• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪, ০৮:৩০ অপরাহ্ন

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন : দুই দলের তৃনমূল নেতাকর্মীরা পদধারী নেতা থেকে শক্ত অবস্থানে


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৬, ২০১৮, ৮:৪০ PM / ৬০
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন : দুই দলের তৃনমূল নেতাকর্মীরা পদধারী নেতা থেকে শক্ত অবস্থানে

নারায়ণগঞ্জ(ফতুল্লা) প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনে একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের মাঝি হলেন নারায়ণগঞ্জের সিংহ পুরুষ খ্যাত এমপি আলহাজ¦ এ.কে.এম.শামীম ওসমান তার প্রতিদ্বন্দি হিসেবে বিএন.পি থেকে নধমিনেশন পাওয়ার আশাবাদী সাবেক এম.পি আলহাজ¦ মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন অথবা আলহাজ¦ মোহাম্মদ শাহ আলম  এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

এলাকা সূত্রে  দুই দলের তৃনমূল নেতাকর্মী থেকে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার ৪ টি আসনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ৪ (ফতুল্লা,সিদ্দিরগঞ্জ ) আসন টি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ আসন । এই আসনের ভোটের হিসেব নিকাশ একটু সবার চেয়ে ব্যতিক্রম। এই আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামীলীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তার নাম আলহাজ¦ এ.কে.এম শামীম ওসমান। তিনি ও তার পরিবার আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতা। তিনি ১৯৯৬ সালে এবং ২০১৪ সালে দুইবার এম.পি হয়েছে। তার আমলে ব্যপক উন্নয়ণ মূলক কাজ হয়েছে। যা অন্য কোন এম.পি‘র দ্বারা সম্ভব হয়নি। তিনি নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে পতিতা পল্লী উচ্ছেদ করে সারা দেশে ইসলামী দলগুলো ও সচেতন মানুষের কাছে প্রিয় ব্যক্তি হতে পেরেছেন। সরকারী তোলারাম কলেজ বিশ^ বিদ্যালয়ে তার আমলেই হয়েছে। এছাড়া ফতুল্লা ও সিদ্দিরগঞ্জ এলাকায় রাস্তা ঘাট ব্যপক উন্নয়ণ মূলক কাজ করে সর্ব দলের মানুষের মাঝে হাসি ফুটাতে সক্ষম হয়েছে। তারপরও নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনে একাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হতে হলে অনেক বেগ তার পোহাতে হবে। তিনি যেমন ভালো কাজ করেছে। তার কয়েকজন নেতাকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেয়ায় তারা কোটিপতির বনেগেছে। কিন্তু তার সেই খলিফারা (সুবিধাভোগিরা) তার তৃনমূল নেতাকর্মীদের তেমন কোন সুবিধা দেয়নি। বরং খলিফারা যে যার মতো করে গাড়ী বাড়ি ব্যবসা সাজিয়েছেন। তৃনমূল পর্যায় নেতাকর্মীরা মিটিং মিছিলে বক্তব্যে শুভেচ্ছা ছাড়া তেমন কোন সুবিধা পায়নি। এমনকি গুটি কয়েক ব্যক্তি ফতুল্লা ও সিদ্দিরগঞ্জ এলাকায় এম.পি‘র সুবিধা পেয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে । তৃনমূল নেতাকর্মীর দাবী যারা এমপি‘র সুবিধা পেয়েছে তারাই তার জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিবে কিন্তু তৃনমূল পর্যায়  সকল নেতাকর্মী ব্যথায় ভারক্রান্ত । নিবার্চনের আগ থেকেই এমপি শামীম ওসমান ফতুল্লা এলাকায় বসার জন্য একটি ঘর চেয়ে ছিলেন কিন্তু কেহ তার ঘরের ব্যবস্থা করতে পারেনি বরং ডিআইটি মাঠে অনেকেই অবৈধ দখল করে নানা সুবিধা ভোগ করছে। এমনকি ফতুল্লা সমবায় মার্কেটের পরিচালনা কমিটির কাছ থেকে সুবিধা নিচ্ছে তার নেতারা সেখানেও একটি ঘর দিতে পারেনি তার নেতারা । তাই ফতুল্লা মানুষ এম.পি‘র সরাপন্ন হতে পারেনি। কিন্ত এখন নির্বাচন মুখী সময় শামীম ওসমান পাড়া মহল্লায় ঘুরলেও তৃনমূল নেতাকর্মীরা তাদের আত্মায় তৃপ্তি পাচ্ছে না এবং নেতার জন্য তেমন একটা জনগণের কাছে চাহিদা সৃষ্টি করতে পারছে না এমনটাই বলছেন বিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।

তারপরও শামীম ওসমান নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ঘুরে ঘুরে উঠান বৈঠক করে যাচ্ছে।

ফতুল্লার আওয়ামীলীগ সমর্থন যারা তারা এবার শক্ত অবস্থানে আছেন, বিপাকে পড়েছেন সুবিধাভোগিরা। তাদের ডাকে আর সারা দিচ্ছেনা সাধারন জনগণ। এই নির্বাচনে চুল ছেড়া হিসেব করে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করবেন নৌকা ভক্তকর্মীরা। পদ পদবী নেতাদের কথায় কেহ আর ভোট দিবে না । এই নির্বাচনে ভোটের হিসেব হবে শামীম ওসমানের আগামী দিনে তৃনমূল নেতাকর্মীর মূল্যয়নের প্রতিশ্রুতির উপর হিসেব করে।
অপরদিকে, বি,এন.পি‘র অবস্থা তেমন ভালো না নিজেদের মধ্যে বিরোধ চলছে তুঙ্গে । কে পাচ্ছে নমিনেশণ তাও ঠিক করে জানতে পারছে না নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের জনগণ। বিএনপি‘র সাবেক এম.পি আলহাজ¦ মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। তিনি এক সময় আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন, ২০০১ সালে নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে নমিনেশণ না পেয়ে বিএনপিতে যোগ দিয়ে এম.পি হন শামীম ওসমান কে বিপুল ভোটে হারিয়ে। কিন্তু তিনি সংসদ সদস্য থাকাকালীন ফতুল্লা তেমন কোন উন্নয়ন করেনি বরং তিনি সিদ্দিরগঞ্জ এলাকায় গুলশান বনানী তৈরী করেছে। অথচ ফতুল্লায় ভোটার সংখ্যা বেশি। এই হিসেবে তিনি ফতুল্লায় জনপ্রিয়তা অজর্ন করতে পারেনি। তবে তিনিও তার আমলে বেশ কয়েকজন খলিফা সৃষ্টি করে ছিলেন ফতুল্লায়। তার আমলে ঐ খলিফারা তৃনমূল পর্যায় নেতাকর্মীদের মূল্যয়ন করেনি। তৃনমূল নেতাকর্মীর ক্ষোভ মিটাতে সাবেক এম.পি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ মোহাম্মদ আলীর মেকার মেকিং চালে রাজনীতিতে আগমন ঘটে শিল্পপতি আলহাজ¦ মোহম্মদ শাহ আলমের। তিনি ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক এম.পি সারাহ বেগম কবরীর কাছে হেরে যায়। এরপর শাহ আলম বিএনপি‘র ফতুল্লা থানার সভাপতির পদটি পেয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি হয়ে উঠেন বিএনপি‘র নেতা। তাকে নিয়েও বিপাকে পড়ে তৃনমূল পযার্য় নেতাকর্মীরা তিনি গায়ে ধূলা না লাগিয়ে রাজনীতি আসেন। সে টাকার জোড়ে এম.পি হতে এসে তার খায়েস মেটাতে পারেনি। ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে যায়নি । ফলে তিনি আর এমপি হতে পারেনি। বর্তমানে আবার গিয়াস উদ্দিন থাকায় এবছরও নমিনেশন পাবে না এমনটাই বলছেন বিএনপি‘র নেতাকর্মীরা। তাদের মন্তব্য শামীম ওসমান এর সাথে প্রতিদ্বন্দিতা করতে হলে গিয়াস উদ্দিনের বিকল্প নেই। কারন শাহ আলম তার কাছে রাজনীতিতে শিশু । শাহ আলম ব্যক্তি হিসেবে তিন জনের মধ্যে তিনিই অত্যন্ত ভদ্র মার্জিত এবং ভালো মানুষ কিন্তু এমপি হওয়ার মতো তার রাজনীতির অভিজ্ঞতা বা নীতি নেই এমনটাই বলছেন সচেতন মহল । গিয়াস উদ্দিন একজন চৌকশ রাজনীতিবিদ। শামীম ওসমানের সাথে টক্কর দিতে হলে তাকেই প্রয়োজন। নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের নির্বাচনে বিজয়ী হতে হলে শামীম বা গিয়াস দুই জনেরই তুমূল লড়াই হবে। ভোটাররা কারন হিসেবে দেখছেন দুই জনেই পরিপক্ষ রাজনীতিবিদ । যদি মো.শাহ আলম ধানে শীষে নমিনেশন পায় তাহলে শামীম ওসমান হাসতে হাসতে আবার বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। তবে দুই দলে‘র সমার্থকরা বলছেন এবার নির্বাচন সুষ্ঠ নিরেপক্ষ হলে তুমুল লড়াই হবে। দুই প্রার্থীর প্রতিশ্রুতি তৃনমূল পযার্য় যে যত কাছে টানতে পারবে সেই দল মত নির্বিশেষে ভোট পাবেন। এই আসনে নৌকার ভোট ধানের শীষে যেতে পারে আবার ধানের শীষের ভোট নৌকায় পেতে পারে। কারন হিসেবে দেখছেন এখানে ফতুল্লা সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকাটি শিল্পাঞ্চল এলাকা ,এখানে বিভিন্ন জেলার লোক বসবাস করে আসছে। তাই ভোটের হিসেবে কারও চেয়ে কেহ কম পাবে না এমনটাই বলছেন সচেতন মহল। তবে নৌকার ভোটার বেশি হবে দক্ষিনাঞ্চলের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ঠিক রাখতে এমনটাই বলছেন ফতুল্লায় বসবাসরত রাঝনৈতিব বোদ্ধারা।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/৮:৩৮পিএম/২৬/১১/২০১৮ইং)