বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকার কারণে ফিলিপাইনের বিচার বিভাগ (ডিওজে) সেই দেশের ব্যাংক আরসিবিসি (রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন) ও রেমিট্যান্স লেনদেনের প্রতিষ্ঠান ফিলরেম সার্ভিসেসের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক (নিউইয়র্ক ফেড) থেকে গত বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার আরসিবিসি ও ফিলরেমের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে হাতিয়ে নেন হ্যাকার তথা সাইবার অপরাধীরা। এর জের ধরেই আরসিবিসির মাকাতি শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস-দেগুইতোসহ কয়েক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। অভিযুক্ত অন্য ব্যক্তিরা হলেন ফিলরেমের দুই মালিক সালুদ বাতিস্তা ও মাইকেল বাতিস্তা। অবশ্য তাঁদের প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও চার ব্যক্তি রয়েছেন গঠিত অভিযোগের আওতায়।
এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডিওজে অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং বা অর্থ পাচারবিরোধী আইন লঙ্ঘনের দায়ে আটটি ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির প্রক্রিয়ায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের খবরে ফিলিপাইনের বিচার বিভাগকে (ডিওজে) স্বাগত জানিয়েছেন সেই দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম। ফিলিপাইনের গণমাধ্যম ইনকোয়ারারকে পাঠানো এক টেক্সট বার্তায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধ দ্রুত বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে তিনি ফিলিপাইন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।
আসাদ আলম আরও বলেন, এটা বড় অর্থ পাচারের ঘটনা। তাই এ বিচারকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন; যাতে সবাই বার্তা পায়— ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যেই হোক না কেন এ ধরনের অপরাধ করলে মুক্তির কোনো উপায় নেই।
আসাদ আলম বলেন, ফিলিপাইনের উচ্চ আদালতে চলমান মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হবে বলে বাংলাদেশ সরকার আশা করছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইনে আর ২ কোটি ডলার যায় শ্রীলঙ্কায়।
শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ২ কোটি ডলার অবশ্য ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া ফিলিপাইনে যাওয়া অর্থের কিছু অংশ ফেরত এসেছে।
আপনার মতামত লিখুন :