিত আইনি প্যাঁচে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে নতুন সরকারকে। এই স্থগিতাদেশ বলছে, সামনের দিনগুলোতে ট্রাম্পের এমন অনেক কিছইু তুড়িতে উড়ে যাওয়ার পথ প্রশস্ত হয়েছে।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১০:৫৭এএম/৬/২/২০১৭ইং)