• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৫:৪৬ অপরাহ্ন

হোয়াইট গোল্ড চাষে মেতে উঠেছে চলনবিলের কৃষক


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৯, ২০১৯, ৪:৪০ PM / ৩২
হোয়াইট গোল্ড চাষে মেতে উঠেছে চলনবিলের কৃষক

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি: হোয়াইট গোল্ড নামে খ্যাত মসলা জাতীয় ফসল রসুনের বাম্পার ফলন ও ভাল দাম পাওয়ায় চলনবিলের কৃষক মেতে উঠেছে রসুন চাষে। মাঠ-ঘাট থেকে শুরু করে বাড়ীর আনাছে-কানাছে পর্যন্ত রসুনের চাষ করতে শুরু করেছে কৃষক। ফলন হয়েছে এবার। গত বছরে জমিতে সাথী ফসল হিসেবে রসুনের সাথে বাঙ্গি চাষ করেও লাভবান হয়েছেন তারা। নাটোরের গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রামে মূলতঃ রসুন চাষ বেশী হয়। এছাড়াও পাশ^বর্তী সিংড়া, তাড়াশ ও চাটমোহরেও কিছু রসুন উৎপাদন হয়ে থাকে।
দীর্ঘদিন পর এবার রসুনের দাম পাওয়ায় রসুন চাষে ঝুকছে কৃষক। তাছাড়া রসুনের সাথী ফসল বাঙ্গির চাষ করে অনেকটা বিনা খরচে লাভজনক হওয়ায় বাঙ্গি চাষের প্রতি কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত এ রসুন বোপন করা হয়।মার্চ মাসের মধ্যে রসুন উঠানোর পর বাঙ্গির গাছ ছড়িয়ে পড়ে ক্ষেতে। তখন সামান্য সেচ ও কীটনাশক দিয়ে যতœ করলেই গাছে ফুল ও ফল ধরতে শুরু করে। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এবার রসুন ও বাঙ্গীর ভাল দাম পাওয়ায় গত বছরের তুলনায় অনেক বেশী পরিমান জমিতে রসুন ও বাঙ্গীর চাষ হচ্ছে। গত বছরে যেখানে চলনবিলে ১ হাজার ৬শ হেক্টোর জমিতে রসুন চাষ করা হয়েছিল। এবার প্রায় ২০ হাজার হেক্টোর জমিতে চাষ হচ্ছে।
ধারাবারিষা ইউনিয়নের দক্ষিণ নারি বাড়ী গ্রামের কৃষক ফারুক মোল্লা বলেন, গত বছরে ছয় বিঘা জমিতে রসুন-বাঙ্গি করেছিলেন। প্রায় সাড়ে ছয় লাখ টাকার রসুন ও আড়াই লাখ টাকার বাঙ্গি বিক্রয় করে তারা ব্যাপক লাভবান হয়েছেন। এ বছর রসুন এবং বাঙ্গি দুই ফসলেরই ভালো দাম পেয়ে তারা খুুশি। বর্তমানে তারা প্রতিমণ রসুন বিক্রয় করছেন সাড়ে ছয় থেকে সাত হাজার টাকায়।
কৃষক শের মোহাম্মদ জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে ২৯ মণ রসুন পেয়েছেন। পৌণে ২ লাখ টাকার রসুন ও ৫১ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি করেছেন। এবার বাম্পার ফলন ও ভাল দাম পাওয়ায় তারা রসুন চাষে ঝুকে পড়েছে। তাদের ধারনা আগামীতে সরকার বিদেশ থেকে যদি রসুন আমদানি না করে তাহলে তারা এবারও ভাল দাম পাবে। আর বাঙ্গি বিক্রয় করতে বাহিরে যেতে হয়না। স্থানীয় নারি বাড়ী বাঁধ বাজার, দেবদারুর মোড় নামে দুটি বাঙ্গির বড় পাইকারি বাজার। বাহিরের বেপারী জমিতে গিয়ে ওই বাঙ্গি ক্রয় করে। ওই দুই পয়েন্টে পৌচ্ছে দিয়েই দাম দিয়ে দেয়। কাজেই এলাকার জন্য এ আবাদ খুবই ভাল। তবে এলাকার কৃষক দাবি করেন রসুন সংরক্ষণের জন্য যদি ষ্টোরেজ ব্যবস্থা করা হতো তাহলে কৃষক আরো লাভবান হতো। তারা সরকারের কাছে এধরনের ষ্টোরেজ স্থাপনের দাবি জানান।
কিশোরগঞ্জ থেকে আসা বাঙ্গি ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন জানান, তারা ৫জন ভাগে এ ব্যবসা করেন। অন্ততঃ ১৫ বছর ধরে এ এলাকা থেকে বাঙ্গি নিয়ে কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রয় করেন। এতে গত বছর বেশ লাভবান হয়েছেন তারা। তারা কৃষকের ক্ষেত থেকে পাইকারি দরে বাঙ্গি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
গুরুদাসপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল করিম জানান, চলনবিলের গুরুদাসপুওে গত ৫ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে বিনা চাষে রসুনের আবাদ হয়েছিল। এবার তা বেড়ে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টোর জমিতে চাষ হচ্ছে। কৃষকরা রসুনের পাশাপাশি সাথী ফসল বাঙ্গি আবাদ করেন। এক খরচে একই জমিতে রসুন এবং বাঙ্গি চাষ ভাল দাম ও বাম্পার ফলন হওয়ায় চলনবিলের কৃষকদের ভাগ্য বদলে গেছে।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/০৪:৩৮পিএম/২৯/১১/২০১৯ইং)