• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪০ অপরাহ্ন

নানা সমস্যা ও অনিয়মে জর্জরিত শহীদ আহসান উল্লাহ্ জেনারেল হাসপাতাল


প্রকাশের সময় : মে ৩০, ২০২০, ১২:৩১ PM / ৩৮
নানা সমস্যা ও অনিয়মে জর্জরিত শহীদ আহসান উল্লাহ্ জেনারেল হাসপাতাল

শেখ রাজীব হাসান, গাজীপুর : শহীদ আহসান উল্লাহ্ মাষ্টার জেনারেল হাসপাতাল নামটি সকলের পরিচিত। চিকিৎসা সেবার মান ভালো হওয়ায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়া গাজীপুরের রোগীদের পাশাপাশি উত্তরা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকার রোগীদের সমাগম ঘটে। তবে সামান্য বৃষ্টি হলেই পাল্টে যায় শহীদ আহসান উল্লাহ্ মাষ্টার জেলারেল হাসপাতালের দৃশ্য। হাসপাতালের সামনের সড়কসহ মুল ফটকের সামনে ও পুরাতন ভবনের সামনে জমাট বাধে হাটু পরিমাণ পানি। ড্রেনেজ ব্যাবস্থা না থাকায় মল, মূত্র মিশ্রিত পানিতে হেটে রোগী, ডাক্তার ও নার্সসহ হাসপাতালের স্টাফদের প্রবেশ করতে হয়। এতে হাসপাতালের পরিবেশ আরো খারাপ হয় ফলে রোগীরা অনেকে বাইরে থেকেই চলে যায় আর যারা আসে তারা আরো বেশী অসুস্থ হয়ে যায়।
এছাড়া সরকারি হাসপাতালের ২০০ গজের মধ্যে কোনো প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিক না থাকার সরকারি আদেশ থাকলেও কতিপয় অসাধু কিছু প্রতিষ্ঠান সরকারি আদেশ লঙ্ঘন করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের ১০০ গজের মধ্যে গড়ে তুলেছে একাধিক বেসরকারি ক্লিনিক, প্যাথলজি ল্যাব ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এখানকার অনেক ক্লিনিকের বিরুদ্ধে চিকিৎসার নামে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে এমবিবিএস ডাক্তারদের সাইনবোর্ড লাগানো চেম্বারে অদক্ষ হাতুড়ে ডাক্তারদের দিয়ে চিকিৎসার নামে করা হচ্ছে অপচিকিৎসা। রোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এছাড়া সরকারি হাসপাতালে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। দালালদের হাতে রোগীরা বলতে গেলে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
গত ২৯শে মে শুক্রবার রাত ৯ ঘটিকার সময় শহীদ আহসান উল্লাহ্ মাষ্টার জেনারেল হাসপাতালে সন্ত্রাসী হামলায় আহত সাংবাদিক রোকসানা পারভীন রুবিকে দেখতে হাসপাতালের নতুন ভবনের মহিলা ওয়ার্ডে প্রবেশ করতেই দেখা নব নির্মিত ভবনের ফ্লোরে বিশাল ফাটল ধরেছে অথচ এখনো পর্যন্ত হাসপাতাল ভবনের সকল কক্ষ ব্যাবহার শুরু হয়নি। এসময় হাসপাতালে ভর্তি থাকা আহত সাংবাদিক রুবিকে দেখে মর্মাহত হলাম। ভর্তি হওয়ার এক রাত পেরেয়ি আরো এক রাত চলে যাচ্ছে অথচ সাংবাদিকের মাথার নিচে একটি বালিস নেই। এসময় প্রায় ১ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর ডিউটি নার্সকে তার চেম্বারে না পেয়ে খুজতে বের হলাম।
বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী ও ফার্মেসীর দোকানি জানান, টঙ্গীতে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে বেসরকারি ক্লিনিক ও প্যাথলজি সেন্টার। অনেকগুলোর বৈধ কাগজপত্রও নেই। ক্লিনিকে অদক্ষ ডাক্তারতো আছেই সেই সঙ্গে অনেক প্যাথলজি ল্যাবে অশিক্ষিত কম্পিউটার অপারেটরদের দিয়েই আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি, রক্ত, মলমূত্র পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়ে থাকে। কোনো রোগী যদি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য গিয়ে কোনো ভালো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্টও দেখান, তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই ঐ রিপোর্ট গ্রহণ করা হয় না। ঢাকার বিভিন্ন দালালরা বলে নতুন করে আমাদের হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে।
জানা গেছে, রোগীদের সঙ্গে দালালদের অসদাচরণের একাধিক অভিযোগ শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দেওয়ার পরও দালালদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নিজাম উদ্দিন বলেন, বৃষ্টি এলেই হাসপাতালের মধ্যে পানি জমাট বাঁধে যার প্রভাব হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রমের উপরেই পরে। ড্রেনেজ ব্যাবস্থা না থাকায় এ সমস্যা তবে এ ব্যাপারে বহুবার সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে কোন লাভ হয়নি। ‘আমি যোগদানের পর দালালদের অত্যাচার কিছুটা কমে গেছে। বাকি যারা আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১২:৩১পিএম/৩০/৫/২০২০ইং)