• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ১১:১৪ পূর্বাহ্ন

বিক্ষুব্ধ কৃষক পোড়াল ২ ভেকু ; তবুও থেমে নেই অবৈধ পুকুর খনন


প্রকাশের সময় : মার্চ ১৬, ২০১৮, ৬:৩১ PM / ৩৪
বিক্ষুব্ধ কৃষক পোড়াল ২ ভেকু ; তবুও থেমে নেই অবৈধ পুকুর খনন

শের মোহাম্মদ, গুরুদাসপুর (নাটোর) : মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ, সাংসদের পুকুর খনন বিরোধি অবস্থানের পরও নাটোরের গুরুদাসপুরে থামছেনা ফসলী জমিতে অবৈধ পুকুর খনন। কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রভাবশালী মহল চালিয়ে যাচ্ছে পুকুর খনন। আর এসব অবৈধ পুকুরের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ কৃষক। কোনো মতেই যখন অবৈধ পুকুর খনন থামছে না ঠিক তখন কিছু বিক্ষুব্ধ কৃষক দুইটি এক্সেভেটর (ভেকু) রাতের অন্ধকারে পুড়িয়ে দিল। এর পরও উপজেলার বিভিন্নস্থানে অন্ততঃ ২০টি স্পটে অবৈধ ভাবে পুকুর খনন চলছে।

বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের হাড়িভাঙ্গা বিলের ভিটা পাড়ায় ওই ঘটনা ঘটে। পুকুর খননকারী বদর আলী জানান, স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে দশ বছর মেয়াদী কৃষি জমি লিজ নিয়েছেন তিনি। বহু টাকা ব্যয়ে সেখানে পুকুর খনন করা হচ্ছে। তিনি প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই পুকুর খনন করছেন।  কারা ওই ভেকু মেশিনে আগুন দিয়েছেন তা তিনি জানেন না।

ভেকু চালক শরিফ বলেন, বৃহস্পতিবার পুকুর খননের জন্য ওই বিলে ভেকু নামানো হয়। ওই রাতেই ২০/২৫ জনের একটি দল কিছু বুঝে ওঠার আগেই এতে আগুন দেয়। সেখান থেকে পাশের আরেকটি ভেকুতেও একইভাবে আগুন দেওয়া হয়। এতে ভেকু দুইটির মুল্যমান যন্ত্রাংশ পুড়ে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের দুর্গাপুর-বাবলাতলা গ্রামের কৃষক হারু প্রামাণিক, সাহাদ, শামীম ও শীতলের প্রায় ১০ বিঘা জমি স্বল্প মূল্যে লিজ নিয়েছেন একই গ্রামের বাসিন্দা বদর আলী (৪৫)। হাড়িভাঙ্গা বিলের লীজ নেওয়া সেই জমিতেই শুরু করেন পুকুর খনন। অথচ এসব জমির পাশের জমি গুলোতে। পাশের ৯ বিঘা জমিতে আরেকটি পুকুর খনন চলছে। ওই জমিতে পুকুর খননের দালাল দস্তানানগর গ্রামের আব্দুল কাদের ওই পুকুর খননের চুক্তি নেয়।

দালাল আব্দুল কাদের জানান, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পুকুর খনন হয়। তাছাড়া কোন মতেই খনন সম্ভব নয়। তাছাড়া এমপি, মেয়র, চেয়ারম্যানরা কিছু করতে পারেনা কেন? তবে কে বা কারা এধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তা তিনি জানেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করেন, পুকুর খনন বন্ধে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এমনকি স্থানীয় সাংসদ আব্দুল কুদ্দুস নিজেও পুকুর খননের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে কাজ হয়নি। এমপি’র হুকুমে ভেকু পগানো হয়েছে। পুকুর খনন যথাযথ ভাবেই চলছে। এখন হাড়িভাঙ্গা বিলে পুকুর দুইটি খনন করা হলে এই বিলের পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে জলাবদ্ধতায় হাজার হাজার বিঘা জমির চাষাবাদ ব্যাহত হবে। হয়তঃ এ কারণে নিরুপায় কৃষক পুকুর খনন বন্ধে দুইটি ভেকুতে রাতে আগুন দিয়েছেন।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ দিলিপ কুমার দাস জানান, পুকুর খনন হবে কি না হবে তার দায়িত্ব ভুমি অফিসের। তবে এ ব্যপারে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনির হোসেন জানান, ঘটনার বিষয় জেনেছি। তবে এযাবৎ অনুমোদনহীন পুকুর খননের তালিকা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তালিকা প্রস্তুত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/৬:২৭পিএম/১৬/৩/২০১৮ইং)