• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৬ অপরাহ্ন

ইট ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে পুড়ে গেছে দেড়শ’ বিঘা জমির বোরো ধান


প্রকাশের সময় : মে ১০, ২০১৮, ১০:৫৫ PM / ৫১
ইট ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে পুড়ে গেছে দেড়শ’ বিঘা জমির বোরো ধান

ঢাকারনিউজ২৪.কম, কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে একটি ইট ভাটার ছেড়ে দেয়া বিষাক্ত গ্যাসে প্রায় দেড়শ বিঘা জমির উঠতি বোরো ধান সম্পুর্ণরুপে পুড়ে গেছে। এতে করে ঐ এলাকার শতাধিক কৃষক ফসল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ভাটার ফায়ারম্যানের অদক্ষতার কারনে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

কুড়িগ্রাম সদরের ঘোগাদহ ইউনিয়নের রসুলপুর ব্রহ্মতর গ্রামে কৃষি জমিতে এবারই প্রথম থ্রি-স্টার ব্রিকস্ নামে একটি ইট ভাটা চালু করে স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী। গত ৫ এপ্রিল গভীর রাতে ভাটার ইট পোড়ানো শেষে অদক্ষ ফায়ারম্যান ইটের চুল্লির মুখ খুলে দেয়ায় বিষাক্ত গ্যাস বেরিয়ে ঐ এলাকার প্রায় দেড়শ বিঘা জমির উঠতি বোরো ফলসসহ গাছপালা ও বাঁশ বাগান পুড়ে যায়। পরের দিন সকালে কৃষকরা ধান ক্ষেতে গেলে দেখেন তাদের ধান ক্ষেত পড়ে গেছে এবং ভাটার বিষাক্ত গ্যাসেই এঘটনা ঘটেছে বলে তারা দাবী করেন। প্রথম দিকে ভাটা কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করলেও পরে তা স্বীকার করেন।

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা বলেন, অনেক কষ্টে ধার-দেনা করে তারা বোরো আবাদ করেছিল। ধান ঘরে তোলার পুর্ব মুহুর্তেই তাদের সব আশা ধুলিসাৎ হয়ে গেছে।
এ অবস্থায় ভাটা মালিক ক্ষতিপুরণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও যে পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা আদৌ পাবেন কি না এ নিয়ে সংশয় তাদের।

রসুলপুর ব্রহ্মতর গ্রামের কৃষানী হাসিনা বেওয়া জানান, ধার-দেনা ও অন্যের বাড়িতে কাজ করে বন্ধকী পৌনে দুই বিঘা জমিতে এবারে ধান আবাদ করেছিলেন। ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে তার ধান ক্ষেত পুড়ে গেছে। এ ক্ষেত থেকে খড় ছাড়া কিছুই মিলবে না। স্বামী হারা এই মহিলা চোখের পানি ফেলে জানান, আগামী দিনগুলো কিভাবে পারি দিবেন তা নিয়ে মহা-দুঃচিন্তায় পড়েছেন।

একই গ্রামের রাজু আহমেদ, হাসু মিয়া, ছকিনা বেগম, ফাতেমা বেগম জানান, গত বন্যায় এই এলাকায় এক ফোটা ধানও ঘরে তুলতে পারেননি তারা। এবার অনেক আশা ছিল ঘরে ধান তুলবেন। কিন্তু ইট ভাটার কারনে সে আশা গুড়ে বালি হয়ে গেছে। এ অবস্থায় ভাটার মালিকের নিকট ক্ষতিপুরণ দাবী করছেন তারা।
থ্রি-স্টার ব্রিকস এর ম্যানেজার আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, আমরা এবারই প্রথম নতুন ভাটা দিয়েছি। ইট পোড়ানো শেষে ভাটার অদক্ষ ফায়ারম্যানের কারনে এ ঘটনা ঘটেছে।
থ্রি-স্টার ব্রিকস্ এর মালিক পক্ষের ইসমাইল হোসেন ইট ভাটার গ্যাসে ধান ক্ষেত পুড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের সাথে আলোচনা করেছি। কৃষকদের ক্ষতিপুরণ দেয়া হবে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এসএম রেজাউল করিম জানান, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও বোরো ক্ষেতের পরিমান নিরুপন করে ইট ভাটা মালিককে ক্ষতিপুরণ দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

কৃষকরা বলছেন এমনিতেই আবাদী জমি নষ্ট করে গড়ে তোলা হয়েছে ইট ভাটা। তার উপর অদক্ষ কারিগরের কারনে ভাটার বিষাক্ত ধোয়ায় উঠতি বোরো ধান সম্পুর্ণরুপে নষ্ট হওয়ায় দ্রুত ক্ষতিপুরণ দাবী করছেন তারা।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/১০:৫৫পিএম/১০/৫/২০১৮ইং)