• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪, ০৮:৩৪ অপরাহ্ন

১৪ বছর পর বাড়ি ফিরলেন মিনহাজ


প্রকাশের সময় : মার্চ ১, ২০২২, ৭:৫৯ AM / ৪৮
১৪ বছর পর বাড়ি ফিরলেন মিনহাজ

ফজলে রাব্বি, বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি : ১৪ বছর আগে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে মাছের ব্যবসা করতে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায় যান মিনহাজ আলী। সেখানে গিয়ে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিএসএফের হাতে আটক হন। অনেক খোঁজাখুঁজি ও থানায় ডায়েরি করেও তাকে ফিরে পায়নি তার পরিবার। তিনি নিখোঁজ হওয়ার দুই বছর পর তার স্ত্রী নার্গিস বেগম মারা যান। সম্প্রতি হঠাৎ আরও দুই ছেলে ও দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে নিজ বাড়ি ফিরে আসেন মিনহাজ আলী। বাবা-মা হারানো সন্তানেরা দীর্ঘ ১৪ বছর পর অবশেষে হারিয়ে যাওয়া তার বাবাকে ফিরে পেয়েছে।

শনিবার এ তথ্য জানান, মিনহাজ আলী ও তার ছেলে শান্ত। মিনহাজ নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের চকতকিনগরের নওশের ফকিরের ছেলে। তার বর্তমান বয়স ৫০ বছর। মিনহাজ আলী জানান, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে মাছের ব্যবসা করতে ভুলক্রমে সীমান্ত পার হলে বিএসএফ আমাকে ধরে জেলে বন্দি করে। কিছুদিন বন্দি রাখার পর পরিবারের লোকজন খোঁজ নেয় না দেখে আমাকে ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। বিএসএফের কাছে নাম-ঠিকানা বলেছিলাম। কিন্তু বাড়ি থেকে কেউ যোগাযোগ করেনি। এ কারণে তারা ছেড়ে দিলেও অভিমান করে আর বাড়ি ফিরে আসিনি। পরে ঢাকায় চলে যাই। সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজ করি। সেখানে থাকার পাঁচ বছর পর দ্বিতীয় বিয়ে করি। সেখানে আরও দুই ছেলে হয়েছে। হঠাৎ পরিবারের কথা বেশি মনে পড়ায় অভিমান ভুলে বৃহস্পতিবার বাড়ি চলে আসি। এতদিন পরে আগের পরিবারকে ফিরে পেয়ে খুব ভালো লাগছে। তবে প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর খবর তাকে অনেক কষ্ট দিচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, মিনহাজ তার দ্বিতীয় স্ত্রী, বড় মেয়ে-জামাই, বড় দুই ছেলে ও তাদের স্ত্রী এবং ছোট আরও দুই ছেলে মিলে বসে আনন্দে সময় কাটাচ্ছেন। তার পরিবারও তাকে পেয়ে খুশি। তার ছোট সন্তানদের আদর করছেন তার বড় সন্তানরাসহ অন্যরা। এত বছর পর বাড়িতে ফিরে আসায় তাকে দেখতে বাড়িতে ভিড়ও করছেন গ্রামের মানুষ।

কথা হয় বড় ছেলে শান্তর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম, আব্বা ব্যবসা করতে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। দুই বছর পর মা মারা যান। এ বিষয়ে মিনহাজের স্ত্রী শারমিন বেগম বলেন, বিয়ের পর আমি স্বামীর আত্মীয়-স্বজনকে পাইনি। অবশেষে পরিবারের সবাইকে পেয়ে ভালো লাগছে।