• ঢাকা
  • বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০২:০৩ পূর্বাহ্ন

নোয়াখালীর গণধর্ষণ : সেই আ’লীগ নেতা গ্রেপ্তার


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ৩, ২০১৯, ১০:৪২ AM / ৫২
নোয়াখালীর গণধর্ষণ : সেই আ’লীগ নেতা গ্রেপ্তার

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ভোটের দিন(৩০ ডিসেম্বর) রাতে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে গৃহবধূকে দলবেঁধে গণধর্ষণের ঘটনায় আলোচিত আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা রুহুল আমিনসহ ২জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ধর্ষণের শিকার ওই নারী অভিযোগ করে আসছেন, ভোটের সময় নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়েছিল। এরপর রাতে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিনের ‘সাঙ্গপাঙ্গরা’ বাড়িতে গিয়ে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে তাকে ধর্ষণ করে।

এরপরও চরজব্বার থানা পুলিশ মামলার এজাহার থেকে রুহুল আমিনের নাম বাদ দিয়েছে বলে বুধবার রাতে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুকের কাছে অভিযোগ করেছিলেন ওই নারী।

ডিআইজি গোলাম ফারুক ধর্ষণের ঘটনায় রুহুল আমিনের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাওয়ার পর গভীর রাতে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

জেলার পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফ বলেন, রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয় জেলা সদরের একটি হাঁস-মুরগীর খামার থেকে। আর সেনবাগের একটি ইটভাটা থেকে মামলার আসামি বেচুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ নিয়ে মোট পাঁচজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হল।

সুবর্ণচরের আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন চর জুবলী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। আর বেচু (২৫) মধ্যম বাগ্যা গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। এ মামলার এজাহারে বেচুর নাম রয়েছে পাঁচ নম্বরে।

এর আগে বুধবার কুমিল্লার বরুরা উপজেলার মহেষপুরের একটি ইটভাটা থেকে মামলার ১ নম্বর আসামি সোহেল, মঙ্গলবার রাতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা থেকে ৩ নম্বর আসামী স্বপনকে (৩৫) গ্রেপ্তার হয়। তার আগে সোমবার গ্রেপ্তার করা হয় মামলার ৬ নম্বর আসামি বাসুকে।

ভোটের পর রোববার রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মধ্যবাগ্যা গ্রামের ওই নারী (৪০) নিজের বাড়িতে ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এ ঘটনার সঙ্গে দলীয় সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

চরজব্বার থানায় তার স্বামীর দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা তার বসতঘর ভাংচুর করে, ঘরে ঢুকে বাদীকে পিটিয়ে আহত করে এবং সন্তানসহ তাকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে।

আসামিদের তালিকায় থাকা বাকিরা হলেন মধ্যবাগ্যা গ্রামের হানিফ চৌধুরী, আবুল, মোশারেফ ও সালাউদ্দিন।

মামলার এজাহারে মোট ৯জনকে আসামি করা হলেও সেখানে রুহুল আমিনের নাম না থাকায় বুধবার রাতে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুকের কাছে হতাশা প্রকাশ করেন ওই নারী।

তাদের দেখতে বুধবার হাসপাতালে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলেন ডিআইজি গোলাম ফারুক।

ভুক্তভোগী ওই নারী তাকে বলেন, ‘রুহুল আমিনের সাঙ্গপাঙ্গরাই’ তার ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছে।

“রুহুল আমিন এলাকায় অনেক অপকর্ম করে আসছে। তার অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ। কিন্তু মামলার এজাহার থেকে পুলিশ রুহুল আমিনের নাম বাদ দিয়েছে।”

ডিআইজি এ সময় তাকে আশ্বস্ত করেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “এ ধরনের ঘটনা অবশ্যই নিন্দনীয় এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ব্যাপারে সরকার কঠোর অবস্থানে আছে। অপরাধী যে-ই হোক শাস্তি তাকে পেতেই হবে।”

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১০:৪৫এএম/৩/১২/২০১৯ইং)