• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৯:৩১ পূর্বাহ্ন

জাগ্রত হোক বিশ্ব মোড়লদের ঘুমন্ত বিবেক


প্রকাশের সময় : মার্চ ১, ২০১৮, ১২:০৯ AM / ৩১
জাগ্রত হোক বিশ্ব মোড়লদের ঘুমন্ত বিবেক

 

ইখতিয়ার উদ্দীন আজাদ : আর কত রক্ত জল হয়ে সাগরে মিশলে বিশ্ব মোড়লদের ঘুমন্ত বিবেক জেগে উঠবে? বর্তমান সময়ে মোড়লরা ঘুম থেকে জেগে উঠলেও তাদের ঘুমন্ত বিবেক কিন্তু জাগে না। মানবতা আজ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গুমরে গুমরে কাঁদছে। পৃথিবীর মানুষগুলো মনে হয় দু চোখ বন্ধ করে বসে আছে।অসহায় মানুষগুলোর চোখের জল যেন মূল্যহীন এক বস্তুতে পরিণত হয়েছে। যেখানে কেবল জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বৈষম্য বিদ্যমান।
তথাকথিত মানবাধিকারের প্রবক্তাদের কাছে মুসলমানদের রক্ত, মানবাধিকার এবং জীবন যেন ইতর প্রাণীর চেয়েও মূল্যহীন।কেন এত অত্যাচার? পৃথিবীতে জন্ম নিয়ে তাদের কি কোনো দেশ থাকবে না? কেন তাদের স্থায়ী কোনো বসবাসের জায়গা থাকবে না? মুসলমান হয়ে জন্ম নেয়াই কি তাদের পাপ? এসব প্রশ্নের জবাব আজ না হোক কাল বিশ্ব মোড়লদের দিতে হবে। নইলে আয়লানদের আত্মার কষ্টে তাদের ধ্বংস নিশ্চিত করবে। আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়ার লাখো কোটি আয়লানদের জীবন ধংশ করে মোড়লরা এখন নজর দিয়েছে সিরিয়ার দিকে। অর্থাৎ ভূমধ্যসাগর তীরের জমিনকে রক্তাক্ত করতে চাইছে। পৃথিবীর কোথাও না কোথাও তারা অবশ্যই শান্তিতে নিরাপদে থাকার অধিকার রাখে। কোনো মানুষের ওপর বিন্দুমাত্র নির্যাতন কারো কাম্য হতে পারে না। অত্যাচার যার ওপরই হোক না কেন, অন্যায়ের শিকার যেই হোক না কেন সে অত্যাচারিত, জুলুমের শিকার এবং মানুষ মাত্রই তারপাশে আমাদের দাঁড়ানো উচিত। সে কোন ধর্মের বা কোন উপজাতি অথবা কোন বিশেষ গোষ্ঠীর সেদিকে না দেখে তার সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো সে রক্তে মাংসে মানুষ।আজ ওদের চোখে মুখে আতঙ্ক, মৃত্যুভয়, সব হারানোর ভয় ওদের বাধ্য করেছে কোলের শিশুকে নিয়ে দেশ ছেড়ে দিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিতে। বিভীষিকাময় এমন দৃশ্য দেখে চোখের পানি থামিয়ে রাখা বড় কঠিন। পাপিষ্ঠদের বুলেটের আঘাতে মৃত সন্তানকে বাবা মা তার ভালবাসার আচঁলে ধরে থেমে থেমে কাঁদছেন, আদর করছেন, বুকে জড়িয়ে ধরছেন তাদের আকুতি দেখে চোখের পানি ধরে রাখা বড় কষ্টের। সন্তানের এমন করুণ মৃত্যু মেনে নেয়া যেন আকাশ মাথার উপর ভেঙ্গে পরার সমান। বিশ্ব মানবতা কি পারবে সেই বাবা মায়ের হাসি ফিরিয়ে দিতে? এবারও কি তাহলে জাগ্রত হবে না বিশ্ব মোড়লদের বিবেক? মধ্যপ্রাচ্যের গৃহযুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের টার্গেটেড জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে নিগৃহীত জনগোষ্ঠীর নাম সিরিয়ান মুসলমান।নির্মমভাবে এমন বীভৎস হত্যাযজ্ঞ ঘটনা কি বিশ্ববাসীকে হতবাক করে না? মুসলমানদের উপর পৈশাচিক নির্মমতার ঘটনাগুলো বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষকে ব্যথিত, ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত করতে পারলেও পারেনি বিশ্ব মোড়লদের। কালো চশমা পরে তারা বসে আছে মুসলিম নিধনের খেলা দেখায়। বিশ্ব মোড়লরা ধমক দিলে সারা দুনিয়ায় কি না হয়, কিন্ত তারা কেন চুপ? একটা দেশ নিশ্চিহ্নকরণ অভিযানের মর্মস্পর্শী ঘটনাগুলো যখন পুরো মানব সভ্যতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলছে তখনো কিন্তু মোড়লেরা নিশ্চুপ থাকার কথা না। সত্যি পৃথিবীটা যত সুন্দর তার থেকে বড় নিষ্ঠুর এই পৃথিবীর ক্ষমতাবান মানুষগুলো। মানবতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি না দেখিয়ে বিশ্ব মোড়লদের উচিত হবে মানবিক এই পৃথিবী নির্মাণে সিরিয়ায় এ ধরণের জঘন্য হত্যাকাণ্ড বন্ধ করার জন্য জোরালো ভুমিকা পালন করা।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
পত্নীতলা, নওগাঁ।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/১২:০৫এএম/১/৩/২০১৮ইং)