• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন

মুক্তিযোদ্ধার ছেলের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ৫, ২০১৯, ৮:৫৭ PM / ৩৫
মুক্তিযোদ্ধার ছেলের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা : সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত তুষার বর্তমানে মুমুর্ষ অবস্থায় রয়েছে। হামলার ঘটনার ৬দিন পর ১২জনকে চিহ্নিত করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভুগীরা। মামলার সাথে সাথে আসামীদের গ্রেফতারের জন্য থানা পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। অন্যদিকে শনিবার দুপুরে তুষারের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসক দ্রুত বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে।

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে চিহ্নিত সন্ত্রাসী সানজিল (২৯), সনয় (২০), শোভন (২১), আলী হোসেন মেকার (৪৫), সাদিপ (২০), মামুন (৩৫), তারেক (২০), রাসেল (২৮), সাগর (২৮), আলমগীর (৩৮), রায়হান (২০), শফিক (২৬) সহ আরও ৬/৭ জন বিভিন্ন সময় অপরাধমূলক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিল। এলাকায় সাধারণ মানুষকে নানা ভাবে হয়রানী করে আসছে উক্ত সন্ত্রাসীরা। বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ গোলাম আজমের ছেলে তুষার অসামাজিক কার্যকলাপের প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসীরা ক্ষীপ্ত হয়ে উঠে। গত ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর আনুমানিক পৌনে ৮টায় হাজীগঞ্জ মুলিবাঁশের মোড়ে তুষারকে একা পেয়ে সানজিলের নেতৃত্বে অন্যান্য আসামীরা দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র, লোহার রড, ছুর, চাকু, রামদা, চাপাতি সহ লাঠিসোঠা নিয়ে সংঘবদ্ধ ভাবে এলোপাথারি ভাবে মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে সানজিল হত্যার উদ্দেশ্যে চাপাতি দিয়ে তুষারের মাথার পিছনে কোপ মেরে গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম করে। আঘাত প্রাপ্ত হয়ে তুষার মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সনয় লোহার রড দ্বারা হাতে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে বাম হাতের হাড় ভাঙ্গা জখম করে। শোভন, আলী হোসেন মেকার, সাদিপ, মামুন, তারেক, রাসেল, সাগর, আলমগীর, রায়হান ও শফিকসহ আরও ৬/৭ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কাঠের ডাসা ও লোহার রড দিয়ে এলোপাথারি পিটাইয়া কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে। অন্যদিকে সনয় তুষারের প্যান্টের পকেটে থাকা নগদ ১৫ হাজার টাকা ও আলী হোসেন মেকার একটি সিম্ফোনি আই-২০ মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং শোভন প্রাণনাশের জন্য তুষারের গলা চেপে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে। তখন আহত তুষারের ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। তখন তুষারকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার অবস্থার বেগতিক দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকা মেডিকেলের ডাক্তার মাথায় অস্ত্রপ্রচার করার পরে আইসিওর প্রয়োজন হলে চিকিৎসক প্রো-একটিভ মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালে রেফার্ড করেন। ঘটনার পর থেকে হামলাকারীরা তুষারের বড় ভাই জিএম মোস্তফা ও তার পরিবারের সদস্যদের মামলা মোকদ্দমা না করার জন্য জীবননাশের হুমকী দিয়ে আসছিল। কোন উপায়ন্তর না পেয়ে ভুক্তভুগীর বড় ভাই জিএম মোস্তফা ১২ জনকে চিহ্নিত ও ৭ জনকে অজ্ঞাত করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে গত শুক্রবার রাতে মামলা দায়ের হয়। মামলাটি ১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৫০৬ পেনাল কোড-১৮৬০ ধারায় রুজু হয়। মামলা নং-১৫। বর্তমানে তুষার হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। শনিবার দুপুরে তুষারের অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক সিটিস্ক্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে। এলাকাবাসী জানায় একজন মুক্তিযোদ্ধার ছেলেকে যেভাবে সন্ত্রাসীরা নির্যাতন করেছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা চাই আসামীদের বিরুদ্ধে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবে। আহত তুষারের মা বলেন বর্তমানে চিকিৎসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। আমার সন্তানকে যারা অন্যায়ভাবে মারলো তাদের বিচার আল্লাহ করবে।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/৮:৫৭পিএম/৫/১/২০১৯ইং)