• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন

নিখোঁজের ২১ দিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ৫ টুকরো লাশ উদ্ধার


প্রকাশের সময় : জুলাই ১০, ২০১৮, ২:৪৮ PM / ৫২
নিখোঁজের ২১ দিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ৫ টুকরো লাশ উদ্ধার

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নিখোঁজের ২১ দিন পর শহরের আমলাপাড়া এলাকার ১৫ কে সি নাগ রোডের রাশেদুল ইসলাম ওরফে ঠান্ডু মিয়ার বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে কালিরবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষের খন্ডিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গতকাল (৯ জুলাই) রাত ১১টার দিকে আমলাপাড়ার ১৫ কে সি নাগ রোডের রাশেদুল ইসলাম ওরফে ঠান্ডু মিয়ার বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে অভিযান চালায় পুলিশ। তারা সেপটিক ট্যাংক খুলে ভেতরে তল্লাশি চালিয়ে ৩টি বস্তায় প্রবীর ঘোষের ৫ টুকরো খন্ডিত লাশ উদ্ধার করে।

জানা গেছে, প্রবীর ঘোষকে হত্যার পর কেটে টুকরো টুকরো করে কয়েকটি ব্যাগে ভরে ঠান্ডু মিয়ার বাড়ির সেফটি ট্যাঙ্কিতে ফেলে রাখে ঘাতকেরা। রাতে এ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় আরেক স্বর্ণ ব্যবসায়ী পিন্টু সরকার (৩৫) ও তার দোকানের কারিগর বাপেন ভৌমিককে (২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ জানিয়েছে, আর্থিক লেনদেনের বিরোধ নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে নিহত প্রবীরের বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার পিন্টু ও তার কারিগরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যে বাড়ি থেকে প্রবীরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে পিন্টু ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকেন।

গত ১৮ জুন রাত সাড়ে ৯টায় নিজ বাসা থেকে কালিরবাজার এসে নিখোঁজ হন প্রবীর চন্দ্র ঘোষ। রাতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

নিখোঁজের পরদিন ১৯ জুন প্রবীর ঘোষের বাবা নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর অজ্ঞাত ব্যক্তি প্রবীরের পরিবারের কাছে মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণ বাবদ ১ কোটি টাকা দাবি করেন।

ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) নূরে আলম জানান, প্রবীরের পরিবারের করা জিডির ভিত্তিতে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করতে থাকে। কিন্তু পুলিশের তদন্তের অগ্রগতি না হলে গত ৫ জুলাই বিষয়টি তদন্তের ভার দেওয়া হয় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে।

গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে সোমবার সকালে পিন্টু ও বাপন ভৌমিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আটককৃতরা প্রবীরকে হত্যা করে মৃতদেহ গুম করেছে বলে স্বীকার করে। পরে তাদের সঙ্গে নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ পিন্টুর ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রবীরের মৃতদেহ উদ্ধার করে।

সেসময় নিহতের স্বজনরা এবং শত শত এলাকাবাসী ওই বাড়ির সামনে এসে ভিড় জমান। নিহত প্রবীরের পরিবারের স্বজনরা এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

স্বীকারোক্তিতে পিন্টু ও বাপন জানিয়েছে, নিখোঁজ হওয়ার দিন পিন্টু ও বাপন প্রবীরকে পিন্টুর ফ্ল্যাটে নিয়ে আসে। ওই ফ্ল্যাটেই তাকে হত্যার পর প্রবীরের মৃতদেহ পাঁচ টুকরা করে তিনটি বস্তায় ভরে সেপটিক ট্যাংকে গুম করে। আর্থিক লেনদেনের বিরোধের জেরেই প্রবীরকে হত্যা করা হয়েছে।

থানা পুলিশের ব্যর্থতাকে দায়ী করে প্রবীরের স্বজনরা বলেন, ‘পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিলে তাকে হয়তো জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হতো।’

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/কেএস/২:৪৭পিএম/১০/৭/২০১৮ইং)