• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০১:৫১ পূর্বাহ্ন

প্লাস্টিকের নিত্যপণ্যে মূসক নতুন আইনে


প্রকাশের সময় : এপ্রিল ৯, ২০১৭, ১:২৬ PM / ৩১
প্লাস্টিকের নিত্যপণ্যে মূসক নতুন আইনে

ঢাকারনিউজ২৪.কম:

শহর-গ্রামনির্বিশেষে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই এখন প্লাস্টিকের নিত্যপণ্য ব্যবহৃত হয়। বালতি, থালা-বাটি, মগ-জগ, খাবার ঢাকনি, বদনা, ঝুড়ি, টিফিন ক্যারিয়ার, পানির বোতল—সবই এখন প্লাস্টিকের তৈরি। সস্তা বলে সাধারণ মানুষও এসব পণ্য ব্যবহার করেন। এমন ১২টি ক্রোকারিজ পণ্যে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) দিতে হয় না। কিন্তু আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন মূসক আইন বাস্তবায়ন করা হবে। তখন এসব পণ্যে বিক্রি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ হারে মূসক বসবে। এতে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) নেতারা প্লাস্টিকের এমন নিত্যপণ্যে মূসক অব্যাহতি চান। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) জমা দেওয়া আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে এই দাবি করেছে বিপিজিএমইএ।
প্লাস্টিকশিল্পের বিভিন্ন ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হয়। এর অধিকাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। বর্তমানে সব ধরনের মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ১ শতাংশ আমদানি শুল্ক দিতে হয়। প্লাস্টিকশিল্পের উদ্যোক্তারা এই আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। বিপিজিএমইএ বলছে, প্লাস্টিকশিল্প একটি উদীয়মান শিল্প খাত; এ খাত থেকে ক্রমেই রাজস্ব আদায় বাড়ছে। এই শিল্পে ইনজেকশন মোল্ড (প্লাস্টিকের প্রধান কাঁচামাল প্রস্তুতের প্রক্রিয়া) প্রস্তুতের কোনো আধুনিক কারখানা নেই। এসব কারণে ইনজেকশন মোল্ডিং মেশিনসহ সব ধরনের মূলধনি যন্ত্রপাতিতে আমদানি শুল্ক শূন্য করার দাবি জানিয়েছে বিপিজিএমইএ।
বাংলাদেশে প্লাস্টিকশিল্পের আধুনিক মোল্ড তৈরির কারখানা নেই। তাই শতভাগ আমদানিনির্ভর মোল্ড দিয়েই প্লাস্টিক পণ্য তৈরি করা হয়। এ দেশে মোল্ড তৈরির আধুনিক কারখানা হলে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয় হবে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে। তাই মোল্ড তৈরির কারখানা আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণের যন্ত্রপাতি আমদানিতে আমদানি শুল্ক ১ শতাংশ প্রত্যাহার করা উচিত বলে মনে করেন এই শিল্পের উদ্যোক্তারা। এ ছাড়া প্লাস্টিকশিল্প কারখানার শ্রমিকদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি আমদানিতে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করার দাবিও জানিয়েছে প্লাস্টিকশিল্পের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিপিজিএমইএ। বর্তমানে এসব অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি ভেদে ১ থেকে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আছে।
মূসক: নতুন মূসক আইনে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক লেনদেনে টার্নওভার কর মওকুফ করা আছে। বিপিজিএমইএর দাবি, এই টার্নওভার করমুক্ত সীমা ৩৬ লাখ টাকা। আর ৩৬ লাখ টাকা থেকে দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত লেনদেনে ৩ শতাংশ টার্নওভার কর আরোপের প্রস্তাবও করা হয়েছে। এ ছাড়া সব ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ মূসক আরোপ না করে রেয়াতি হারে মূসক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিশেষ করে যেসব প্রতিষ্ঠান উপকরণ রেয়াত নিতে পারবে না—সেসব প্রতিষ্ঠানের ওপর মূসক হার কমানোর দাবি জানিয়েছে বিপিজিএমইএ।
বিপিজিএমইএ আরও বলেছে, নতুন আইনটি বাস্তবায়নে ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তিগতভাবে সক্ষমতা অর্জন করেনি। অনলাইনে মূসক জমা ও নিবন্ধনে প্রশিক্ষিত হতে আরও সময় প্রয়োজন। তড়িঘড়ি করে ‘ভ্যাট অনলাইন’ পদ্ধতিতে রাজস্ব আদায়ের প্রক্রিয়া শুরুতেই ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, যাতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
নতুন মূসক আইন বাস্তবায়ন হলে ১৭০টি পণ্য ও সেবা ছাড়া অন্য সব পণ্য ও সেবার আমদানি ও সরবরাহ পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক ওঠে যাবে। প্লাস্টিকের টেবিলওয়্যার, বাক্স, কিচেনওয়্যার, দরজা-জানালা, হ্যাঙ্গার, টুথব্রাশসহ ১২ ধরনের পণ্যে বিদ্যমান সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

 

  (ঢাকারনিউজ২৪.কম/এনএম /০১.২০ পিএম/০৯//২০১৭ইং)