• ঢাকা
  • সোমবার, ২৭ মে ২০২৪, ০৫:০৬ অপরাহ্ন

শূকরের মাথাও পেয়েছিল আল-নূর মসজিদ!


প্রকাশের সময় : মার্চ ১৯, ২০১৯, ১১:৪১ AM / ৩৯
শূকরের মাথাও পেয়েছিল আল-নূর মসজিদ!

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল-নূর মসজিদে ভয়াবহ হামলার শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ব।

গত ১৫ মার্চ অস্ট্রেলীয় বন্দুকধারী ব্রেনটন টারান্ট মসজিদে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালালে ৫০ মুসলিম নিহত ও ৪৮ জন আহত হন।

উগ্রপন্থী টারান্ট মাথায় ওয়েবক্যামেরা বসিয়ে সেই হামলার ঘটনা সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রচার করে। ভিডিওটি দেখে রীতিমত হতভম্ব হয়ে গেছে গোটা বিশ্ব।

সোশ্যাল মিডিয়াকেও ওই ভিডিও সরাতে হিমশিম খেতে হয়েছে। হামলা পরবর্তী চুলচেরা বিশ্লেষণের মধ্যেই নিউজিল্যান্ডে আরেকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

যেখানে দেখা গেছে, ক্রাইস্টচার্চের এই আল-নূর মসজিদেই ২০১৬ সালে শূকরের মাথা পাঠানো হয়েছিল। ইসলাম ধর্মে শূকরের মাংস মুসলিমদের জন্য খাওয়া হারাম।

বাক্সে করে শূকরের মাথাটি মসজিদে দিয়ে এক ব্যক্তিকে হিটলার-স্যালুট দিতে দেখা যায়। তিনি নিজেকে নাৎসির অনুসারি ভেবে গর্ববোধও করেন।

ভিডিওটি স্থানীয় ২০টি শক্তিশালী নব্য-নাৎসি সমর্থকরা ব্যাপকভাবে অনলাইনে শেয়ার করে। ব্যবসায়ী ফিলিপ নেভিল আর্পস ২০১৬ সালের মার্চে আল-নূর মসজিদে মুসলিমদের জন্য অশুচিকর শূকরের মাংস পাঠিয়েছিলেন।

নতুন করে ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর ফিলিপ নেভিল জানিয়েছেন, ওই সময়ে ক্রাইস্টচার্চের জেলা আদালত তাকে ৮শ’ ডলার জরিমানা করেছিল।

নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের হাতে ভিডিওটি থাকলেও তারা এটি প্রচার করতে অনিচ্ছুক বলে খবরে উল্লেখ করেছে।

আদালত ওই সময়ে ফিলিপের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘এটি ইচ্ছেকৃত আক্রমণ, মুসলিমদের বিরুদ্ধে রীতিমতো অপরাধ।’

জবাবে ফিলিপ বলেছিলেন, ‘অবশ্যই বিচারক আমার সম্পর্কে খুব ভাল করে জানেন।’

আদালতে তিনি গর্ব করেই বলেছিলেন, ‘শ্বেতাঙ্গরাই আমার শক্তি, আমার বন্ধু, আমার পরিবার। এরা পৃথিবী থেকে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।’

ফিলিপ জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে তিনি দুই সহযোগীকে নিয়ে আল-নূর মসজিদে গিয়েছিলেন। তারা ক্যামেরা হাতে মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে ছিল। আর ফিলিপ সেদিকে তাকিয়ে হিটলার স্যালুট দেন।

গত ১৫ মার্চ হামলার দিনই ফেসবুকে ‘বোরকা নিষিদ্ধ’ নামে একটি ক্যাম্পেইন চালু হয়। ফিলিপ নেভিল তাতে ‘অসাধারণ’ মন্তব্য করেন।

আর হামলার পর নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড ফিলিপ নেভিলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি হামলাকারী ব্রেনটন টারান্টের কার্যক্রমকে ‘দেশপ্রেম’ বলে উল্লেখ করেন।

টারান্ডের বিরুদ্ধে হত্যা নয়, রাজনৈতিক কারণে ‘প্রস্রাব’ করার অভিযোগ গঠন করা হয়েছে বলেও বিষোদগার করেন এই কট্টরবাদী।

নিউজিল্যান্ডের ম্যাসি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক পল স্পুনি বলেছেন, ২০১৬ সালের মার্চের ঘটনায় সতর্ক হলে হয়তো ক্রাইস্টচার্চে গত ১৫ মার্চের হত্যাযজ্ঞ এড়ানো যেতো।

তিনি বলেন, ‘শ্বেতাঙ্গ সুপ্রিমেসিস্টরা কয়েক দশকের উপরে নিউজিল্যান্ডে সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু, বিগত দুই দশকে তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে মুসলিমদের বিরুদ্ধে খ্রিস্টানদের উস্কে দিতে সক্ষম হয়েছে।’

পল স্পুনি এসব উগ্রপন্থা রুখতে নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১১:৪১এএম/১৯/৩/২০১৯ইং)