• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১০:৫১ অপরাহ্ন

শ্রীদেবীর পেটে লাথি মেরেছিলেন শাশুড়ি!


প্রকাশের সময় : মার্চ ৪, ২০১৮, ১০:৩৮ AM / ৩৫
শ্রীদেবীর পেটে লাথি মেরেছিলেন শাশুড়ি!

 

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : বনি কাপুরের প্রথম স্ত্রী, অর্জুন কাপুরের মা মোনা শৌরি কাপুর ছিলেন নামী সাংবাদিক। মোনার অন্তরঙ্গ বান্ধবী ছিলেন নায়িকা শ্রীদেবী। একদিন মোনা শ্রীদেবীকে তাদের বাসায় নিয়ে আসেন। সেখানেই বনি কাপুরের সঙ্গে পরিচয় হয় শ্রীদেবীর। সেই পরিচয় থেকেই শ্রী-বনির প্রেম শুরু হয়। প্রেমের কিছুদিন পরই বনি কাপুর স্ত্রী মোনাকে ডিভোর্স দেয়ার জন্য আবেদন করেন। এবং তার কয়েকদিন পরই শ্রীদেবীকে বিয়ে করেন বনি কাপুর।

মোনা কাপুরকে বনির মা খুব পছন্দ করতেন। সে কারণেই তিনি শ্রীদেবীকে কখনোই বনির দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে পারেননি। মোনাকে পছন্দ করার কারণেই প্রায় ১০ বছর বনির মায়ের সঙ্গে সেই বাসায় থেকেছেন মোনা এবং ২ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তখন বনি কাপুর শ্রীদেবীকে নিয়ে নতুন বাসায় থাকতেন।

একদিন প্রেগন্যান্ট শ্রীদেবীর সঙ্গে এক ফাইভ স্টার হোটেলে দেখা হয়ে গেলে বনির মা সেখানে শ্রীদেবীর পেটে লাথি মেরে বসেন…

এইসব সত্যি কাহিনীসহ আরো অনেককিছুই বলিউড পরিচালক রাম গোপাল ভার্মা লিখেছেন দুদিন আগে।

‘গ্রেট রবারি’, ‘গোবিন্দা…গোবিন্দা’, ‘হয়রান’–এর মতো পরপর ছবিতে এক সঙ্গে কাজ করছেন পরিচালক রাম গোপাল এবং অভিনেত্রী শ্রীদেবী জুটি। এক খোলা চিঠিতে অভিনেত্রীর অকাল প্রয়াণে তাঁর দেখা শ্রী–র স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে রাম গোপাল ভার্মা লিখেছেন-

‘ব্যক্তিগত জীবনে চরম অসুখী ছিলেন। সাদা চোখে যা দেখা যায়, তার থেকে বাস্তব জীবন কতটা বিপরীত হতে পারে, তার চরম দৃষ্টান্ত ছিলেন শ্রীদেবী। অনেকের কাছেই শ্রীদেবী ছিলেন একেবারে ‘পারফেক্ট’। সুন্দর মুখ, দুরন্ত প্রতিভা, সুখী সংসারে থিতু দুটি ফুটফুটে মেয়ের মা। বাইরে থেকে সব কত ঈর্ষাজনক, লোভনীয় মনে হত। কিন্তু শ্রীদেবী কি ব্যক্তিগত জীবনে সত্যিই সুখী ছিলেন?’

তেলুগু ছবি ‘ক্ষণ ক্ষণম’–এর সেটে তাঁর সঙ্গে প্রথম আলাপ হয়। বাবা বেঁচে থাকতে শ্রীদেবীর জীবন ছিল মুক্ত বিহঙ্গের মতো। তাঁর মৃত্যুর পর অতি–সাবধানি মায়ের হাতে পড়ে খাঁচায় বন্দি পাখির দশা হয়েছিল তাঁর। সব কিছুতেই মায়ের কড়া নজর থাকত। ওই সময়ে অধিকাংশ প্রযোজকই কালো টাকায় অভিনেতা–অভিনেত্রীদের পারিশ্রমিক দিতেন। আয়কর তল্লাশির আতঙ্কে শ্রীদেবীর উপার্জনের অধিকাংশ আত্মীয়–বন্ধুদের কাছে রেখেছিলেন তাঁর বাবা। তাঁর মৃত্যুর পর ওই সব কাছের মানুষই বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন। এর পর তাঁর অতি–সাবধানি মা ভুলভাল জায়গায় বিনিয়োগ করেন, অবৈধ সম্পত্তি কেনেন, যা আরও সমস্যার হয়ে দাঁড়ায়।

বনি কাপুরকে যখন বিয়ে করেছিলেন শ্রীদেবী, তখন তিনি প্রায় কপদর্কশূন্য। বনির অবস্থাও তখন বেশ খারাপ। টাকাপয়সা নেই বললেই চলে। মায়ের মৃত্যুর পর অভিনেত্রীর একমাত্র বোন শ্রীলতা বাড়ি থেকে পালিয়ে তাঁর প্রতিবেশীকে বিয়ে করেন। এবং সম্পত্তির ভাগ দাবি করেন। যদিও সম্পত্তির সবই ছিল শ্রীদেবীর কষ্টার্জিত উপার্জন। এবং তাঁর মা তাঁকেই সব দিয়ে গিয়েছিলেন।

বিবাদ আদালত অবধি গড়ায়। এবং মামলা লড়তে অনেক টাকা খরচ হয়। তা ছাড়া মায়ের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার এবং চিকিৎসকদের ভুলে মায়ের মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা লড়তে আগেই প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়েছিল। সারা দেশের নয়নমণি ছিলেন। অথচ কঠিন সেই সময়ে এক বনিকে ছাড়া কাউকেই পাশে পাননি শ্রীদেবী।

স্ত্রী নামী সাংবাদিক মোনা শৌরিকে বিচ্ছেদ দিয়ে ১৯৯৬–এ শ্রীদেবীকে বিয়ে করেন বনি। এক পাঁচতারা হোটেলে সন্তানসম্ভবা শ্রীদেবীর পেটে লাথি মেরেছিলেন বনির মা! বউমা মোনার ঘর ভাঙার জন্য তাঁকে দায়ী করেছিলেন। সারা জীবন দুঃখকষ্টই পেয়েছেন অভিনেত্রী। শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয়ে আসা। স্বাভাবিক জীবনের স্বাদই পাননি। ফলে গভীর অসুখী ছিলেন।

অন্তরের ব্যথা ঢাকতে নিজেকে বাইরে থেকে বেশি সুন্দর রাখতে খুবই উদ্যোগী ছিলেন শ্রীদেবী। খুব লাজুক ছিলেন। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেন। আত্মবিশ্বাস বলে কিছুই ছিল না। আর সব সময় আতঙ্কে থাকতেন, পাছে কেউ তাঁর মনের অবস্থা বুঝে ফেলেন! তাই একটা অদৃশ্য দেওয়াল তুলে রাখতেন। যা সহজে ভেদ করা যেত না। নিজস্ব মতামত ছিল না বলেই কখনও বাবা–মায়ের, কখনও আত্মীয়পরিজন, স্বামী এমন–কি সন্তানদের ইচ্ছেতেও সায় দিতে হত।

একেবারে শিশু বয়সে খ্যাতি পাওয়ায় স্বাধীনচেতা হওয়ার সুযোগ ঘটেনি। যা ইচ্ছে তাই করার সাহস হয়নি। তাই ক্যামেরায় সামনেই শুধু নয়, পেছনে ‘মেক–আপ’ করে থাকতেন শ্রীদেবী। মনের অবস্থা ঢাকার একটা চেষ্টা করতেন। একই সঙ্গে অন্য অভিনেত্রীর মতো বয়স বাড়া তাঁকেও বিচলিত করত। বয়স ঢাকার জন্য অনেক অস্ত্রোপচারও করতেন। বহু বছর ধরে করেছেন। তাঁকে দেখেই অনুমান করা যেত। তবে কোনও কিছুই ওঁর বেদনা ঢাকতে পারেনি। ওঁর চোখে বেদনা দেখা যেত। মহিলার শরীরে বন্দি আসলে একটি শিশু ছিলেন শ্রীদেবী। ব্যক্তিগত জীবনে বার বার আঘাতে জেরবার হয়ে সহজে বিশ্বাস করতে পারতেন না।

বাথটাবে ডুবে শ্রীদেবীর মৃত্যুর ঘটনাটা অবিশ্বাস্য। এর পেছনে অবসাদের ওষুধ আছে! অবসাদে অনেকে আত্মহত্যা করেন। অনেকে অবসাদ মেটাতে ওষুধ খান। বোঝেনও না কী মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে!’ অধিকাংশ ‘দুর্ঘটনাজনিত’ মৃত্যু বড় বড় অনু্ষ্ঠানের পর হয়। যারা অবসাদগ্রস্ত, তাঁরা বুঝে উঠতে পারেন না, কেন সারা পৃথিবী এত খুশি, তাঁদের কীসের এত আনন্দ! তাতে তাঁদের ব্যক্তিগত দুঃখ আর বড় করে দেখা দেয়। মনে হয় পৃথিবীতে সব ঠিক আছে। যে যেখানে আছে, ভাল আছে। সব দোষ শুধু তাঁদের! আর সে কারণেই হয়ত মৃত্যু বেছে নেয়া…’

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১০:৩৭এএম/৪/৩/২০১৮ইং)