• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ১১:৫১ পূর্বাহ্ন

শিগগিরই ছাত্রদলের নতুন কমিটি : ‘২০০০’ নিয়ে বিতর্ক


প্রকাশের সময় : জুন ২৪, ২০১৮, ১২:১০ PM / ৯৯
শিগগিরই ছাত্রদলের নতুন কমিটি : ‘২০০০’ নিয়ে বিতর্ক

ঢাকারনিউজ২৪.কম, বিশেষ প্রতিনিধি : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েই দলকে গতিশীল করার চেষ্টা করছেন লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান। তাগিদ দিয়েছেন বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের পুনর্গঠনের। এরই ধারাবাহিকতায় অন্যান্য সংগঠনের পাশাপাশি সারা দেশে ছাত্রদলের পুনর্গঠন চলছে। আগামী মাসেই ঘোষণা করা হবে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নতুন কমিটিও। ইতিমধ্যে সুপার ফাইভের তালিকার সম্ভাব্য নেতাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। সাবেক কয়েকজন ছাত্রনেতাকে দিয়ে সম্ভাব্য নেতাদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই করছেন তারেক রহমান। সম্ভাব্য ওই তালিকা থেকে সুপার ফাইভ চূড়ান্ত করবেন তিনি।  বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে যারা রাজপথে ছিলেন এবং আগামীতেও যারা ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে থাকতে পারবেন তাদেরকে দিয়ে নতুন কমিটি করা হবে।
এদিকে জেলা কমিটি ‘২০০০’ ব্যাচ দিয়ে করায় নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেক ত্যাগী নেতা বাদ পড়ায় চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তাই কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের কমিটির কিছুটা সিনিয়র নেতাদের মধ্য থেকে করা হতে পারে। দলের একটি সূত্র জানিয়েছে, সারা দেশের জেলা, মহানগর ও থানা ওয়ার্ড কমিটি পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে নতুন একটি বিধি আরোপ করে দিয়েছেন তারেক রহমান। যাদের এসএসসি ২০০০ সালের আগে তারা ছাত্রদলের দায়িত্বে থাকতে পারবে না। আর তারেক রহমানের নির্দেশ মতে ‘এসএসসি-২০০০’ ধরেই সারা দেশে চলছে ছাত্রদলের পুনর্গঠন। তবে দলের দ্বিতীয় প্রধান নেতার এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে বুমেরাং হতে পারে বলে মন্তব্য করছেন সাবেক ছাত্রদল নেতারা। তারা বলছেন, বিএনপির অন্যতম ভ্যানগার্ড হলো ছাত্রদল। এই ছাত্র সংগঠনটির ওপর নির্ভর করে রাজপথের আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি। কিন্তু ‘২০০০’-এর সিদ্ধান্তের কারণে বিগত দুটি আন্দোলনে যারা রাজপথে ছিল তারা সবাই বাদ পড়ছেন। ঢাকা কলেজের এক ছাত্রনেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ‘আন্দোলন করাবেন একজনকে দিয়ে আর কমিটি করবেন অন্যজনকে দিয়ে।’

‘২০০০’-এর খড়গে বাদ পড়েছেন সিলেটসহ বিভিন্ন জেলার আরও কয়েক ডজন রাজপথের সক্রিয় ছাত্রদল নেতা। বাদ পড়া এসব ত্যাগী নেতা হতাশায় অনেকটা নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। এসব ত্যাগী নেতা বাদ পড়ায় আগামীতে রাজপথের আন্দোলন কতটুকু সফল হবে সেটা প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।
ওদিকে ছাত্রদলের নতুন কমিটির পদপ্রত্যাশী নেতারা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। সিনিয়র নেতাদের দিয়ে লন্ডনে তদবির করাচ্ছেন। তাদের কাছে বিগত আন্দোলনের আমলনামা তুলে ধরছেন।
জানা গেছে, বর্তমান সভাপতি রাজীব আহসান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়েছে। সেজন্য নতুন কমিটিতে  তারা বাদ পড়তে পারেন। তবে সুপার ফাইভের তালিকায় যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেনÑ সহ-সভাপতি আলমগীর হাসান সোহান, নাজমুল হাসান, এজমল হোসেন পাইলট, আবু আতিক আল হাসান মিন্টু, ইসহাক সরকার, ১ম যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ এবং যুগ্ম সম্পাদক কাজী মোকতার, মিয়া মোহাম্মদ রাসেল, বায়েজিদ আরেফিন, নূরুল হুদা বাবু, মফিজুর রহমান আশিক, করিম সরকার, আবুল হাসান, ওমর ফারুক মুন্না। দলের একটি সূত্র জানিয়েছে, সুপার ফাইভের তালিকায় সবচেয়ে এগিয়ে আছেন ৪২ মামলার আসামি ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আলমগীর হাসান সোহান। বিগত আন্দোলনে রাজপথে ভূমিকা রাখায় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সবগুলো মামলায় আসামি করা হয় ঢাবির জিয়া হলের সাবেক এই সভাপতিকে। সরকারের রোষানলে পড়ায় বিসিএসে টিকেও যোগ দিতে পারেননি মেধাবী এই ছাত্রনেতা। তাই সিনিয়র সব নেতার গুডবুকে রয়েছে সোহানের নাম। এরপরেই রয়েছেন সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও বর্তমান সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান। গুম হওয়া নেতাদের পরিবার নিয়ে কাজ করায় তিনিও রয়েছেন তারেক রহমানের গুডবুকে। পরিচ্ছন্ন ইমেজ ও বিগত আন্দোলনে রাজপথে ভূমিকার কারণে আবু আতিক আল হাসান মিন্টুর নামও রয়েছে সুপার ফাইভের তালিকায়। এছাড়া শতাধিক মামলার আসামি ইসহাক সরকার কিংবা তার অনুসারী কোন নেতাকে রাখা হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ পদে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৪ই অক্টোবর রাজীব আহসানকে সভাপতি ও আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রদলের ১৫৩ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ২০১৬ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারি গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে ৭৪৩ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। ওই বছরের ১৪ই অক্টোবর এই কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়। এরপর গত দুই বছরেও নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/১২:০৫পিএম/২৪/৬/২০১৮ইং)