• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৭:৩০ অপরাহ্ন

চেয়ার পেলেও ক্ষমতা পায়নি : সিলেটের মেয়র


প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১২, ২০১৭, ২:০২ PM / ৩৮
চেয়ার পেলেও ক্ষমতা পায়নি : সিলেটের মেয়র

ঢাকারনিউজ২৪.কম:

দ্বিতীয় পর্যায়ে উচ্চ আদালতের আদেশে মেয়রের চেয়ারে বসার দুই দিন পরও প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা পাননি সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মেয়র আরিফুল বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা ২১ মিনিটে আমি মেয়রের চেয়ারে বসি। ওই দিন কিছু ডকেট ফাইল (নাগরিকদের সাধারণ আবেদন) সই করি। এরপর গত রোববার, সোমবার ও মঙ্গলবার—এই তিন কার্যদিবসে প্রশাসনিক ও আর্থিক কোনো কাজ করতে পারছি না। মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা আসেনি জানিয়ে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে কোনো কাজ করতে দিচ্ছেন না।’

নগরের কিনব্রিজ এলাকায় সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলররাও উপস্থিত ছিলেন।

আরিফুল হক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‌‘সিটি করপোরেশন হচ্ছে মেয়র অব অফিস। কিন্তু আমাকে প্রশাসনিক কাজকর্ম করতে দেওয়া হচ্ছে না। করছেন সিটি করপোরেশনের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব।’

সংবাদ সম্মেলনের পর আরিফুল হক চৌধুরী মেয়রের দপ্তরে বসেন। সেখানে বসে  তিনি বলেন, ‘বলতে পারেন আমি শুধু এই চেয়ারটি পেয়েছি। আর কোনো কাজকর্ম নেই।’

আরিফুল রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব পালনের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, ‘একই আইনে আমরা তিনজন বরখাস্ত হয়েছিলাম। উচ্চ আদালতের নির্দেশে আবার ফিরে এসেছি। তাঁরা (রাজশাহী ও হবিগঞ্জের মেয়র) দায়িত্ব পালন করছেন। অথচ আমার বেলায় মন্ত্রণালয় দেখানো হচ্ছে। এটা আসলে কার ইশারায় হচ্ছে, জানা দারকার।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব বলেন, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

কী, কোথায় প্রক্রিয়াধীন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মেয়র বরখাস্ত হওয়ায় আমাকে আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম দফা বরখাস্ত আদেশ উচ্চ আদালত স্থগিত করলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় একটি চিঠি দিয়েছিল দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে। পরে আবার বরখাস্ত হন। তখন নতুন করে আর কাউকে দায়িত্ব না দেওয়ায় আমাকেই পালন করতে হয়।’ মেয়রকে প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় দফায় মেয়রের বরখাস্ত আদেশ স্থগিত হওয়ার পর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ আদেশ পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।’

আরিফুল হক চৌধুরী ২০১৩ সালের ১৫ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। নয় মাস দায়িত্ব পালনের পর সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি হয়ে ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর কারাবন্দী হন। ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি সরকার তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এ আদেশের বিরুদ্ধে রিট করে দায়িত্ব ফিরে পান তিনি।

কেব্‌ল লাইন ও ইন্টারনেট সংযোগ প্রসঙ্গ

নগরের কেন্দ্রস্থলের জিন্দাবাজার এলাকা থেকে কেব্‌ল লাইন ও ইন্টারনেট সংযোগের তার অপসারণ সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে হয়েছে। সিটি কররপোরেশনের দাপ্তরিক নথিতে সচিব মোহাম্মদ বদরুল হক স্বাক্ষরিত পত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। গতকাল মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সচিব স্বাক্ষরিত পত্র সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘আমি যে প্রশাসনিক কোনো দায়িত্ব পাইনি, এটা তার প্রমাণ।’

সিটি করপোরেশনের ৭৪৪ নম্বর স্মারকের এ চিঠি নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব নিশ্চিত করেন। তবে তিনি জানান, কেব্‌ল ও ইন্টারনেট সংযোগ লাইন এভাবে কাটা ভুল হয়েছে। এ বিষয়ে সিলেট কেবল সার্ভিস লি. ও ইন্টারনেট সংযোগ লাইনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি জানান, গতকাল বিকেলে কাটা লাইনের কিছু অংশ মেরামত করে আবার সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। আজ বাকি অংশের কাজ করা হবে।

 

  (ঢাকারনিউজ২৪.কম/এনএম /০১.৫৮ পিএম/১২//২০১৭ইং)