• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৪ অপরাহ্ন

ভেস্তে যেতে পারে ভারত ও পাকিস্তানের সংলাপ প্রক্রিয়া


প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১৩, ২০১৭, ১:০৪ PM / ৩৩
ভেস্তে যেতে পারে ভারত ও পাকিস্তানের সংলাপ প্রক্রিয়া

ঢাকারনিউজ২৪.কম:

ভারতীয় ‘গুপ্তচর’ কুলভূষণ যাদবকে পাকিস্তানের আদালতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিষয়টি দুই দেশের সংলাপ প্রক্রিয়াকে ভেস্তে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ এ রকম ধারণা করছেন। তাঁদের মতে, এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানকে বিশ্ব পরিমণ্ডল থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রয়াস নিয়ে নয়াদিল্লিকে ‘কড়া বার্তা’ দিতে চাইছে ইসলামাবাদ।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া ব্যুরোর সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও লেখক আলিসা আয়ার্স বলেন, ‘হাইকমিশনকে কিছু করতে না দেওয়া এবং কোর্ট মার্শালকে ঘিরে গোপনীয়তাসহ কুলভূষণ যাদবকে নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ছাড়াও যা আমাকে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা দিয়েছে তা হলো মুম্বাই হামলাকারীদের নিয়ে রায় যেভাবে বারবার মুলতবি করা হয়েছে, সেই তুলনায় খুব তড়িঘড়ি করে এ বিচার হলো।’
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের (সিএফআর) ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ে কাজ করা জ্যেষ্ঠ এই কর্মকর্তা স্মরণ করিয়ে দেন, মুম্বাই হামলার মামলায় টানা প্রায় ৯ বছর কোনো ধরনের অগ্রগতি হয়নি।
ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক আরেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আটলান্টিক কাউন্সিলের সাউথ এশিয়া সেন্টারের পরিচালক ভারত গোপালাস্বামী বলেন, তাঁর কাছে মনে হয়েছে, সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের আগ্রাসী কূটনৈতিক অবস্থানের পাল্টা জবাব দিতে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে’ কুলভূষণ যাদবের মামলার রায় দেওয়া হয়েছে।
খ্যাতনামা উড্রো উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া উপপরিচালক মিশেল কুগলম্যান বলেন, এই পুরো ঘটনা রহস্য ও অনিশ্চয়তায় ঘেরা। কিন্তু এটা পরিষ্কার যে পাকিস্তান ভারতকে একটা শক্ত বার্তা দিতে চাইছে। তা হতে পারে পাকিস্তানে অযাচিত হস্তক্ষেপের ব্যাপারে ভারতকে সতর্ক করা অথবা বিশ্ব পরিমণ্ডল থেকে দেশটিকে বিচ্ছিন্ন করার ভারতীয় প্রয়াসের বিরুদ্ধে বড়সড় একটা ধাক্কা দেওয়া।
কুলভূষণ যাদবের ফাঁসি না হওয়া নিশ্চিত করতে ভারত মরিয়া হয়ে পড়েছে—এ কথা উল্লেখ করে মিশেল কুগলম্যান আরও বলেন, এর একটা সুযোগ পাকিস্তান নিতে পারে। ভারতের কাছ থেকে বড় কিছু ছাড় আদায় করে নিতে কুলভূষণকে ‘ট্রাম্প কার্ড’ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে ইসলামাবাদ।
মিশেল কুগলম্যানের মতে, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক ‘লাইফ সাপোর্টে’ রয়েছে। কাজেই আবার সংলাপের আশু কোনো সম্ভাবনা এ মুহূর্তে নেই।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের একটি সামরিক আদালত গত সোমবার ভারতীয় নাগরিক ও নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কুলভূষণ যাদবকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেন। গত বছর তাঁকে বেলুচিস্তান থেকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষ।
যাদবের মৃত্যৃদণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এ নিয়ে আর অগ্রসর হলে সম্পর্কে প্রভাব পড়বে।
এদিকে পাকিস্তানের ডন পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ জানিয়েছেন, দোষী সাব্যস্ত ও দণ্ডিত ভারতীয় ‘গুপ্তচরের’ মৃত্যুদণ্ড শিগগিরই কার্যকর করা হচ্ছে না। প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ সিনেটে গত মঙ্গলবার বলেছেন, কুলভূষণ যাদবের পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও সেনাপ্রধানের কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

 

  (ঢাকারনিউজ২৪.কম/এনএম /০১.০৩ পিএম/১৩//২০১৭ইং)