• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২৮ অপরাহ্ন

ধর্ষণের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ‘অপরাজিতা বিল’ পাশ


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৪, ১০:৪০ PM / ২৪
ধর্ষণের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ‘অপরাজিতা বিল’ পাশ

ঢাকারনিউজ : কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সী এক ডাক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় ধর্ষণবিরোধী ‘অপরাজিতা বিল’ পাশ হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের আনা ধর্ষণবিরোধী বিলটি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। এর মধ্যদিয়ে ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধসংক্রান্ত কেন্দ্রীয় আইনে প্রথম কোন সংশোধন আনল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

অপরাজিতা বিল কী?
বিলটির মাধ্যমে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’র (বিএনএস) কয়েকটি ধারা সংশোধন করা হবে। ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন ও সংশোধন) ২০২৪’ বিলটিতে ধর্ষণের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। নতুন বিলে যে সকল সংশোধনের কথা বলা হয়েছে:

১. ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ক্ষেত্রে ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ১০ থেকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের কথা বলা আছে, ক্ষেত্র বিশেষে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড। অপরাজিতা বিলে বলা হয়েছে, এই অন্যায়ের ক্ষেত্রে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ডের শাস্তি, অপরাধ গুরুতর হলে মৃত্যুদণ্ড।

২. নির্যাতিতার মৃত্যু হলে, ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় শাস্তির কথা বলা আছে- ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ক্ষেত্র বিশেষে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড। নতুন অপরাজিতা বিলে সেই শাস্তি বাড়িয়ে করা হয়েছে মৃত্যুদণ্ড ও জরিমানা।

৩. অ্যাসিড আক্রমণের ক্ষেত্রে ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় শাস্তি হিসেবে বলা আছে, ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ক্ষেত্র বিশেষে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা। নতুন বিলে বলা হয়েছে, অ্যাসিড হামলায় অপরাধীর আমৃত্যু কারাদণ্ড, ক্ষেত্র বিশেষে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি হবে।

এছাড়াও যৌন সহিংসতার শিকার ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশের ক্ষেত্রে শাস্তির মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় এই ক্ষেত্রে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান থাকলেও অপরাজিতা বিলে তিন থেকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। দ্রুত তদন্তের জন্য অপরাজিতা টাস্ক ফোর্স গঠন করার কথা বলা হয়েছে বিলে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিল পাশ হলেই পুলিশ বাহিনী তৈরি করা হবে। প্রাথমিক রিপোর্ট আসার পর ২১ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ হবে। ১৫ দিন বাড়ানো যেতে পারে। নির্যাতিতা শিশু হলে সাক্ষ্য সংগ্রহ হবে ৭ দিনের মধ্যে। এছাড়া, চার্জশিট শেষ হওয়ার পর ৩০ দিনের মধ্যে ট্রায়াল শেষ করতে হবে।

এখন বিলটি কার্যকর হওয়ার আগে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সম্মতি প্রয়োজন। একটি রাজ্য বিধানসভা কর্তৃক গৃহীত একটি আইন সংসদ কর্তৃক গৃহীত একটি আইনের বিপরীতে হলেও তা কার্যকর করা যেতে পারে যদি এতে রাষ্ট্রপতির সম্মতি থাকে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি মন্ত্রীদের পরামর্শে কাজ করেন এবং এই বিলটি আইনে পরিণত হবে কিনা তা কেন্দ্রই সিদ্ধান্ত নেবে।

এর আগে, অন্ধ্র প্রদেশ বিধানসভা এবং মহারাষ্ট্র বিধানসভা ধর্ষণ এবং গণধর্ষণ মামলায় মৃত্যুদণ্ডের বাধ্যতামূলক বিল পাস করেছিল। তাদের কেউই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সম্মতি পাননি।