• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৬:৫৩ অপরাহ্ন

মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে নিয়ে সাংবাদিক মাহমুদা ডলির আবেঘগন স্ট্যাটাস


প্রকাশের সময় : মার্চ ২৫, ২০২০, ৮:৫৯ PM / ৭২
মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে নিয়ে সাংবাদিক মাহমুদা ডলির আবেঘগন স্ট্যাটাস

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : আজ ২৫ মার্চ দৈনিক আমার দেশের সিনিয়র রিপোর্টার ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য মাহমুদা ডলির বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম জমাদার ৫ম মৃত্যুবাষিকী। ২০১৫ সালের এ দিন সন্ধ্যায় বরিশালের উজিরপুর থানার ধামুড়া গ্রামে নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তিনি তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

মৃত্যুবার্ষিকীতে মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে নিয়ে আবেগঘন ষ্ট্যাটাস দিয়েছেন মাহমুদা ডলি।

নিচে তা হুবহু তুলে ধরা হলো :
আমার বাবার ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ২৫ মার্চ। মাগরিবের নামায শেষে ওজিফা পড়তে পড়তে মারা গেলেন। তার বুকের মধ্যেই ওজিফা ছিলো। এই দিনটাতে মৃত্যুটা মুক্তিযুদ্ধে বাবার অনেক অবদান মনে করিয়ে দেয় তার সন্তানদের। বাবা যশোর এজি অফিসে বসে এক নারীকে পাক হানাদার বাহিনীর থেকে বাঁচিয়ে পালিয়ে গেলেন ঝিনাইদহ। পালিয়ে ২২দিন ধরে পায়ে হেটে কালিগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা কাজী সিরাজউদ্দিন আহমেদ বাবাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন উপজেলা এজি অফিসে । কারন সিরাজউদ্দিন আহমদ কালিগঞ্জ উপজেলা সুপারিন্টেডেন্ট ছিলেন। বাবা প্রথম তোর বাড়িতে আশ্রয় নিলেও পরে অফিসে থাকতে শুরু করেন। রোজ রাতে মুক্তিযোদ্ধারা সিরাজউদ্দিনের বাড়িতে আসতেন। পাক সেনারা ৩বার ধরে নিয়ে গেছিলেন তাকে। বাবাই তাকে উদ্ধর করেন তিন রকম পরিকল্পনা করে। একবার সিরাজউদ্দিনের সরকারী আইডি কার্ড ছিলো অফিসে সেটা নিয়ে দেখিয়ে ফিরিয়ে এনেছেন। আরেকবার বাবাকে ইমামতি করতে হয়েছিলো তারপর ছেড়ে দিয়েছে। আরেকবার অফিসের চাবী সিরাজউদ্দিনের হাতে ,মাত্র সে বের হয়েছে। তাহলে কি করে মিটিং করলো ? বাবার দেয়া এই নানান অজুহাতে আর কারনের জন্যই তাকে ছেড়ে দিয়েছিলো। তার ওপর খুব সুন্দর পুরুষ মানুষ ,নামায পড়িয়েছেন মধুর কন্ঠে এটা একটা তার এক্সট্রা অ্যাডভেঞ্চার ছিলো। যুদ্ধের ৭ মাস সরাসরি মক্তিযোদ্ধোদের সঙ্গে ছিলেন। যুদ্ধের পর ৪মাস কেটে গিয়েছিলো বাবা ফিরে আসেননি। তা দেখে মানুষ বড় আপাকে বলতেন ,তোর বাবা আর নাই। কিন্তু বাবা যখন ফিরে এলেন তখন আধমরা। এতো হত্যাযজ্ঞ আর প্রতি মুহূর্তে এতো ঝুঁকিতে ছিলেন যে ভিশনরকম শরীর খারাপ করেছিলো। সারাক্ষণ বমি করতেন,বাতিকগ্রস্থ হয়ে গেছিলেন। যুদ্ধে বাবার অবদানের এরা যে কত স্মৃতি কথা বাবা বলেছিলেন। আমরা পারিনি সেটাকে বই করে ধরে রাখতে। বাবা সেই ২৫মার্চই মারা গেলেন সন্ধ্যায়। বাবা দেশকে ভালোবাসতেন খুব।সারাদিন দেশকে নিয়ে কত কথা বলতেন। সেদিন পূর্নিমা রাত ছিলো। আল্লাহ বাবাবে বেহেস্ত নসীব দান করুন। রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বায়ানি সাগিরা। আমার বাবার জন্য সবাই দোয়া করুন। আমীন।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/৯:০০পিএম/২৫/৩/২০২০ইং)