• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৫ অপরাহ্ন

পলাশবাড়ীতে পেঁপে ফলনে স্বাবলম্বী চাষী আমিরজল


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২, ৬:৩৬ PM / ৫৬
পলাশবাড়ীতে পেঁপে ফলনে স্বাবলম্বী চাষী আমিরজল

আরিফ উদ্দিন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গ্রামীণ আবহে জন্ম নেয়া থেকেই বেড়ে উঠা একজন মানুষ আমিরজল। তিনি ব্যবসার পাশাপাশি সবসময় নিজের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে কিছু সাফল্যের চেষ্টা করেছেন। আত্মনির্ভরশীল হওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। মুলতঃ পৈত্রিক জমি আঁকড়েই সাবলম্বী হতে চেয়েছিলেন তিনি। এমন প্রত্যাশা থেকেই কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেন। বিভিন্ন সময় জমিতে বিভিন্ন ফসল ফলিয়ে ভাগ্যের চাকা সচল করার চেষ্টা করেন তিনি।

এরই ধারাবাহিকতায় গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌরশহরের ছোট শিমুলতলা গ্রামের মরহুম আলিম উদ্দিনের ছেলে আমিরজল পৈত্রিক জমিতে শুরু করেন উন্নত জাতের পেঁপে চাষ। প্রথম দিকে স্বল্প পরিসরে এ চাষ শুরু করলেও এ বছর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ২ বিঘা জমিতে পেঁপের চারা রোপন করেন তিনি। পরবর্তীতে আরো ৫ বিঘা জমিতে ভালো জাতের পেঁপে রোপন করেন তিনি। আর তাতেই পেয়ে যান সাফল্য। পেঁপের বাম্পার ফলনে উঠতে থাকে তার আর্থিক অবস্থা। চারা রোপনের ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যেই ফলন পেতে শুরু করেন তিনি। একেকটি পেঁপে ২ থেকে ৪ কেজি ওজনের। বিশাল আকৃতির এই পেঁপে চাষ করে এলাকার সবার দৃষ্টি কুড়েছেন আমিজল। অনেকেই এখন তার সাথে কথা বলে পেঁপে চাষ করার পরিকল্পনা করছেন। অনেকে বাগান করা শুরুও করেছেন।

এ ব্যাপারে আমিরজল বলেন, যে কেউ পেঁপে চাষ করে স্বল্প সময়ে স্বল্প পরিশ্রমে সাবলম্বীও হতে পারবেন। জমি তৈরী, চারা রোপন, সার, বালাইনাশক, আগাছা পরিস্কার ও শ্রমিকের টাকাসহ প্রতি বিঘায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয় তার। এখন গাছ থেকে প্রায় প্রতি বিঘা জমির কাঁচা-পাকা পেঁপে দুই থেকে আড়াই লাখ বেশি বিক্রি করছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে পাকা পেঁপে সংগ্রহ করে এ উপজেলা ছাড়াও বিভিন্ন হাটে বিক্রি করছেন। বাগান করার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬ লক্ষাধিক টাকার পেঁপে বিক্রি করে তিনি। বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এ বছরে আরো ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারলে আগামী বছরেও প্রায় এমন ফলনই আশা করছেন তিনি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তিনি তেমন কোন সুযোগ সুবিধা পাননি। তবে তাদের সার্বিক সহযোগিতা পেলে আরো বেশি ফলন ঘরে তুলতে পারতেন বলে আমিরজল জানান।

পলাশবাড়ীর অনেক গ্রামেই এখন সবুজ-হলুদ পেঁপের সারিবদ্ধ গাছের দৃষ্টি নন্দন দৃশ্য সকলের চোখ টানছে। কৃষকরাও পাচ্ছেন লাভের পরশ। সেইসাথে অভাব নামক শব্দটি উধাও হচ্ছে গ্রামীণ জনপথ থেকে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোছা. ফাতেমা কাওসার মিশু’র সাথে কথা বললে তিনি জানান, এ উপজেলায় অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমান প্রচুর পরিমাণে হাইব্রিড জাতের পেঁপের চাষ বেড়েছে। উন্নত জাতের পেঁপে চাষ করে স্বল্পসময়ে লাভের মুখ দেখছেন কৃষকরা। তিনি বলেন পেঁপে চাষে অনেক কৃষকই এখন আগ্রহী হয়ে উঠছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ পেঁপে চাষে রোগবালাইসহ বিভিন্ন ভাইরাস ও সংক্রোমন মোকাবেলায় চাষীদের সবসময় সবধরনের নিরলস সহযোগিতা করে আসছেন।