• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০২ অপরাহ্ন

‘অপহরণকারীকে প্রেমে ফেলতে সবকিছুই করতে হয়েছে’


প্রকাশের সময় : জুলাই ১৬, ২০১৮, ১০:৪৭ PM / ১০২
‘অপহরণকারীকে প্রেমে ফেলতে সবকিছুই করতে হয়েছে’

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের মডেল ক্লোয়ি এইলিং গত বছর অপহরণকারীর হাত থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরার পর তার বর্ণনা শুনে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। তাকে ইটালিতে অপহরণ করে ছয়দিন আটকে রাখা হয়েছিল। যদিও ওই মডেল বলছেন, মুক্তি পাওয়ার জন্য অপহরণকারীকে কৌশলে তার প্রেমে পড়তে বাধ্য করেছিলেন।

বিবিসির ভিক্টোরিয়া ডার্বিশায়ার অনুষ্ঠানে এইলিং বর্ণনা করছিলেন তার মুক্তি পাওয়ার পুরোটা অংশ। কিন্তু এটা নিয়েই সন্দেহ অনেকের।

বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, দুই দিন ধরে একটি সুটকেসের মধ্যে আটকে থাকার পর ক্লোয়ি এইলিং অপহরণকারীর সঙ্গে বিছানায় একসঙ্গে শুতে রাজি হন। এইলিং বলেন, ‘যতই আমরা কথাবার্তা বলতে শুরু করলাম, আমাদের মধ্যে একটি সম্পর্ক গড়ে উঠতে শুরু করল। যখন আমি বুঝতে শুরু করলাম, সে আমাকে পছন্দ করছে, তখনই আমি জানতাম, আমাকে এর সুযোগ নিতে হবে।’

ক্লোয়ি জানান, লুকায হের্বা নামের একজন তাকে ফটোশুট করা হবে বলে আমন্ত্রণ জানালে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ইতালির মিলানে যান তিনি। সেখানে তাকে মাদক ইনজেকশন দেওয়া হয়, কাপড়চোপড় খুলে ফেলা হয়। আর হাত বেঁধে গাড়ির বুটে ভরে প্রত্যন্ত একটি ফার্ম হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়।

এইলিংয়ের দাবি, অপহরণকারী লুকাজ তিল লাখ ইউরো দাবি করে মুক্তির জন্য। অন্যথায় যৌনকর্মী হিসেবে বিক্রি করে দেওয়ার ভয় দেখান। ওই মডেল বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, সে যা বলছে, তার সবই সত্যি। তাকে এক সেকেন্ডের জন্যও আমার সন্দেহ হয়নি। কারণ সে আমার প্রতিটি প্রশ্নের খুঁটিনাটি উত্তর দিচ্ছিল।’

ক্লোয়ি আরও জানান, অপহরণকারী এটাও জানতে চায় যে, সে এইলিংকে চুমু খেতে পারে কি না। তাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক গড়ে ওঠা সম্ভব কি না, এ বিষয়টাও সে জানতে চায়। ওই মডেল বলেন, ‘আমি ভাবলাম, এটাই আমার এখান থেকে বের হওয়ার সুযোগ। যখন আমি তাকে বললাম যে, এটা ভবিষ্যতে হতে পারে, তখন সে খুবই উৎফুল্ল হয়ে যায় এবং সত্যিই ভাবতে শুরু করে যে, এ রকম কিছু হতে যাচ্ছে। সে সবসময় এ বিষয়েই কথা বলতে শুরু করে। তার এই আচরণ দেখে আমি বুঝতে পারি, আমাকে বিষয়টি চালিয়ে যেতে হবে।’

ক্লোয়ি জানান, অপহরণকারী বুঝতে পারে কোনো মুক্তিপণ পাওয়া যাবে না, তখন সে তাকে ছেড়ে দেয়। একই সঙ্গে গাড়ি চালিয়ে মিলানে ব্রিটিশ কনস্যুলেটে পৌঁছেও দেয়। ওই সময় তাদের মজা করতে দেখেছেন বলে অনেকের দাবি। সে বিষয়ে এইলিং বলেন, ‘কিন্তু কেন আপনি এমন একজনের সঙ্গে মুখ গোমড়া করে থাকবেন, যার আপনার জন্য আবেগ রয়েছে এবং সেজন্য আপনাকে মুক্তিও দিয়েছে? সে যাতে আমার প্রেমে পড়ে, সেজন্য আমার সবকিছুই করতে হয়েছে।’

এই বছরের জুন মাসে অপহরণকারী হের্বার ১৬ বছর ৯ মাসের কারাদণ্ড হয়। তিনি আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে জানান, ‘এর আগে এইলিংয়ের সঙ্গে তার দেখা হয়েছে এবং তিনি তার প্রেমে পড়ে যান। একটি স্ক্যান্ডাল তৈরির মাধ্যমে এইলিংকে সবার কাছে পরিচিত করে তুলতেই এমন কাজ করা হয়েছে।

যদিও এইলিংয়ের কণ্ঠে রয়েছে ভিন্ন সুর। তিনি বলেন, ‘আমি এখনো তার উদ্দেশ্যটি বুঝতে পারছি না। শুধু টাকার জন্য সে আমাকে অপহরণ করেনি। সে দুই বছর আগে ফেসবুকে আমার সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছিল। সে যেন অনেকদিন আগে থেকে আমার প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়েছিল।’

পুরো ঘটনাটি নিয়ে একটি বই লিখেন এইলিং। তিনি জানান, এটা খুবই অবাক ব্যাপার যে, হের্বার সাজাপ্রাপ্তির পরেও মানুষজন তাকে নিয়ে সন্দেহ করে।

এজন্য গণমাধ্যমকে দায়ী করেন এইলিং। তার দাবি, গণমাধ্যম মানুষকে ‘ব্রেইনওয়াশ’ করেছে। নারীদের কাছ থেকেই বেশির ভাগ অবমাননাকর মন্তব্য পেয়েছেন দাবি করে ওই মডেল বলেন, ‘এটা খুবই কষ্টদায়ক। কারণ আমি আমার নিজের দেশে এত খারাপ অভিজ্ঞতা আর অবিশ্বাসের ভেতর দিয়ে যাব, সেটা কখনো আশা করিনি।’

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১০:৪৬পিএম/১৬/৭/২০১৮ইং)