• ঢাকা
  • শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ০৩:০৭ পূর্বাহ্ন

কাশ্মীরে সেনা-বিদ্রোহী সংঘর্ষ : নিহত ২০, আহত ২ শতাধিক


প্রকাশের সময় : এপ্রিল ২, ২০১৮, ১০:৩২ AM / ৫৭
কাশ্মীরে সেনা-বিদ্রোহী সংঘর্ষ : নিহত ২০, আহত ২ শতাধিক

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সেনা ও বিদ্রোহীদের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন নিহত এবং ৭০ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিট্রিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি। নিহতদের মধ্যে তিনজন সেনা সদস্য, চার বেসামরিক লোক ও ১৩ জন বিদ্রোহী রয়েছে। তবে রাইজিং কাশ্মীর নামের একটি গণমাধ্যম দুই শতাধিক লোক আহতের কথা বলেছে।

ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া তিন জওয়ান ও ১২ বিদ্রোহী নিহতের কথা বলেছে। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন ১২ জন বিদ্রোহী ও তিন সেনা সদস্য নিহতের কথা বলেছে।

রোববার কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের দক্ষিণে অনন্তনাগ ও শোপিয়ান জেলায় এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

বার্তা সংস্থার এএফপির বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার সেনাবাহিনীর অভিযানের সময় স্থানীয়রা বিক্ষোভ শুরু করলে তার ওপর গুলি চালায় পুলিশ। এ সময় বিক্ষোভকারীরাও ইট-পাটকেল ছুড়ে মারে। এতে ওই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

ডেপুটি পুলিশ সু্পারইন্টেডেন্ট ইয়াসির কাদরি সিএনএনকে বলেন, ‘রোববার ভোরে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা শোপিয়ান জেলায় বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান শুরু করে। এ সময় লুকিয়ে থাকা বিদ্রোহীরা সেনাদের ওপর গুলি চালায় এবং সেনারাও পাল্টা গুলি চালায়। রোববার বিকেলে পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকে।’

পুলিশের মহাপরিচালক শেশ পল ভাইদ টুইটারে বলেছেন, এক পর্যায়ে ওই অভিযান সহিংসতায় রূপ নেয় যখন স্থানীয় অভিযানের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে চার বেসামরিক লোক নিহত হয় বলে জানান তিনি।

এদিকে, রোববার দিনের শেষে নিহতদের জানাজায় হাজার হাজার লোক অংশ নেয় বলে জানিয়েছে সিএনএন।

পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন বলেছে, রাজধানী শ্রীনগরেও বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে সোমবার স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষের ওপর ভারতীয় বাহিনীর এই হামলা অমানবিক ও কাপুরুষোচিত। এটিকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বলেও মন্তব্য করা হয়েছে বিবৃতিতে।

জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি রোববারের অভিযানে বেসামরিক লোক নিহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া নিহত সেনা সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তিনি। আর আহতের মুক্তি কামনা করে হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন মেহবুবা।

রাইজিং কাশ্মীরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হুরিয়াত কনফারেন্সের (এম) চেয়ারম্যান মিরওয়াইজ উমর ফারুক রোববার দিনব্যাপী অভিযান ও সংঘর্ষে বেসামরিক লোক নিহতের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন।

টুইটারে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘ভারত সরকার যতক্ষণ কাশ্মীরের রাজনৈতিক ও মানবিক সমস্যা মোকাবিলায় সামরিক শক্তি প্রয়োগ করবে ততক্ষণ কাশ্মীরিরা মরবে অথবা প্রতিরোধের জন্য অস্ত্র হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে। আর এর দায়-দায়িত্ব সব সরকারের ওপর বর্তাবে।’

এ ছাড়া সাবেক ইউনিয়ন মিনিস্টার ও প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রফেসর সাইফ-উদ-দিন, সিপিআইয়ের (এম) সিনিয়র নেতা ও কুলগাম বিধানসভার সদস্য এম আই ত্রিগামি, ডেমোক্রেটিক ফ্রিডম পার্টির (জেকেডিএফপি) নেতা মাওলানা তারি, জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন এবং বিধানসভার সদস্য ল্যাঙ্গেট আর রশীদ রোববারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ ও নিন্দা জানিয়েছেন।

মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন বলছে, ১৯৮৯ সালের পর থেকে কাশ্মীরে বিভিন্ন সহিংসতায় ৪৭ হাজারের বেশি লোক নিহত হয়েছে। কিন্তু যেসব লোক গুম হয়েছে তারা এ সংখ্যার বাইরে। কিছু মানবাধিকার সংগঠন ও বেসরকারি সংস্থার মতে, সব মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা এর দ্বিগুণ হবে।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১০:৩০এএম/২/৪/২০১৮ইং)