• ঢাকা
  • বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন

চলনবিলে আধাপাকা ধান পানির নিচে, শ্রমিক সংকট


প্রকাশের সময় : মে ৪, ২০১৮, ২:২০ PM / ১১৭
চলনবিলে আধাপাকা ধান পানির নিচে, শ্রমিক সংকট

 

শের মোহাম্মদ, গুরুদাসপুর (নাটোর) : কয়দিনের প্রবল বর্ষণের পাশাপাশি আজ শুক্রবার(৪ মে) সকালে দেড় ঘন্টার বৃষ্টি ও উত্তরের ঢল গোড়া পানির কারনে এবারও কপাল পুড়েছে কৃষকের। শত শত হেক্ট্রর জমির আধাপাকা ধান তলিয়ে গেছে চলনবিলের পানিতে। কারো ধান ডুবেছে সবই, কারো আবার অল্প। আবার পানিতে ডুবলেও ওই টুকুই তুলতে পারছেনা শ্রমিক সংকটের কারনে।

শুক্রবার(৪ মে) সকালে চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার পিপলা, বিলহরিবাড়ী, যোগেন্দ্রনগর, বিলসা, সিংড়ার বিলদহর, কৃষ্ণপুর সিরাজগঞ্জের তাড়াশের কুন্দোইর ঘুরে দেখা যায় এমন দৃশ্য। কৃষক কিংকর্তব্যবিমূঢ়। তলিয়েছে তাদের সোনার ফসল আধাপাকা ধান। অতিবর্ষণে পরপর দু’বছর এমন ফসলহানিতে দিশেহারা তারা। একদিকে নিজেদের সর্ব্বস্ব দিয়ে ধান করে তা তলিয়ে গিয়ে নিজেদের খাবার শেষ অন্যদিকে গো-খাদ্যও শেষ হয়ে গেচে।

গুরুদাসপুরের খুরজীপুর ইউনিয়নের বিলসা মা-জননী সেতুর দু’ধারের মাঠের দিকে তাকালে চোখে পড়ে কৃষকদের দূর্দশার করুণ চিত্র। দেখা যায়, কৃষকরা পানিতে নিমজ্জিত ধান কাটছে। একই সময় দেখা গেল ডিঙ্গি নৌকা করে বিলের মাঝামাঝি থেকে কাটা ধান আনার দৃশ্য। নৌকায় নিয়ে আসা ধানগুলো বিলের পাশের রাস্তায় নামিয়ে রাখছেন কৃষকরা। সেই সাথে তাদের চোখেমুখে রয়েছে হতাশার ছাপ।

কুন্দোইলের আবু জাফর নামের এক কৃষক বলেন, গতবছর অতিবর্ষণে যখন সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। তখন মন্ত্রঅ-এমপিরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন চলনবিলের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া কাটাগাং খাল গুলো খনন করে বিলের পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে। তাদের সে সব প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবায়ন হয়নি। অতিবৃষ্টির পানি খলা উপচে বিলের মাঝে ঢুকে এভাবেই ধান গুলো তলিয়ে যায়। গত মৌসুমে একই কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তিনি। যে জমি থেকে অন্য বছরে বিঘাপ্রতি ৩০ মন ধান পেয়েছেন, সেখানে গত বছর পেয়েছেন সর্ব্বোচ্চ ১০-১২ মন। এবার তা ১০ মনও পাওয়া যাবেনা। না পাকতেই জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। একই কথা জানান এলাকার আরো কয়জন কৃষক। তারা আরো জানান, ঋণ নিয়ে ফসল করেছেন, এখন ঋনের টাকা শোধ করা সহ ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া চলবে কিভাবে।

স্থানীয়রা জানান মূলত বেরবাড়ি-সোনাপাতিল খাল দিয়ে উত্তরাঞ্চলের পানি ঢুকছে সিংড়ার ডাহিয়া বিলে পানি প্রবেশ করে। সেই সাথে বর্ষন। তাছাড়া বিলসা-রুহাই বিলের পানি পিপলা কাল দিয়ে গুমানী নদীতে নেমে যায়। বিলের ভিতরের খাল গুলো খনন করে পানি গুলো নদীতে নামার সুযোগ করে দিলে জলাবদ্ধতা হতোনা। প্রতি বছর ফসলও নষ্ট হতো না। এসব বিষয়ে দৃষ্টি না দিয়ে তারাতারি ধান কেটে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েই কৃষি কর্মকর্তারা দায়িত্ব শেষ করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেব মতে গুরুদাসপুর, সিংড়, তাড়াশা উপজেলায় প্রায় ১লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের মধ্যে ২০হাজার হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণ ও ১০হাজার হেক্টর জমির ধান আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে। ইতমধ্যেই ২০ ৪০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। শতকরা ৭০ ভাগ পাকলেই কৃষকদের ধান কাটার জন্য বলা হয়েছে। কৃষকদের আতংকিত না হওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/২:২০পিএম/৪/৫/২০১৮ইং)