• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪, ০৪:৩৯ অপরাহ্ন

বাগাতিপাড়ায় সেই আনুরা বেগমকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলেন ৪ বন্ধু


প্রকাশের সময় : মার্চ ১৭, ২০২০, ৩:২৮ PM / ২৯
বাগাতিপাড়ায় সেই আনুরা বেগমকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলেন ৪ বন্ধু

ফজলে রাব্বি, বাগাতিপাড়া(নাটোর)প্রতিনিধি : নাটোরের বাগাতিপাড়ায় মানবেতর জীবন যাপনকারী অসহায় আনুরা বেগমকে (৬০) সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলেন চার বন্ধু। গত সপ্তাহে অসহায় আনুরা বেগমের মানবেতর জীবন যাপনের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হয়। সেই খবরটি দৃষ্টি গোচর হয় উপজেলার চার বন্ধু আরিফুর রহমান কনক, প্রভাষক অনুপ কুমার রায়( চন্দন), আল মামুন এবং সেলিম রেজার। পরবর্তিতে সোমবার সকালে তারা কিছু খাবার ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে হাজির হন তার বাড়িতে। যাতে ১০ কেজি চাল, ডাল, মসলা, চিনি, সয়াবিন তেল, সরিষার তেল, লবন, আলু, সাবান, মরিচ, দেশলাই এবং ডিম ছিল।
এই বিষয়ে আরিফুর রহমান কনক বলেন, শুধুমাত্র মানবিক এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমাদের এই ছোট্ট প্রয়াস। মানুষের সেবায় আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য মানুষের পাশে দাঁড়ানো। আর পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়া আমরা এই পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারবো না। তারই অংশ হিসেবে, ২০১৮ সালে “মাদককে না বলুন, জ্ঞান নির্ভর সমাজ গড়–ন” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মোট ১০১৩ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে মানুষকে মাদকের বিরুদ্ধে সচেতন করেছিলাম। তিনি আরো জানান, শুধুমাত্র ঔষধ ও তিন বেলা খাবারের ব্যবস্থা হলেও বাকী জীবনটা সুন্দর ভাবে কাটাতে পারতো আনুরা বেগম।
উল্লেখ্য, আনুরা বেগম উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের দেবনগর গ্রামের মৃত. ময়েন উদ্দিনের মেয়ে। বাবার মৃত্যুর পর ৩৫ বছর ধরে একাকি বাস করছেন তিনি। রক্তের সম্পর্কের কেউ বেঁচে নেই। কর্মক্ষমতাহীন বৃদ্ধ এই নারীর দিন চলে অর্ধাহারে অনাহারে। সম্মানহাণীর ভয়ে ভিক্ষাও করেন না। জীবনের প্রথম সংসার এক মাসের মাথায় ভেঙ্গে যাওয়ায় অভিমানে দ্বিতীয় বিয়েও করেননি। এখন জীবন যুদ্ধে আর পেরে উঠছেন না। উপার্জন নেই, নেই খাবার কেনার অর্থ, রাতে প্রদীপ জ্বালানোর তেল কেনারও টাকা নেই। তাই ৩৫বছর ধরে অন্ধকারেই বসবাস আনূরা বেগমের। আজ পর্যন্ত স্বামী পরিত্যক্তা-বিধবা ভাতা জোটেনি তার কপালে। ছোট্ট ঝুপড়ি ঘরের বাড়িতে নেই কোন খাবার পানির ব্যবস্থা, নেই টয়লেট সুবিধা। এমনকি রাতের বেলায় আলো জ্বালেনা। এভাবে অন্ধকার ঘরে সাপ-পোকা মাকড়ের ভয়ের মধ্যেই রাত কাটে আনূরা বেগমের। বাড়িতে প্রবেশের রাস্তাটিও খুবই সরু। পাশের জমির মালিক বেড়া দেয়ায় স্বাভাবিক ভাবে হেঁটে যাওয়া যায়না। অপ্রতুল খাবার, কঠোর পরিশ্রম, ও ক্লান্ত- শ্রান্ত শরীরটা নিয়ে কোন রকমে দিনে দুই-একবার খেয়ে না খেয়ে জীবন অতিবাহিত করছেন তিনি।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/৩:২৭পিএম/১৭/৩/২০২০ইং)