আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে চিঠিতে ‘হুমকি’ পেয়েছেন বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তার দাবি, পিটিআই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত দেখতে চায় ওয়াশিংটন। এর মধ্যে আবার পাকিস্তানি তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী দাবি করেছেন, ইমরান খানকে প্রাণে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র হচ্ছে আর সে জন্য তার নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে। পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের সম্পর্কের এমন টানাপোড়েন এখন বিশ্ব রাজনীতির আলোচনার বিষয়বস্তু। কিন্তু এসব ঘটনা ঠিক এমন এক সময়ে ঘটছে, যখন পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে এমনিতেই ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার শঙ্কায় ইমরান খান। তাই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তার এই ‘হত্যার হুমকি’ আসলেই বিদেশি ষড়যন্ত্র নাকি অনাস্থা ভোট থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা?
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে জানা যায়, গত রোববার একটি জনসমাবেশে ইমরান খান বলেন, তিনি একটি চিঠি পেয়েছেন, যাতে দেখা যায়, একটি ভিনদেশি রাষ্ট্র তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং পাকিস্তানে তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা ওই দেশটির নির্দেশ মোতাবেক কাজ করছে।
পরে বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত ভাষণে সেই চিঠি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকা আমাকে হুমকি দিয়েছে’। কিন্তু এর পরপরই নিজের বক্তব্য সংশোধন করে তিনি বলেন, সেটি অন্য একটি বিদেশি রাষ্ট্র ছিল।
মার্কিন প্রশাসন অবশ্য ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং তারা এ হুমকির অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছে। আব্দুল বাসিত নামে সাবেক এক কূটনীতিক স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইমরান খানের কাছে যাওয়া চিঠিটি ছিল মূলত পাকিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কূটনৈতিক মূল্যায়ন, কোনো হুমকিপত্র নয়।
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ইমরান খান যেদিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুললেন, সেদিনই পাকিস্তানের পার্লামেন্টে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা সংক্রান্ত একটি বিতর্ক শুরু হয়। ইমরান প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরকার পরিচালনায় ব্যর্থতা ও অর্থনৈতিক অদক্ষার অভিযোগ তোলা হয়েছে। ব্যক্তিগত মতপার্থক্য ভুলে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলো। শুধু তা-ই নয়, যে সামরিক বাহিনীর সমর্থন পেয়ে ক্ষমতায় বসেছিলেন এ পিটিআই নেতা, সেটিও হাতছাড়া হতে চলেছে।