• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৯:০৫ পূর্বাহ্ন

সৌদিতে বাংলাদেশি শ্রমিক ক্রমেই চাকরিহারা হয়ে দেশে ফিরতে হচ্ছে?


প্রকাশের সময় : জুলাই ২৫, ২০১৯, ২:৩০ PM / ১০৭
সৌদিতে বাংলাদেশি শ্রমিক ক্রমেই চাকরিহারা হয়ে দেশে ফিরতে হচ্ছে?

 
সবুজ আহমেদ : সৌদি আরব বাংলাদেশের জন্য রেমিট্যান্সের সবচেয়ে বড় খাত।সরকারি,বেসরকারি হিসাবে প্রায় ৩৫ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশী দেশটিতে বসবাস করে।শ্রমজীবী শ্রমিকদের বড় অংশ ধর্মীয় অনুভূতি আর নিরাপত্তার কথা ভেবে কাজের জন্য দেশটিকে বেচে নেয়।বর্তমানে শ্রমিকদের নানা সমস্যায় রেমিট্যান্সের সর্ববৃহৎ এ উৎসটি ক্রমেই অসহনীয় হয়ে উঠছে।পেশা জটিলতা পড়ে শ্রমিকদের চাকরি হারাতে হচ্ছে।সৌদি সরকারের ঘোষণা মতে কোম্পানিগুলোতে কাজের ক্ষেত্রে বড় এবং ভালো পদে অতিমাত্রায় সৌদিকরণের ফলে দেশটিতে কাজের সুযোগ কমছে। ফলে চাকরি খুঁইয়ে,হতাশ হয়ে কখনো নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছে।

সৌদি শ্রম মন্ত্রনালয় থেকে জানা গেছে,কিছু কর্মে শতভাগ সৌদিকরণের অংশ হিসেবে অনেকগুলো পেশায় বিদেশীকর্মী নিয়োগ পুরোপুরি বন্দ রেখেছে দেশটি।যেসব শ্রমিক সৌদি সরকার কর্তৃক বেধে দেয়া পেশায় কর্ম করা নিষিদ্ধ কিন্তু আগে থেকে সেসব পেশায় কর্মরত আছেন, পেশা পরিবর্তন না করলে সেসব শ্রমিকদের কাজের অনুমতিপত্র(ইকামা) নবায়ন হচ্ছে না।তারিফলশ্রুতিতে দীর্ঘ দিনের চাকরি যেমন হাতছাড়া হচ্ছে আবার বৈধ কাগজপত্র না হওয়ার ফলে দুর্বিসহ জীবনের গ্লানি বহন করছে।আইনি জটিলতার মারপ্যাঁচে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে জেলও খাটতে হচ্ছে তাদের।অনেকে অবৈধ পথ বেচে নিয়ে কর্মের খোঁজে চেষ্টারত আছে কেউবা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে কারাভোগ শেষে কপিল,কোম্পানি বা বাংলাদেশ দূতাবাসের আউটপাস নিয়ে দেশে চলে আসছে।সৌদি কর্তৃপক্ষ বৈধ কাগজপত্র না থাকার অজুহাতে এভাবে বহু প্রবাসী শ্রমিককে দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে।

সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস বলছে,সৌদি আরবে অবস্থানকারী বাংলাদেশী শ্রমিকদের আকামায় যে পেশা ও নিয়োগদাতার নাম উল্লেখ করা আছে, সেখানে কাজ না করে অন্য স্থানে বা অন্য কোনো পেশায় কাজ করছে এমন প্রবাসী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে সৌদি সরকার।আর এর অংশ হিসেবে আইন লঙ্ঘনকারী শ্রমিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।যদিও দেশে আসার পর অনেক শ্রমিক বলছেন তাদের কাছে বসবাসের অনুমতিপত্র বৈধ ইকামার মেয়াদ এখনো আছে।

এভাবে গত আড়াই বছর ধরে অবৈধ বিবেচনায় ৭০ হাজার ২৮ জন প্রবাসী বাংলাদেশীকে আউটপাস দিয়ে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে দূতাবাস। এর মধ্যে চলতি বছরের জুনের ২০ তারিখ পর্যন্ত আউটপাস ইস্যু হয়েছে ১১ হাজার ২২২ জনের।

অভিবাসন নিয়ে কাজ করা (ব্র্যাক) সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় ,দূতাবাসের আউটপাস নিয়ে ফিরে আসাদের বড় অংশই সৌদি আরব ছেড়েছেন নিজ পেশায় টিকতে না পেরে। মূলত চাকরিতে সৌদিকরণের ফলে দেশটিতে প্রবাসীদের কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে পড়েছে। যার কারণে বৈধভাবে বা অবৈধ হয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন।

বাংলাদেশ দূতাবাস রিয়াদ সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরবে নিজ দেশের নাগরিকদের বেকার সমস্যা সমাধানে সরকারি ও বেসরকারি খাতে বেশকিছু পেশা শুধু সৌদি নাগরিকদের জন্য সংরক্ষিত রেখেছে। এ কারণে এসব পেশায় কর্মরত বৈধ প্রবাসী শ্রমিকদেরও আকামা নবায়ন করা হচ্ছে না। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে থাকা বৈধ প্রবাসীরাও অবৈধ হয়ে দেশে ফিরতে হচ্ছে।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/কেএস/০২:৩০পিএম/২৫/৭/২০১৯ইং)