• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১০:০০ পূর্বাহ্ন

তামিমের রেকর্ডে মোহামেডানের জয়


প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১৯, ২০১৭, ১:৫০ PM / ৩৯
তামিমের রেকর্ডে মোহামেডানের জয়

ঢাকারনিউজ২৪.কম:

অধিনায়কও ফিরলেন আর তাতে কক্ষপথে ফিরল মোহামেডানও। নিষেধাজ্ঞার কারণে চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচ তামিম ইকবালকে ছাড়াই খেলতে নামা ঐতিহ্যবাহী দলটি শুরু করেছিল হারেই। কিন্তু অধিনায়ক ফিরতে না ফিরতেই অন্য চেহারায় তাঁরা। ব্যাট হাতে চেনা বিধ্বংসী চেহারায় দেখা দেওয়া তামিম দলকেই টানলেন না শুধু, নিজেকে ছাড়িয়ে গিয়ে গড়লেন নতুন রেকর্ডও। দুয়েমিলে এই বাঁ হাতি ওপেনারের ব্যাট থেকে বেরোল ১২৫ বলে ১৫৭ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। বিকেএসপিতে গতকাল তাঁর ব্যাটে পিষ্ট কলাবাগানও জবাব ভালোই দিচ্ছিল। তবে মোহামেডানের ৩০৭ রান তাড়া করতে নেমে ক্রমেই বাড়তে থাকা রানের চাপ সামলাতে না পেরে শেষপর্যন্ত হেরেছে ২৪ রানে।

বিকেএসপিরই আরেক মাঠে তামিমের মতো ঝড় তুলেছেন আল-আমিনও। তাঁর ৯৪ বলে হার না মানা ১০৬ রানের ইনিংসে ৩০৭ রানের পুঁজি পাওয়া প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে অবশ্য চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি নিজেদের প্রথম ম্যাচে আবাহনীর বিপক্ষে প্রায় তিনশ’ ছোঁয়া সংগ্রহ দাঁড় করানো খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সংঘ। এবার তাঁরা ২৪৮ রানে অলআউট হয়ে হেরেছে ৫৯ রানে। আর মোহামেডানকে হারিয়ে আসর শুরু করা গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ফতুল্লায় দেখেছে টানা দ্বিতীয় জয়ের মুখ। ভারতীয় ক্রিকেটার পারভেজ রসুলের অফস্পিনে ভিক্টোরিয়াকে মাত্র ১৭৭ রানেই গুটিয়ে দেওয়া গাজী গ্রুপ পেয়েছে প্রতিপক্ষকে উঁড়িয়ে দেওয়া ৮ উইকেটের জয়।

তামিম অবশ্য শুরু থেকেই কলাবাগানের বোলারদের উঁড়িয়ে মারছিলেন না। বরং তাঁর ওপেনিং পার্টনার শামসুর রহমানই চড়াও হচ্ছিলেন বেশি। দু’জনে মিলে ৭৩ রানের দারুণ সূচনাও দেন দলকে। তাঁরা বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর মোহামেডানের ইনিংস শুধুই ‘তামিম’-ময়। কারণ তাঁর ১৫৭-র পর দলটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৮ রান ওপেনার শামসুরের ব্যাটেই! শেষ দিকে পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বির দুই বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ১৬ বলে ২২ রানের ঝড়ে তিনশ’ পেরোনো মোহামেডানকে পথ দেখিয়ে গেছেন গত মৌসুমে মাঠে অসদাচরণের জন্য এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পাওয়া তামিম। গত আসরের শেষ ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর হয়ে খেলেছিলেন ১৪২ রানের ইনিংস। এবার বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের চির প্রতিদ্বন্দ্বীর হয়ে নিজের প্রথম ম্যাচেই আরো বড় ইনিংস খেলার পথে পেরিয়ে গেলেন নিজের গড়া রেকর্ডও। ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাঁর খেলা ১৫৪ রানের ইনিংসটিই এতদিন লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে কোনো বাংলাদেশীর সর্বোচ্চ ছিল। কাল সেটিও টপকে যাওয়া তামিম কাল ফিফটিতে পৌঁছাতে খেলেছেন ৬১ বল। সেখান থেকে সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে অবশ্য খেলেছেন মোটে ৪১ বল। সেঞ্চুরির পর আরো বিধ্বংসী তামিম দেড়শ’তে যেতে খরচ করেন আরো কম, ২১ বল। পঞ্চম উইকেটে ৪৭ বলে ৭৭ রানের পার্টনারশিপে মেহেদী হাসান মিরাজের অবদান মোটে ২০ বলে ১০ রান, তামিমের ২৭ বলে ৬৫! তামিম দলের অর্ধেকেরও বেশি রান করে দেওয়ার পর জিততে হলে কলাবাগানের কারো এরকমই একটি ইনিংস খেলা লাগত। অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল (৪৯ বলে ৪৬), হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (৮০ বলে ৬৮) ও তুষার ইমরানদের (৬১ বলে ৬৪) ব্যাটে সেই প্রতিশ্রুতি থাকলেও শেষপর্যন্ত এঁরা প্রত্যেকেই বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ। যে ব্যর্থতায় প্রতিপক্ষকে কিছুটা চ্যালেঞ্জ জানাতে পারলেও চাপটা আর ধরে রাখতে পারেনি কলাবাগান। তাই অধিনায়কের ফেরার ম্যাচেই জয়ের সৌরভে সুবাসিত হার দিয়ে লিগ শুরু করা মোহামেডানও!

সংক্ষিপ্ত স্কোর

মোহামেডান-কলাবাগান

মোহামেডান ৫০ ওভারে ৩০৭/৯ (তামিম ১৫৭, শামসুর ৩৮, কামরুল ২২; নাবিল ২/৪৪)।

কলাবাগান ৫০ ওভারে ২৮৩/৯ (মাসাকাদজা ৬৮, তুষার ৬৪, আশরাফুল ৪৬, মুক্তার ৩৮*; কামরুল ৩/৬৯, মিরাজ ২/৫৬)।

ফল : মোহামেডান ২৪ রানে জয়ী।

ম্যাচ সেরা : তামিম ইকবাল (মোহামেডান)।

প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব-খেলাঘর

প্রাইম ব্যাংক ৫০ ওভারে ৩০৭/৬ (আল-আমিন ১০৬*, জাকির ৫০, সৌম্য ৩৯, সাব্বির ৩৬, উন্মুক্ত ৩২; শামসুল ২/৬২, ডলার ২/৬৭)।

খেলাঘর ৪৭.১ ওভারে ২৪৮ (নাজমুস ৫৬, সালাউদ্দিন ৪১, অমিত ৩৯; নাহিদুল ২/৩১, রুবেল ২/৩৫, উন্মুক্ত ২/৩৫)।

ফল : প্রাইম ব্যাংক ৫৯ রানে জয়ী।

ম্যাচ সেরা : আল-আমিন (প্রাইম ব্যাংক)।

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স-ভিক্টোরিয়া

ভিক্টোরিয়া ৪৮.৪ ওভারে ১৭৭ (উত্তম ২৯, শফিউল ২৬; রসুল ৪/২৮, আবু হায়দার ২/১৯, আলাউদ্দিন ২/৩১)।

গাজী গ্রুপ ৩১.২ ওভারে ১৮১/২ (জহুরুল ৫২, এনামুল ৫০, নাসির ৪১*, মমিনুল ৩০*)।

ফল : গাজী গ্রুপ ৮ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচ সেরা : পারভেজ রসুল (গাজী গ্রুপ)।

 

  (ঢাকারনিউজ২৪.কম/এনএম ০১.৪৮পিএম/১৯//২০১৭ইং)