• ঢাকা
  • শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ০২:৫২ পূর্বাহ্ন

সোনারগাঁওয়ে ‘মেঘনা ফ্রেশ গেস্ট হাউস’র নামে দেহ ব্যবসা, নিরব প্রশাসন


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ২৯, ২০২২, ১১:১৬ PM / ১১৮
সোনারগাঁওয়ে ‘মেঘনা ফ্রেশ গেস্ট হাউস’র নামে দেহ ব্যবসা, নিরব প্রশাসন

উজ্জল হোসেন মাসুম, সোনারগাঁও প্রতিনিধি : বাইরে সাইনবোর্ডে লেখা ‘মেঘনা ফ্রেশ গেস্ট হাউস’, ভেতরে রমরমা দেহ ব্যবসা। মজার বিষয় হলো বাইরে লেখা ‘মেঘনা ফ্রেশ গেস্ট হাউস’, কাউন্টারে লেখা হোটেলের নাম ‘মীম আবাসিক” হোটেল’।

জানা গেছে, হোটেলের নামটি আগে ‘মীম আবাসিক’ই ছিল। স্থানীয়দের সহায়তায় ডিবি পুলিশ হোটেলটি বন্ধ করে দিয়েছিল অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে। এর কিছুদিন পর বাইরে হোটেলের সাইনবোর্ড পরিবর্তন করে আবার চলছে একই কার্যকলাপ। নাম পরিবর্তন হলেও স্বভাব পরিবর্তন হয়নি।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তাজু মোল্লা ভবন ২য় তলায় চলে এ অসামাজিক কার্যকলাপ।

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে তথ্য সংগ্রহের জন্য আমেনা সুপারমার্কেট তাজিমুল্লা ভবন দ্বিতীয় তলায় মেঘনা ফ্রেশ গেস্ট হাউসে গেলে দেখা যায় একজন লোক রিসিপশনের জন্য কেচি গেটের পাশে বসা। তাকে হোটেলের মালিক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে ‘মালিক দিয়ে কি করবেন আমাকে বলেন’, এমন অসাধু আচরণ করা শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যে এক লোক এসে বলে আমি ম্যানেজার যা কিছু বলার আমাকেই বলেন। তার নাম জিজ্ঞেস করলে সে জানায় তার নাম ‘জহির ভাই’। তিনি আরও বলেন- ‘আপনারা মাসের শেষে আসবেন এখন কেন আসছেন? আমরা মাত্র দু’টো মেয়ে দিয়ে এখানে ব্যবসা করি। সারাদিনে মাত্র একটা কাজ হইছে। এরপর ম্যানেজার জহির তার বড় ভাই জয়কে ফোনে ধরিয়ে দেয়। তিনি মোবাইলে নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দেওয়া শুরু করে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গেস্ট হাউসের নীচতলায় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আর দোতলায় আবাসিক হোটেলের আড়ালে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা। এ নিয়ে ভীষণ বিরক্ত নীচতলার ব্যবসায়ীরা। হোটেলের এমন কার্যক্রম সম্পর্কে সবাই জানেন। তারপরও বন্ধ হয় না রহস্যজনক কারণে। অভিযোগ সবাইকে ‘ম্যানেজ’ করেই চলে এ কারবার।

সচেতন মহলের চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য বতর্মানে নাম পরিবর্তন করে হোটেল মালিক মোঃ জয় মিয়া মেঘনা ফ্রেশ গেষ্ট হাউজ নাম দিয়ে অবাধে দেহ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই প্রতিদিন এখানে চলছে অসামাজিক কার্যকালাপ, মাদক ও দেহ ব্যবসা। প্রতিদিন বাইরে থেকে বিভিন্ন বয়সের নারী এনে মেঘনা ফ্রেশ বোডিংটিতে চলে অবৈধ দেহ ব্যবসা। এছাড়া দেহ ব্যবসার অন্তরালে চলে রাতভর জুয়া ও মাদক সেবন।

তবে থানা পুলিশের নাকের ডগায় এই অসামাজি কার্যকলাপ চলছে প্রকাশ্যে, নেই কোন প্রতিকার। এ ব্যাপারে সোনারগাঁওয়ের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কোন ধরনের পদক্ষেপ নেই বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর।

হোটেল ভবনের নীচতলার এক ব্যবসায়ী এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘আমার এই সামনে দিয়েই হোটেলের সবাই চলাচল করে। খুব ঘৃণা লাগে। এসবের প্রতিবাদ করে লাভ নাই। প্রতিবাদ করলে আমরা ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আমাদের উপর আক্রমণ হবে। হোটেলের মালিক ও জায়গার মালিক তারা খারাপ প্রকৃতির মানুষ। নিরাপত্তার ভয়ে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতেও পারছিনা। হোটেলটিতে প্রশাসন অনেকবার অভিযান চালালেও পরবর্তীতে সেই আগের মত কার্যক্রম চলে। বোঝাই যাচ্ছে বারবার অভিযান চললেও এই কার্যক্রম যখন চলে প্রশাসনকে হাত করে এ অসামাজিক কার্যক্রম চালায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হোটেলে সকালে আসলে বিকালে আবার যা ছিল তাই। এরা মাফিয়া না হলে এভাবে এসব চালাতে পারে?’

এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার নব যোগদানকৃত অফিসার ইনচার্জ (ওসি )মাহাবুব আলম এর সাথে গত (৩ নভেম্বর) সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি হোটেলের ঠিকানা নোট করেন ও বিষয়টি দেখছেন বলে জানান।