• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০৪:৩১ অপরাহ্ন

ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের আন্দোলন স্থগিত


প্রকাশের সময় : মে ২০, ২০১৯, ১১:২২ AM / ৫১
ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের আন্দোলন স্থগিত

 

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ঢাকা : অবশেষে আন্দোলন থেকে সরে এসেছে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া বিক্ষুব্ধ অংশ। ছাত্রলীগের নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বিতর্কিতদের এবং মধুর ক্যান্টিনে পদবঞ্চিতদের ওপর হামলার ঘটনায় চিহ্নিতদের বহিষ্কারের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে আন্দোলনকারীরা।

গতকাল ১৯ মে (রোববার) রাত দেড়টার দিকে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের চার জ্যেষ্ঠ নেতার সঙ্গে কয়েক ঘণ্টার বৈঠক শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন পদবঞ্চিতরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে গত কমিটির প্রচার সম্পাদক ও আন্দোলনকারী সাঈফ বাবু বলেন, ‘আমাদের দাবি মানা হয়েছে, তাই আমরা আন্দোলন স্থগিত করেছি। আমাদের দাবি ছিল, বিতর্কিতদের কমিটি থেকে বাদ দিয়ে যোগ্যদের স্থান দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ করিয়ে দিতে হবে। এ ছাড়া দুটি হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার করতে হবে।’
এর আগে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পদবঞ্চিতদের সঙ্গে সংগঠনটির শীর্ষ দুই নেতার দ্বন্দ্ব মেটাতে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে উভয়পক্ষের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক ও বাহাউদ্দিন নাছিম। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা আবু কাওসার।

আন্দোলনকারীদের পক্ষে সেখানে ছিলেন- ছাত্রলীগের রোকেয়া হলের সভাপতি বিএম লিপি আক্তার, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা পারভীন, শামসুন নাহার হলের সভাপতি নিপু ইসলাম তন্বী, ডাকসুর সদস্য তিলোত্তমা সিকদার, গত কমিটির প্রচার সম্পাদক সাঈফ বাবু, বাংলাদ্শ কুয়েত মৈত্রী হলের সভাপতি শ্রাবণী শায়লা, জসীম উদ্দীন হলের সাধারণ সম্পাদক শাহেদ খান।

বৈঠকে ছাত্রলীগ সভাপতি সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের কাছে বিভিন্ন ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন গোলাম রাব্বানী। মধুর ক্যান্টিনে হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে রাব্বানী তাদের বলেছেন, ‘আমরা চারজনকে বহিষ্কার করব, আরও যদি কেউ থাকে তাদেরও বহিষ্কার করা হবে।’

গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘আপা প্রথমত আমাদের সবাইকে এক ছাতার নিচে দেখতে চান। আপা দ্বিধাবিভক্ত কারও সঙ্গে কথা বলবেন না। আপা বলেছেন, আগে একই টেবিলে বসে দেখান ছাত্রলীগ একটা পরিবার, আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ পরিবার ধারণ করছি, তারপর তিনি আমাদের সব কথা শুনবেন ৷ কিছুদিন আগে আপার চোখের অপারেশন হয়েছে। আপা একটু বেটার ফিল করলে সবার সঙ্গে কথা বলবেন।’

ছাত্রলীগ সভাপতি শোভন পদবঞ্চিতদের উদ্দেশে বলেন, ‘পদের লোভ না করে দল ও দেশের জন্য কাজ করতে হবে। ছাত্রলীগ কোনো স্থায়ী জিনিস না, একটা চলমান প্রক্রিয়া। ছাত্রলীগ করতে না পারলে যুবলীগ বা আওয়ামী লীগ করবেন। রাজনীতির একটা চর্চা থাকতে হবে। এভাবে এটা কিন্তু রাজনীতি চর্চা না। সবার প্রতি অনুরোধ, কাদা ছোড়াছুড়িটা আর না করি, ছাত্রলীগের সুনামটা আর নষ্ট না করি। কালকে থেকে একসঙ্গে পথচলে দু–এক দিনের মধ্যে বিষয়গুলো চিন্তাভাবনা করি।’
নিজেদেরও কিছু ভুল ছিল স্বীকার করে শোভন বলেন, ‘বিতর্কিত ১৭টি পদ আপাতত শূন্য হওয়ার পথে। এখানে দু-একজন থাকতে পারে, যাদের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী, মাদক, বিবাহ ও চাকরির বিষয় নেই, কিন্তু সে প্রমাণ করতে পেরেছে, তার বয়স ত্রিশোর্ধ্ব নয় ৷ এ রকম দু-একটি ঘটনা ঘটলে তা আমাদের মাধ্যমে না, নেত্রীর মাধ্যমেই আসবে ৷ কিন্তু ১৭টি পদের ম্যাক্সিমাম বিলুপ্তির পথে। সেই জায়গাগুলোয় পুনর্বিন্যাসের একটা সুযোগ এসেছে। আপনাদেরকে আমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে। পার্টির প্রতি দায়িত্বশীল হতে হবে। ছাত্রলীগের কর্মী হলে ত্যাগ করতে শিখতে হবে।’

প্রসঙ্গত, ছাত্রলীগের কমিটিতে বিতর্কিত নেতাদের বিষয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করতে গিয়ে শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে হামলার শিকার হন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। এই ঘোষণার আগ পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১১:২৩এএম/২০/৫/২০১৯ইং)