• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ১১:২৮ অপরাহ্ন

জামালগঞ্জ যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধি অপরাধ মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৮, ৪:১৫ PM / ৩৩
জামালগঞ্জ যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধি অপরাধ মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

ঢাকারনিউজ২৪.কম, সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুল আলম তালুকদার ঝুনু মিয়ার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। গত ১৩ই সেপ্টেম্ভর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দিনব্যাপী তদন্ত করেন ঢাকা থেকে আগত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ নূর হোসেন। সকালে তিনি জামালগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কামলাবাজ গ্রাম থেকে শুরু করে কালীপুর,লালপুর,শরীফপুর ও কাজিরগাঁওয়ের বিভিন্ন জায়গায় তদন্ত কাজ পরিচালনা করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়,গত বছরের ১২এপ্রিল জামালগঞ্জ উপজেলার সদরকান্দি গ্রামের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মৃত আব্দুল গনির ছেলে মোঃ আব্দুল জলিল বাদী হয়ে আমল গ্রহণকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সুনামগঞ্জে উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুল আলম তালুকদার ঝুনু মিয়া,সদর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের মফিজ আলীর ছেলে মজনু মিয়া (৬৬) ও একই গ্রামের আবুল খয়েরের ছেলে এনাম উদ্দিন (৬২)সহ রাজাকার,আলবদর,আল-শামস ও শান্তি কমিটির অজ্ঞাতনামা ১৫-২০জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু করেন। মামলাটি বিজ্ঞ আদালত আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনাল ঢাকাকে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ্য করা হয়,১নং আসামী ও তার মরহুম পিতা আবুল মনসুর আহমদ (লাল মিয়া) ছিলেন পাকিস্তানী পাক হানাদার বাহিনীর দোসর,ভয়ংকর সন্ত্রাসী,স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার বাহিনীর প্রধান এবং শান্তি কমিটি,আল-বদর,আল-শামস বাহিনীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক। জামালগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ঝুনু মিয়া ও তার পিতা লাল মিয়া পাক বাহিনীর সাথে হাত মিলিয়ে জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, র্ধমপাশা ও মধ্যনগর এলাকায় ব্যাপক গণহত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতনে প্রধান ভূমিকা পালন করেন।

স্বাধীনতা যুদ্ধে নির্মম নির্যাতনের কথা তদন্তকারী দলের কাছে তুলে ধরতে গিয়ে দক্ষিণ কামলাবাজ গ্রামে পরিচালিত শহীদ ১১জনের হত্যাপর্ব থেকে কোনো রকম বেঁচে যাওয়া একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল কুদ্দুস (৭০)বলেন,আমি নিজের চোখে দেখছি,আমাকেসহ ১২ জনরে ধইরা আইন্না এইখানে দাঁড় করাইছে,একটু পরে ওই ঘরডাত আরো মুক্তি আছে কি না এইডা দেখার লাগি আমারে পাঠায়,ওইখানে গিয়া জীবন বাঁচানির লাগি ঘরের পেছনের ভাঙ্গা অংশ দিয়া নদীতে ঝাঁপ মাইরা ঐপারে চইলা যাই। এই কারণে কোন রকম বাঁইচা যাই আমি। এছাড়া দক্ষিণ কামলাবাজ গ্রামের শহীদ জব্বার কমান্ডারের ছেলে রেজাউল, তাহেব আলীর ছেলে জামাল মিয়া,মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আব্দুল হামিদ মাস্টারের ছেলে আবুল কালাম সরকার এবং কালীপুর গ্রামের শহীদ নাগর আলীর ছেলে আম্বর আলী,ক্ষতিগ্রস্ত আব্দুল গফুরের ছেলে নবী হোসেন,কাজিরগাঁওয়ের শহীদ দেওয়ান আলী ও সফর আলীর পরিবারসহ ধর্ষিতা কয়েকজনের বক্তব্য নেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ নূর হোসেন। তদন্তকালীন সময়ে উপস্থিত ছিলেন জামালগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এডঃ আসাদ উল্লাহ সরকার,উপজেলার বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা,মামলার বাদী আব্দুল জলিল,মোঃ ফারুক মিয়া,গণমাধ্যমকর্মী ও জামালগঞ্জ থানার এসআই সাইফুল্লাহসহ সঙ্গীয় ফোর্স। এ ব্যাপারে তদন্তকারী কমকর্তা নূর হোসেন বিপিএম বলেন,ধর্ষিতা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে প্রাথমিক ভাবে অপরাধের সত্যতা পাওয়া গেছে।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/৪:০৭পিএম/১৪/৯/২০১৮ইং)